আগামী জাতীয় নির্বাচনে সহায়তা করতে চায় ইইউ
Published: 16th, March 2025 GMT
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সাহায্য করতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। একই সঙ্গে তারা এই দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন দেখতে চায়।
আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে ইইউর প্রতিনিধিদল। এই বৈঠকে তারা ইসিকে সহায়তার প্রস্তাব দেয়।
বৈঠক শেষে সিইসি নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ইইউর প্রতিনিধিদল নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। ইসির বাজেট সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। ইসি বলেছে, টাকাপয়সার সমস্যা নেই। সরকারের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তবে ইসিকে সাহায্য করতে চায় ইইউ। ইসির কী কী প্রয়োজন, তা তারা জানতে চেয়েছে। তারা বলেছে, নির্বাচনের জন্য যে ধরনের সাহায্য প্রয়োজন, তা করতে তারা প্রস্তুত রয়েছে।
সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, তিনি নির্বাচনে পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ, ভোটার এডুকেশন (ভোটার শিক্ষণ) ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে বলেছেন। ইইউ সর্বতোভাবে সহায়তা করতে রাজি আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দিন বলেন, ইইউ আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন দেখতে চায়। তারা অবাধ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়। নির্বাচন কমিশনও এমন নির্বাচনই চায়। এ জন্য ইসি স্বচ্ছভাবে কাজ করছে। কোনো কিছু লুকিয়ে বা ছাপিয়ে রাখা হচ্ছে না।
বৈঠক শেষে ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, তিনি ইসিকে জানিয়েছেন, ইইউ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজনে সহায়তা করবে। উল্লেখযোগ্য আর্থিক প্যাকেজের পাশাপাশি ইইউ তার অভিজ্ঞতা ও এক্সপার্টিজ (দক্ষতা) প্রদানের মাধ্যমে এই কাজ করবে বলে তিনি জানান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ধ্বংস করে ময়মনসিংহের আত্মাকে ক্ষতবিক্ষত করেছে প্রশাসন: গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি
ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে গড়ে ওঠা ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ঐতিহাসিক ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ভেঙে দিয়ে জেলা প্রশাসন ময়মনসিংহের আত্মাকে ক্ষতবিক্ষত করেছে বলে বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।
গতকাল শুক্রবার গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ‘বীক্ষণ’মঞ্চ আবার নির্মাণের দাবি জানানো হয়।
জেলা প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষে বিবৃতি দেন অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে কিছু গোষ্ঠী শিল্প–সংস্কৃতি ও সৃজনশীল জগতে নানাভাবে হামলা করছে।
এর আগে গত বুধবার সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনার অভিযোগ এনে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ভেঙে দেয় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন। বুধবার দুপুর পর্যন্ত জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে ওঠা ময়মনসিংহের সাহিত্য ও সংস্কৃতির এই প্রোজ্জ্বল বাতিঘরটিকে সরকারি ক্ষমতার দম্ভে যেভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তা কেবল একটি স্থাপনার বিনাশ নয়; বরং মুক্তচিন্তা, সৃজনশীলতা এবং একটি অঞ্চলের দীর্ঘ লালিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর নগ্ন ও পরিকল্পিত আক্রমণ।
প্রশাসনের এমন আচরণ ক্ষমতার অপব্যবহার ও সংস্কৃতি কর্মীদের প্রতি চরম বিদ্বেষ ও অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল উল্লেক করে বিবৃতিতে বলা হয়, এই পদক্ষেপ দেশের সংস্কৃতিচর্চার ধারাবাহিকতাকে মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে।
দেশে ভিন্নমত ও সৃজনশীলতাকে নির্মূল করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র নির্লজ্জভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, গত চার দশক, প্রতি শুক্রবার কবি-সাহিত্যিকদের পদচারণে মুখর থাকত ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ। এই মঞ্চের ধ্বংসযজ্ঞ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং এটি বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান জনবিরোধী ও কর্তৃত্ববাদী অপতৎপরতারই অংশ।
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে লেখক, শিক্ষক ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে নির্বিচার হয়রানিমূলক মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের এবং কথিত মব জাস্টিসের নামে অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান না নিলে সরকারকে এর দায় নিতে হবে।
বিবৃতিতে ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত সংস্কৃতিবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।