নাটোরের সিংড়ায় নগদ টাকাসহ আটক গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) সেই নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাবিউল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ ও গাড়িতে অবৈধ অর্থ বহনের অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

ছাবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগের অভিযোগ পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে গাড়িতে অবৈধ অর্থ বহন ও যৌথ বাহিনী জব্দ করার বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিধিমালা অনুযায়ী ছাবিউল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত একটার দিকে গাইবান্ধা থেকে ছেড়ে আসা একটি প্রাইভেটকার রাজশাহী যাচ্ছিল। পথে নাটোরের সিংড়ার চলনবিল গেট এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টে প্রাইভেটকারটিতে তল্লাশি চালানো হয়। এসময় প্রাইভেটকারটির পেছনে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা দেখে প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলামের কাছে টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।

এ সময় ছাবিউল ইসলাম টাকাগুলো জমি বিক্রির টাকা বলে দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। পরে যৌথবাহিনী ওই টাকা ও টাকা বহনকারী গাড়িটি জব্দ করে। সেই সঙ্গে প্রকৌশলীসহ প্রাইভেটকার ও তার ড্রাইভারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে শুক্রবার বিকেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্তের জন্য ডাকলে যেকোনো সময় হাজির হতে বাধ্য থাকবেন তিনি এমন মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

পুরো বিষয়টি উদঘাটন করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, ছাবিউল ইসলামের গাড়ি থেকে জব্দ করা প্রায় ৩৭ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

রোববার বিকেলে নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহান এই নির্দেশ দেন। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তদন্তকারী কর্মকর্তা সিংড়া থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু আহমেদ জব্দ করা টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ চেয়ে রোববার দুপুরে আদালতে আবেদন করেন। তার প্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক জব্দ করা প্রায় ৩৭ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বরখ স ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এক মাস আগে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার ইমন দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষায় বসার অনুমতি পেল

এক মাসের বেশি সময় আগে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার আশরাফুল ইসলাম ইমনকে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার শিশু আদালত-৯–এর বিচারক শাহানা হক আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

ইমন গাজীপুরের জয়দেবপুর উপজেলার ছোট দেওড়া অগ্রণী উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত ২১ অক্টোবর উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দেওয়া হয়। এর পর থেকে কারাবন্দী আছে ছেলেটি।

পুলিশ বলছে, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মিছিল থেকে ইমনকে আটক করা হয়েছিল। তবে ইমনের বাবা বলছেন, তাঁর ছেলে মিছিলে যায়নি। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ আটক করে। পরে তাকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

ইমনের বাবা আবু তাহের আজ প্রথম আলোকে বলেন, ইমন গত ২১ অক্টোবর গাজীপুর থেকে উত্তরার মাস্কট প্লাজায় বই কিনতে যায়। সেখানে কে বা কারা মিছিল করে সে জানত না। ফুটপাত দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ধরে তাকে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি থানায় গিয়ে ছেলেকে দেখতে পান। এরপর থেকে আজ ১ মাস ৬ দিন হয়েছে ছেলে কারাবন্দী। এখনো তার জামিন হয়নি।

ইমনের আইনজীবী গোলাম রাব্বানী ও কামরুল হোসেন জানান, ইমনকে গ্রেপ্তারের পর তার বয়স ১৯ বছর লিখেছিল পুলিশ। তাঁরা আদালতে কাগজপত্র দাখিল করে প্রমাণ করেছেন, ইমন শিশু। তাকে রাস্তা থেকে আটক করা হয়েছে। কয়েক দফায় ইমনের জামিনের আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেনি। গতকাল তাঁরা ইমনের দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষায় বসার জন্য অনুমতি চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন। আদালত আদেশের জন্য আজকে দিন ধার্য করেন। আজ বিচারক তাকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছেন।

ইমনের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে পুলিশ বলেছে, গত ২১ অক্টোবর সকাল সোয়া ১০টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ নম্বর সেক্টরে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীরা সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়। কিছুক্ষণ পর পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় অপু ও ইমনকে আটক করে পুলিশ। বাকিরা পালিয়ে যায়। ঘটনার দিন বিকেলে উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মনিরুজ্জামান মামলা করেন।

ইমনের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বকর প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইমন আমাদের শিক্ষার্থী। সে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। তাকে কারাগারে নেওয়ার কথা শুনেছি। স্কুলে তাকে কোনো রাজনৈতিক কাজে দেখিনি। বাইরে কী করে, আমাদের জানা নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ