কিছু ‘মতলববাজ’ পোস্ট দিয়ে মতলব হাসিলের চেষ্টা করছে: হানিফ সংকেত
Published: 11th, January 2025 GMT
‘আসলে আমরা ভিউবাজদের ভিউ বিড়ম্বনার স্বীকার হয়েছি। কোনো অপপ্রচারই “ইত্যাদি”র সঙ্গে দর্শকদের এই ভালোবাসার বন্ধন ছিন্ন করতে পারবে না। তার প্রমাণ ঠাকুরগাঁওয়ের “ইত্যাদি” দেখার জন্য দর্শকদের এই বাঁধভাঙা স্রোত, যা আমাদের অভিভূত করেছে। আর দর্শকদের এই ভালোবাসায় ধন্য হয়েই “ইত্যাদি” এ বছর পদার্পণ করেছে তার ৩৭তম বছরে।’ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে হানিফ সংকেত কথাগুলো লিখেছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে রাজা টংকনাথের রাজবাড়িতে ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানের শুটিংয়ের সময় ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে হানিফ সংকেত কথাগুলো তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে হানিফ সংকেত তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘“ইত্যাদি”র ঠাকুরগাঁওয়ের ধারণ অনুষ্ঠান নিয়ে কিছু কিছু মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ব্যক্তির সংবাদ ও মন্তব্য পড়ে কিছুটা অবাকই হয়েছি। ভেবেছিলাম এসবের কোনো জবাব দেব না। কিন্তু তাঁদের মন্তব্য ও সংবাদ দেখে মনে হচ্ছে, অনুষ্ঠানস্থলে আমি নই, বোধ হয় তাঁরাই উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মন্তব্য পড়ে মনে হয় অনুষ্ঠানস্থলে হামলা, মারামারি, ভাঙচুর হয়েছে, যে কারণে আমি অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হই। অথচ ঠাকুরগাঁওবাসী এবং উপস্থিত দর্শকেরাই জানেন, এ ধরনের কোনো ঘটনাই সেখানে ঘটেনি।’
এর আগে গতকাল সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপেও একই রকম কথা বলেছিলেন হানিফ সংকেত। বরাবরই দেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন স্থানে শুটিং হয় হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানের।
আরও পড়ুনঠাকুরগাঁওয়ে ইত্যাদির শুটিংয়ে কী ঘটেছিল, জানালেন হানিফ সংকেত২২ ঘণ্টা আগেসেই ধারাবাহিকতায় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ এবার শুটিংয়ের জন্য বেছে নেয় ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের টংকনাথ জমিদারবাড়ি। কিন্তু শুটিং শুরুর কিছুক্ষণ পর চেয়ার–ছোড়াছুড়ির ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে নানাজন নানা কথা বলেন। ঘটনার সত্যতা জানতে তাই যোগাযোগ করা হয় ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানের পরিকল্পক, নির্মাতা ও উপস্থাপক হানিফ সংকেতের সঙ্গে। তখন তিনি বলেন, ‘আসলে সেখানে সমস্যাটা হয়েছে কি, আমরা পরিস্থিতির শিকার হয়ে গেছি। আমরাও বুঝিনি যে এত লোক হবে। কর্তৃপক্ষও বোঝেনি যে এত লোক হবে। আমাদের জায়গাটা আসলে আরও বড় হওয়া উচিত ছিল।’
এদিকে হানিফ সংকেত তাঁর ফেসবুক পোস্টে এ–ও লিখেছেন, ‘আমরা দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রত্ননিদর্শনসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে গিয়ে ইত্যাদি ধারণ করছি প্রায় তিন দশক ধরেই।
ঠাকুরগাঁওয়ে অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করার পর আমরা রানীশংকৈল (রাজা টংকনাথের) রাজবাড়িতে “ইত্যাদি” ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিই এবং এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করি। আমরা ছয় হাজার দর্শকের বসার ব্যবস্থা করি এবং সন্ধ্যা সাতটার দিকে অনুষ্ঠান শুরু করি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আমরা জানতে পারি অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ অপেক্ষা করছেন অনুষ্ঠান দেখার জন্য।
আরও পড়ুনকখনোই ছাত্রদের আন্দোলন পরাজিত হয়নি: হানিফ সংকেত০৬ আগস্ট ২০২৪অনুষ্ঠানে দর্শক বাছাই, নৃত্য ও গান ধারণ করার পরই হঠাৎ করে বাঁশের ঘেরা সরিয়ে কয়েক হাজার লোক আমন্ত্রণপত্র না পেয়েও তাঁদের প্রিয় “ইত্যাদি” দেখার জন্য অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে পড়েন। ফলে অনুষ্ঠানস্থলে সাময়িক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আমরা পরিস্থিতি অনুধাবন করে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে কিছু সময়ের জন্য অনুষ্ঠান ধারণ স্থগিত করি এবং পরিস্থিতি শান্ত হলে আবার ধারণ শুরু করি। যদিও ইতিমধ্যে স্থগিতের কথা শুনে অনেক দর্শকই চলে যান। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান ধারণ করি।’
উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণ হামলা, ভাঙচুর বা মারামারি নয়, ‘ইত্যাদি’র প্রতি দর্শকদের ভালোবাসা—হানিফ সংকেত তাঁর লেখায় এমনটা উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এই ভালোবাসার কারণেই “ইত্যাদি”র ধারণ দেখার জন্য সবাই উন্মুখ হয়ে ছিলেন। কিন্তু স্থানাভাবে দাঁড়াতেও পারছিলেন না। তাই চেয়ার সরিয়ে দাঁড়ানোর স্থান করছিলেন। আর সে কারণেই এই চেয়ার–ছোড়াছুড়ি।
অনুষ্ঠানটির রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৪৮ বলে সেঞ্চুরি করে ম্যাচসেরার পুরস্কার ভাগ করলেন জয়সোয়াল
২৩৫ রানের লক্ষ্য। সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে আজ সেই লক্ষ্য ১৫ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে গেল মুম্বাই। যশস্বী জয়সোয়ালের ৪৮ বলে করা বিস্ফোরক এক সেঞ্চুরিতে রান তাড়াটাকে ছেলেখেলা বানিয়ে হরিয়ানাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে মুম্বাই।
স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরা হয়েছেন ভারত জাতীয় দলের ওপেনার জয়সোয়াল। সেই পুরস্কার নিতে গিয়ে জয়সোয়াল যা করলেন, সেটি ছাপিয়ে গেছে তাঁর ঝোড়ো সেঞ্চুরিকেও। দলের জয়ের একক কৃতিত্ব নিতে চাইলেন না এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, পুরস্কার মঞ্চে সতীর্থ সরফরাজ খানকেও ডেকে নিলেন। জয়সোয়াল ম্যাচসেরার পুরস্কারটা ভাগাভাগি করেন ২৫ বলে ৬৪ রান করা সরফরাজের সঙ্গে।
পুনের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে আজ সরফরাজ যখন ব্যাটিংয়ে নামেন ৩.১ ওভারে ১ উইকেটে ৫৩ রান মুম্বাইয়ের। ১০ বলে ২১ রান করে আউট হয়েছেন উদ্বোধনী জুটিতে জয়সোয়ালের সঙ্গী অজিঙ্কা রাহানে। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ৩৭ বলে ৮৮ রান যোগ করেন সরফরাজ-জয়সোয়াল।
আরও পড়ুনটি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পোস্টারে নেই পাকিস্তানসহ ১৫ দেশের অধিনায়ক, পিসিবির আপত্তি৩ ঘণ্টা আগেদশম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলকে ১৪১ রানে রেখে ফেরেন সরফরাজ। ৫০ বলে ১০১ রান করা জয়সোয়াল ফিরেছেন ১৮তম ওভারে জয় থেকে ৭ রান দূরে থেকে। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে চতুর্থ সেঞ্চুরি পাওয়া জয়সোয়ালের ইনিংসে ছক্কা মাত্র একটিই। তবে ১৬টি চার মেরেছেন দেড় বছর আগে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের কীর্তি গড়ল জয়সোয়ালের মুম্বাই। হরিয়ানার রান আর ২টি বেশি হলেই সর্বোচ্চ লক্ষ্য ছুঁয়ে জয়ের রেকর্ডটা পুনরুদ্ধার করতে পারত মুম্বাই। এক বছর আগে ২৩০ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে জিতে রেকর্ড গড়েছিল মুম্বাই। গত শুক্রবার সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে ঝাড়খণ্ড। পুনের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামেই পাঞ্জাবের দেওয়া ২৩৬ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে জিতে রেকর্ড গড়ে দলটি।