মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ
Published: 13th, March 2025 GMT
মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এ মামলার আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় মাগুরার সেই শিশুকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক কর্নেল নাজমুল হামিদ প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের শিশুটিকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন তার মা। এই মামলায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
কর্নেল নাজমুল হামিদ বলেন, আজ সকালে দুই দফায় শিশুটির ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়। সিপিআর দেওয়ার পর তাঁর হৃৎস্পন্দন ফিরে এসেছিল। কিন্তু দুপুর ১২টায় আবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়। এই দফায় সিপিআর দেওয়ার পরও তার হৃৎস্পন্দন ফেরেনি। বেলা ১টায় তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে, মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি আজ বেলা ১টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে। সিএমএইচের সর্বাধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। দুইবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃৎস্পন্দন ফিরে আসেনি।
আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ৮ মার্চ শিশুটিকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকার সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। শিশুটির আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শিশুটির শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে। যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
আরও পড়ুনমাগুরার সেই শিশুটিকে বাঁচানো গেল না১ ঘণ্টা আগেগত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। সেদিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (পিআইসিইউ) থেকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। তাকে ঢাকার সিএমএইচের পিআইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুনমাগুরায় শিশু ধর্ষণ: মধ্যরাতে আদালতে শুনানি, চার আসামির রিমান্ড মঞ্জুর ১০ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স এমএইচ
এছাড়াও পড়ুন:
জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চপদস্থ তদন্ত বোর্ড গঠন: আইএসপিআর
একজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এর আগে এই জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাকে তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আজ শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্যগুলো জানানো হয়।
আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন–সংক্রান্ত একটি অভিযোগ প্রচারিত হয়েছে, যেখানে অভিযোগকারী একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তার প্রাক্তন স্ত্রী। এই সাবেক সেনা কর্মকর্তা আগে একটি চাঞ্চল্যকর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত হন। তিনি বর্তমানে কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উল্লিখিত অভিযোগটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার আগেই এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবগত হয়। যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। তবে অভিযোগকারী নারীর সামাজিক মর্যাদা ও ঘটনার সংবেদনশীলতা বিবেচনায় যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করে সেনা আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল। এর আগে অভিযুক্ত জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাকে নিজ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সেনাবাহিনী থেকে কোনো সদস্য বরখাস্ত হলে নিয়ম অনুযায়ী তাঁর চিকিৎসা, সরকারি বাসস্থান বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা নয়। তবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে উল্লিখিত সাবেক সেনা কর্মকর্তার সন্তানের এসএসসি পরীক্ষা বিবেচনা করে পরিবারটিকে সাময়িকভাবে সরকারি বাসস্থানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নৈতিক মূল্যবোধ ও শৃঙ্খলার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এ ধরনের নীতিভ্রষ্ট ও নীতিবিবর্জিত কার্যক্রমকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনোই প্রশ্রয় দেয় না। সেনাবাহিনী তার সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে। অপরাধ প্রমাণ সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।