নাইকো দুর্নীতি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ
Published: 22nd, January 2025 GMT
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা নাইকো দুর্নীতি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন উপপরিচালক সাহেদুর রহমান সাক্ষ্য দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল-মামুন তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। তবে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ না হওয়ায় আগামী ২৯ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া, আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া ও আমিনুল ইসলাম। এর আগে এ মামলার বাদী, কানাডার পুলিশ লয়েড স্কোয়েপ, কেভিন ডুগানসহ মোট ৩৮ সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
এদিন মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তাঁর পক্ষে আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া হাজিরা দাখিল করেন। মামলায় ৬৮ সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক (বর্তমানে উপপরিচালক) মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক (বর্তমানে উপপরিচালক) এস এম সাহিদুর রহমান তদন্ত শেষে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আজকের আদেশের ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতার ব্যাপারে আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না: শিশির মনির
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের আজকের আদেশের ফলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতার ব্যাপারে আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স-মতামতের প্রক্রিয়া নিয়ে রিট সরাসরি খারিজ করে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ আদেশের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন। তিনি এ মামলায় ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হন।
আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সরকারের বৈধতার প্রশ্নে হাইকোর্ট বিভাগের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে দায়ের করা লিভ টু আপিলে আজ আদেশ হলো। এই আদেশটি সর্বসম্মতিতে হয়েছে। এই আদেশের ফলে এটি প্রতিষ্ঠিত হলো যে, বর্তমান সরকার জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে গঠিত। পাশাপাশি এই সরকার যে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, তা মূলত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই করছে।
এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, উচ্চ আদালত দেশের সংবিধানের এই মূলমন্ত্র আজ আবার পুনর্ব্যক্ত করলেন। এই আদেশের ফলে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে তিনটি ম্যান্ডেট—নির্বাচন, বিচার ও সংস্কার—সম্পর্কিত বৈধতার ব্যাপারে আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আজকের আদেশের ফলে বাংলাদেশের সংবিধানের যে শূন্যতার কথা অনেকে আরগুমেন্ট করেছেন, যে ভ্যাকুয়ামের কথা অনেকে আরগুমেন্ট করেছেন, এই ভ্যাকুয়ামের আর কোনো জায়গা থাকবে না। এটি সুপ্রিম কোর্টের আদেশের মাধ্যমে আজকে প্রমাণিত হলো।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চান। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামতের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শপথ নেন। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে ‘সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের’ বিষয়ে বলা আছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামতের প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ গত বছরের ডিসেম্বরে রিটটি করেন। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৩ জানুয়ারি রিটটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ।
আরও পড়ুনপর্যবেক্ষণসহ লিভ টু আপিল খারিজ, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বৈধ১২ মিনিট আগে