ত কয়েক বছরের মতো চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরেও ব্যয় সাশ্রয় বা কৃচ্ছ্রসাধন নীতি নিয়েছে সরকার। এর আওতায় সরকারি খরচে সব ধরনের বৈদেশিক কর্মশালা ও সেমিনারে অংশগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কেনা যাবে না গাড়ি, জাহাজ ও বিমান। এমনকি পরিচালন বাজেটের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ খরচও বন্ধ রাখতে হবে। পরিচালন বাজেটে সব ধরনের থোক ব্যয়ও বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ব্যয় কমানো হয়েছে।

গত ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট। আর গতকাল বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ পরিপত্র জারি করে এসব নির্দেশনা দিয়েছে। পরিপত্রে বলা হয়েছে, চলমান সংকোচনমূলক নীতির প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরকারি অর্থায়নে সব ধরনের বৈদেশিক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও কর্মশালায় অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে। 

তবে অত্যাবশ্যকীয় বিবেচনায় পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরকারি অর্থায়নে এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া স্কলারশিপ, ফেলোশিপের আওতায় বৈদেশিক অর্থায়নে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নের জন্য বিদেশ যাওয়া যাবে। বাধা থাকবে না অন্যান্য দেশের সরকার, প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণ ও অর্থায়নে প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশযাত্রা।

সেই সঙ্গে প্রিশিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই) বা ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপট্যান্স টেস্টের (এফএটি) আওতায় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটির ২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে জারি করা পরিপত্র কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। তবে একান্ত অপরিহার্য হলে পিএসআই বা এফএটির আওতায় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।

পরিপত্রে সব ধরনের গাড়ি, জাহাজ ও বিমান কেনা বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হলেও পরিচালন বাজেটের আওতায় ১০ বছরের বেশি পুরোনো মোটরযান প্রতিস্থাপনে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে। 

চলতি অর্থবছরে পরিচালন বাজেটের আওতায় সব ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে ব্যয় বন্ধ থাকবে। তবে উন্নয়ন বাজেটের আওতায় পরিকল্পনা কমিশনের অনুকূলে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ খাতে জিওবি (সরকারি অর্থায়ন) বাবদ সংরক্ষিত এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুকূলে ‘থোক বরাদ্দ’ হিসেবে সংরক্ষিত জিওবির সম্পূর্ণ অংশ অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে ব্যয় করা যাবে।

 পরিচালন বাজেটের আওতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ছাড়া নতুন আবাসিক, অনাবাসিক বা অন্যান্য ভবন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ থাকবে। তবে চলমান নির্মাণকাজ ন্যূনতম ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে থাকলে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে। পরিচালন বাজেটে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ খরচ বন্ধের কথা বলা হলেও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় এ খাতে বরাদ্দ অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সব আনুষ্ঠানিকতা প্রতিপালন করে অর্থ বিভাগের পূর্ব অনুমতি নিয়ে ব্যয় করা যাবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অর থ ব ভ গ র সব ধরন র গ রহণ ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দুই অঙ্কের গড় মূল্যস্ফীতি

গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। ১৩ বছর আগে দুই অঙ্কের ঘরে ছিল বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি। ২০১০-১১ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয় ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ। তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি গত কয়েক মাস ধরে কমছে। গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এটি প্রায় তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ প্রতিবেদনটি সোমবার প্রকাশ করেছে বিবিএস। প্রতি মাসে মাঠ পর্যায় হতে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দামের তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে থাকে সংস্থাটি। প্রাপ্ত তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করে ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) প্রণয়ন করা হয়। এ সূচক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কতটা বাড়ল তার শতকরা হারই পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি। এটির ১২ মাসের চলন্ত গড় হিসাব হচ্ছে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি।

বিবিএসের তথ্য অনুসারে, গত জুন মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে হয়েছে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। মে মাসে এটি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। বিবিএসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে দেখা যায়। তবে গত ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে কমে আসে। টানা তিন মাস কমার পর চলতি বছরের মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ফের বাড়ে মূল্যস্ফীতি। এপ্রিল থেকে আবারও কমার ধারার ফিরে মূল্যস্ফীতি। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একটি বড় অংশ জুড়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকায় অর্থবছরটিতে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত কয়েক অর্থবছর ধরেই দেশে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখা যাচ্ছে না। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে বাস্তবতার আলোকে সে লক্ষ্যমাত্রায় সংশোধন আনা হয়। গড় মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ শতাংশ। 
  
গত ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। ওই অর্থবছরে ৯ শতাংশের কিছু বেশি হয় গড় মূল্যস্ফীতি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা আরও বেড়ে হয় ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিনিয়োগের সন্ধানে চীন যাচ্ছে বিডার প্রতিনিধি দল
  • ব্যয় সংকোচনে আরো কঠোর সরকার
  • সরকারি দপ্তরে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফর বন্ধ
  • ট্রাম্পের নতুন শুল্ক, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আয় ৩০ হাজার কোটি ডলারে উঠতে পারে
  • ট্রাম্পের শুল্ক: বড় ঝুঁকিতে ৮০১ রপ্তানি প্রতিষ্ঠান
  • জুলাইয়ের ৬ দিনে রেমিট্যান্স এল ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি
  • ৩ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায়
  • জানুয়ারি–মার্চ প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৮৬%
  • দুই অঙ্কের গড় মূল্যস্ফীতি