হিন্দুকুশ হিমালয় (এইচকেএইচ) অঞ্চলের আটটি আঞ্চলিক সদস্যদেশ নিয়ে গঠিত সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি) কর্মী নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি ইন্টারভেনশন ম্যানেজার: রিজিওনাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস পদে কর্মী নিয়োগ দেবে। বাংলাদেশি প্রার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে।

পদের নাম: ইন্টারভেনশন ম্যানেজার: রিজিওনাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিনিয়র স্পেশালিস্ট–জিওইনফরমেশন টেকনোলজি)

পদসংখ্যা:

যোগ্যতা: ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমসে পিএইচডি ডিগ্রিসহ জিআইটি ডিজাইন ও সিস্টেম অপারেশনালাইজেশনে অন্তত ১০ বছর পোস্টডক্টরাল অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অন্তত ১২ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ডেটা অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস, সার্ভিসেস ও জিআইটি অ্যাপ্লিকেশনের তাত্ত্বিক–ব্যবহারিক বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যোগাযোগে দক্ষ হতে হবে। নেতৃত্বের সক্ষমতা থাকতে হবে। ইংরেজি ভাষায় সাবলীল হতে হবে। হিন্দুকুশ হিমালয় অঞ্চলসহ বাইরে ভ্রমণের মানসিকতা থাকতে হবে।

চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক (নবায়নযোগ্য)

কর্মস্থল: আইসিআইএমওডি হেড অফিস, কাঠমান্ডু, নেপাল।

বেতন: বছরে মোট বেতন ৬৬ হাজার ৫১০ মার্কিন ডলার (৮১ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৯ টাকা প্রায়) (অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার ওপর ভিত্তি করে)।

সুযোগ-সুবিধা: প্রভিডেন্ট ফান্ড, সমন্বয় ভাতা, সন্তান/নির্ভরশীল সদস্য ভাতা, স্বাস্থ্য-জীবন-দুর্ঘটনাবিমা, ১৮ বছরের নিচে অন্তত দুই সন্তানের শিক্ষা ভাতা, সিভিয়ারেন্স পে, ছুটি ও ডে-কেয়ারের সুবিধা আছে।

আরও পড়ুনডাক বিভাগে আবারও বড় নিয়োগ, পদ ২২১৩ ঘণ্টা আগেআবেদন যেভাবে

আগ্রহী প্রার্থীদের আইসিআইএমওডির ক্যারিয়ার-সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের এই লিংকে লগইন করে আবেদন করতে হবে। নিয়োগসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এই লিংকে জানা যাবে।

আবেদনের শেষ সময়: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (নেপাল সময়)।

আরও পড়ুনবিদেশি সংস্থায় নেপালে চাকরি, বছরে বেতন ৮১ লাখ ১৩ হাজার১০ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্যানেলে গাঁথা পিয়ালের স্বপ্ন

যখন পর্দায় একেকটি দৃশ্য বদলে যায় নিখুঁতভাবে, যখন দর্শকের হৃদয় কাঁপে কোনো সংলাপের টানটান আবেগে, তখন খুব কম মানুষই খেয়াল করে, এসবের পেছনে একজন মানুষ আছেন– যিনি নিজ হাতে গড়েন গল্পের ছন্দ। এখন ঢাকার পোস্ট-প্রোডাকশন জগতে এক পরিচিত নাম জোবায়ের আবির পিয়াল। বগুড়ার এ তরুণের পথচলাটা ছিল যেমন পরিশ্রমে ভরা, তেমনি প্রেরণায়। 

তাঁর ভিডিও এডিটিংয়ের শুরুটা ছিল কৌতূহল থেকে। ছোটবেলায় সিনেমা দেখার সময় তাঁর মাথায় ঘুরত ‘এই দৃশ্যগুলো বানানো হয় কীভাবে?’ আলোর খেলা, শব্দের ছন্দ আর সময়ের নিখুঁত ব্যবস্থাপনায় কীভাবে তৈরি হয়? সেই আগ্রহই তাঁকে টেনে নিয়ে যায় ভিডিও এডিটিংয়ের এক নতুন জগতে। প্রথমে একটি সাধারণ ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে হাতেখড়ি। এরপর তাঁর সামনে খুলে যায় ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে নতুন নতুন সব দরজা। প্রতিটি কাট, প্রতিটি ট্রানজিশন যেন হয়ে উঠল গল্প বলার নিজস্ব এক টুল। প্রতিদিন এডিটিং টেবিলে তিনি শুরু করেন এক নিঃসঙ্গ অথচ রোমাঞ্চকর যাত্রা। পিয়াল বললেন, ‘শুরুর দিকে কিছুই জানতাম না। তখন শুধু জানতে চেয়েছি দৃশ্যগুলো কীভাবে তৈরি হয়। যখন কাটা শুরু করলাম তখনই খুঁজে পেলাম নিজের ভাষা। প্রতিটি কাটই তখন মনে হতো একেকটা শব্দ, যা দিয়ে আমি একটি গল্প বলতে পারি।’ এই কৌতূহলই তাঁকে টেনে নিয়ে আসে ঢাকায়। পোস্ট-প্রোডাকশন হাউসে সহকারী সম্পাদক হিসেবে শুরু হয় পিয়ালের জীবন। সেখানেই পান ভিডিও এডিটিংয়ের প্রথম গুরু ইকবাল কবির জুয়েলকে। পিয়াল বলেন, ‘জুয়েল ভাই শুধু বস ছিলেন না, ছিলেন আমার শিক্ষক। তাঁর হাত ধরেই বুঝতে শিখি, এডিটিং মানে শুধু দৃশ্য সাজানো নয়, গল্পের ভেতরের আবেগ বের করে আনা।’

এরপর এক দশকেরও বেশি সময়ের যাত্রা। বর্তমানে পিয়াল কাজ করছেন আলফাআই লিমিটেড-এ চিফ ভিডিও এডিটর হিসেবে। তাঁর প্রতিটি কাজেই যেন থাকে এক ধরনের ভিজ্যুয়াল সংবেদনশীলতা। শাহরিয়ার শাকিলের নেতৃত্বে কাজ করতে গিয়ে পেয়েছেন নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। 

পিয়াল বলেন, ‘শাকিল ভাই সবসময় বলেন, একজন সম্পাদক যদি নির্মাণের সব স্তরে থাকতে পারে, তাহলে সে কেবল কাজ করে না, নির্মাণের আত্মাকেও ধরতে পারে।’ এই কথাটা আমি হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করি।

পিয়ালের কাজের পরিসর বিশাল। ওয়েব সিরিজ মহানগর, সিন্ডিকেট, আগস্ট ১৪, জিম্মি, কথোপকথন– এসব জনপ্রিয় প্রজেক্টের পেছনে তাঁর নিখুঁত কাট, আবেগ তৈরি করা টাইমিং, আর গল্পের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। পিয়াল বলেন, ‘আমি প্রতিবার ভাবি– এই গল্পটা যদি আমার হতো, আমি কীভাবে বলতাম? সেই ভাবনা থেকেই আমি কাজ শুরু করি।’

ফিচার ফিল্ম দাগি-তে প্রধান এডিটর, সুড়ঙ্গ-এ পোস্ট-প্রোডাকশন সুপারভাইজার, তুফান ও তাণ্ডব-এ সহ-সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করেছেন পিয়াল। একক নাটকের সংখ্যাও তিনশর বেশি। তবে শুধু এডিটর হিসেবে নয়, তিনি কাজ করেছেন নন-ফিকশন প্রজেক্টেও। এক ডিশ দুই কুক, হলিডে প্ল্যানার, দ্য বক্স এসব কাজের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সহযোগী পরিচালকও। এই অভিজ্ঞতা তাঁকে দিয়েছে নির্মাণের সম্পূর্ণ প্রেক্ষাপট বোঝার সুযোগ। আর ভিএফএক্স? সেটিও তাঁর আরেক দক্ষতার ক্ষেত্র। 

‘সিন্ডিকেট’, ‘আগস্ট ১৪’, ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’, ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ এগুলোতে ভিএফএক্স ডিজাইন ও এক্সিকিউশনের কাজেও রেখেছেন নিজের ছাপ। পিয়ালের ভাষায়, ‘ভিএফএক্স যদি ঠিকভাবে ব্যবহার না হয়, তাহলে সেটি গল্পের শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন একটি চাকচিক্য হয়ে দাঁড়ায়। যখন গল্পের ছন্দে থাকে, তখন সেটি জাদুর মতো কাজ করে।’

পিয়াল তাঁর এই দীর্ঘ যাত্রায় পাশে পেয়েছেন দেশের বহু খ্যাতিমান নির্মাতা– শিহাব শাহীন, আসফাক নিপুণ, কাজল আরেফিন অমি, মিজানুর রহমান আরিয়ান, ভিকি জাহেদ, সুমন আনোয়ারকে– যাদের সান্নিধ্য তাঁকে করেছে আরও পরিপক্ব, আরও গভীর দর্শনসম্পন্ন। পিয়ালের কাজগুলো দেখে বলা যায় পর্দার আড়ালে থেকেও তিনি হয়ে উঠেছেন হাজারো গল্পের নেপথ্য নায়ক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ