পঞ্চগড়ের বড়বাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন হওয়া নারী-শিশুসহ ২১ জনকে তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকেলে উপজেলা সদরের হাড়িভাসা ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া ডোলোপুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতি পরিবারের সদস্যদের কাছে তাদের তুলে দেওয়া হয়। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) ভোরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের পুশইন করে।

পুশইন হওয়া ২১ জনের বাড়ি খুলনা জেলার দিঘলিয়া ও নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলায়। তারা দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধভাবে ভারতের গুজরাটে বসবাস করছিলেন। তারা সেখানে বাসা বাড়ি ও ওয়ার্কসপসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের কাজ করতেন। 

ভারত থেকে আসা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমি একটি কোম্পানিতে কাজ করতাম। হঠাৎ করে আমাদের সবাইকে বাড়ি থেকে তুলে নেয় ভারতীয় পুলিশ। পরে আমাকে আলাদা স্থানে ছেড়ে দেয়। আমার স্ত্রী ও সন্তান সেখানেই ছিল। তাদের কোনো খবর না নিতে পারিনি। পরে দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে তাদের ছবি দেখি। এরপর পঞ্চগড়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবারকে ফেরত পেয়েছি।’

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই আলম ছিদ্দিক বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোরে শিশুসহ ২১ জন আটকের পর ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশনায় তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। এখানে তাদের থাকার ও খাবার ব্যবস্থা করা হয়। তিনদিনের মাথায় প্রশাসনের মাধ্যমে সবাইকে তাদের পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে।’

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহিল জামান বলেন, এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে সবাইকে তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোরে পঞ্চগড় উপজেলা সদরের বড়বাড়ি সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫৭ এর ১০নং নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে ভারত থেকে নারী, শিশুসহ ২১ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পরে নীলফামারী ৫৬ বিজিবির জয়ধরভাঙ্গা ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প শইন পর ব র র উপজ ল প শইন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে

সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে কক্সবাজারের নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে হাজির হয় ১১ পর্যটকের একটি দল। তবে ঘাটে পৌঁছানোর আগেই নির্ধারিত জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ঘাটে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে। দলের একজন নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঘাটে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পরে বিপাকে পড়তে হয় ওই পর্যটক দলের সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, বাঁকখালী নদীর জোয়ার–ভাটা একেক সময় একেক রকম। জোয়ার–ভাটা বিবেচনায় নিয়ে জাহাজ ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। ইউএনওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই পর্যটক ঘাটে এসে জাহাজ দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন।

হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম। তিনি হয়তো ঘাটে থাকা ইউএনওকে চিনতে পারেননি। সাধারণ নারী মনে করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে আরেকটি জাহাজে পর্যটকদের ওই দল সেন্ট মার্টিনে যায়।

জানতে চাইলে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কেন জাহাজ ছেড়ে গেছে, এ বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ইব্রাহিম নামের ওই ব্যক্তি। এ সময় নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করতে। এ ঘটনার ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।’

ইউএনও বলেন, পর্যটকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ে। কয়েকটি জাহাজে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে করা না হয়, সে বিষয়টি তদারকি করে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি।

১ ডিসেম্বর কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে রাত্রী যাপনের সুযোগও রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার ঘোষিত ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বাংলাদেশির লাশ ফেরত দিল বিএসএফ
  • কক্সবাজারে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের হুমকি পর্যটকের
  • ভারতে আটক ১৯ জেলে ৯৭ দিন পর বাড়ি ফিরলেন
  • স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে
  • নবাগত সদর ইউএনও’র সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়
  • বাগমারায় স্নাতকের শিক্ষার্থীকে ‘চিকিৎসক’ বানিয়ে চোখের অস্ত্রোপচারের চেষ্টা, বাবা-ছেলের দণ্ড