মাগুরায় বিএনপি কার্যালয়ে হামলার অভিযোগে সাকিবের বাবাসহ ৭৯ জনের নামে মামলা
Published: 25th, May 2025 GMT
মাগুরায় গত বছরের ৪ আগস্ট জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে বোমা হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ১৮ মে মাগুরা সদর থানায় ফৌজদারি কার্যবিধি ও বিস্ফোরক আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলাটি করেন মো. আবু তাহের নামের এক ব্যক্তি।
মামলায় আসামি হিসেবে মাগুরা–১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বাবা খন্দকার মাসরুর রেজাসহ ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন আরও ১৫০ থেকে ২০০ জন।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা–কর্মী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় ঘটনার দিন ৪ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে হাতবোমা, পিস্তল, শটগান, বন্দুক, রামদা, ছ্যানদা, চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, লোহার রড, শাবল, ককটেল বোমা, প্লাস্টিকের টবভর্তি পেট্রোল নিয়ে মাগুরা শহরের ইসলামপুরপাড়ায় অবস্থিত বিএনপি কার্যালয়ে এসে হামলা চালান। আসামিরা অফিসকক্ষের ভেতরে থাকা চেয়ার, টেবিল, আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। পরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এ সময় কার্যালয়ের পশ্চিম পাশে অবস্থিত মাগুরা জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি প্রয়াত হাবিবুর রহমানের বসতবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
মামলায় ১ নম্বর আসামি সাকিবের বাবা খন্দকার মাসরুর রেজার বিরুদ্ধে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে বিএনপি কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি ছাড়াও এ মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হচ্ছেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাখারুল ইসলাম শাকিল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শেখ রেজাউল ইসলাম, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাকিব হাসান প্রমুখ।
এদিকে মামলার আসামিদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন দাবি করেছেন, তাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। এমনকি তাঁরা কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে যাননি। তাঁরা ব্যবসা বা অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত। এই ব্যক্তিদের একজন মাগুরা শহরের সাহাপাড়ার বাসিন্দা টলস্টয় কাদির। তিনি ওই মামলার ৭ নম্বর আসামি। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে জেলা বিএনপির এক যুগ্ম আহ্বায়কের পৈতৃক জমিজমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি এক যুবদল নেতার সঙ্গে তাঁর পেশাগত বৈরিতা তৈরি হয়েছে। আমার ধারণা, এসব কারণে স্ত্রীকে চাপে রাখতে আমাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।’
মামলার বাদী মো. আবু তাহের (৩১) মাগুরা সদর উপজেলার পাথরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নিজেকে বিএনপির একজন কর্মী এবং ওই কার্যালয়ের কেয়ারটেকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জানতে চাইলে আজ রোববার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার দিনও ছিলাম। দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে মামলা করতে দেরি হয়েছে। ঘটনার সময় যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরকেই আসামি করা হয়েছে।’ তবে বিএনপির ওই কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবু তাহের দলীয় কার্যালয়ে কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বে ছিলেন না। তিনি সাবেক এক বিএনপি নেতার বাড়িতে কাজ করেন।
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ আজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা বিএনপির কার্যালয়ে যাঁরা হামলা করেছিলেন, তাঁদের সবাইকে আইনে আওতায় আনতে হবে। তবে এর সঙ্গে জড়িত নন, এমন কাউকে আসামি করলে সেটা দুঃখজনক ব্যাপার।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র আওয় ম ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
শাজাহান খানের মেয়ের সম্পদের বিবরণী চেয়ে দরজায় দুদকের নোটিশ
মাদারীপুর-২ (সদর-রাজৈর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খানের মেয়ে ঐশী খানের সম্পদের বিবরণী চেয়ে নোটিশ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মাদারীপুর শহরের চাঁনমারী এলাকায় শাজাহান খানের নিজ বাসভবনের দরজায় নোটিশটি টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় থানা-পুলিশ, স্থানীয় ব্যক্তিসহ মোট পাঁচজনের সাক্ষ্য নেয় দুদক। চিঠিতে আগামী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদের বিবরণী দুদকের কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা না দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে দুদক।
দুদকের মাদারীপুর কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, দুর্নীতির মাধ্যমে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মেয়ে ঐশী খান বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে উঠেছেন—এমন একটি অভিযোগ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জমা পড়ে। অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে ঐশী খানকে হাজির হয়ে সম্পদের বিবরণী তুলে ধরে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও প্রধান কার্যালয়ে হাজির হননি তিনি। এরপর প্রধান কার্যালয় থেকে দুদক কর্মকর্তা জুয়েল আহম্মেদ নোটিশ নিয়ে মাদারীপুরে আসেন। সেই নোটিশ মাদারীপুর কার্যালয়ের সদস্যদের সহযোগিতায় শাজাহান খানের বাসভবনের দরজায় টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
দুদকের সমন্বিত মাদারীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, নোটিশে আগামী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে ঐশী খানের সম্পদের বিবরণী তুলে ধরতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঐশী তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তালিকা দুদকের কাছে জমা না দিলে পরবর্তী সময়ে মামলা করে আইনি ব্যবস্থা নেবে দুদক।