এক বছরে ৭৮৩ কোটি টাকা লোকসানের রেকর্ড বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের
Published: 20th, April 2025 GMT
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ ফাইন্যান্স বা বিডি ফাইন্যান্স গত বছর রেকর্ড পরিমাণ লোকসান করেছে। বছর শেষে কোম্পানিটির লোকসান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮৩ কোটি টাকা। যে কারণে ২০২৪ সালের জন্য কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিডি ফাইন্যান্সের পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে আজ রোববার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে এই তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে কোম্পানিটি বিপুল পরিমাণ লোকসান হওয়ার কারণও জানিয়েছে। বলেছে, খেলাপি ঋণ ও শেয়ারবাজারে বিতরণ করা মার্জিন ঋণ এবং বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগের বিপরীতে বর্তমান-ভবিষ্যৎ ঝুঁকি বিবেচনায় শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিং করা হয়েছে। বছর শেষে খেলাপির ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রায় ৭০০ কোটি টাকার মতো প্রভিশনিং করেছে কোম্পানিটি। এ কারণে বছর শেষে কোম্পানিটি বড় ধরনের লোকসানে পড়েছে।
কোম্পানি-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে বিডি ফাইন্যান্সের লোকসান হয়েছিল প্রায় ১০৪ কোটি টাকা, যা গত বছর সাড়ে সাত গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮৩ কোটি টাকা। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করার পর এটিই কোম্পানিটির সবচেয়ে বড় লোকসানের রেকর্ড। আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের প্রথম ৯ মাস জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরে বিডি ফাইন্যান্সের লোকসান হয়েছিল প্রায় ২০ কোটি টাকা। বছর শেষে তা একলাফে ৭৮৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। তাতে বছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) দাঁড়ায় ৪১ টাকা ৬১ পয়সা। ২০২৩ সালে লোকসান হয়েছিল ৫ টাকা ৬০ পয়সা।
বড় ধরনের এই লোকসানের কারণ জানতে চাইলে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কায়সার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের খেলাপি ও ঝুঁকিপূর্ণ সব ধরনের ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশনিং করা হয়েছে। এ ছাড়া শেয়ারবাজারে মার্জিন ঋণ, শেয়ারে বিনিয়োগ ও প্লেসমেন্টের বিপরীতে যেসব ঋণ অনাদায়ি এবং ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সেসব বিনিয়োগের বিপরীতেও আমরা শতভাগ প্রভিশনিং করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছ থেকে প্রভিশনিংয়ের ক্ষেত্রে নানা ছাড় নেওয়ার সুযোগ থাকলেও আমরা সেটি করিনি। বরং শতভাগ প্রভিশনিং করেছি, যাতে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি এড়ানো যায়। তাই গত বছর বড় লোকসান হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও খেলাপি ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশনিং করায় ভবিষ্যতে বিডি ফাইন্যান্স একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে।’
বাংলাদেশ ফাইন্যান্স হচ্ছে আনোয়ার গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এটির প্রায় সাড়ে ৩০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ১৫ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের এবং প্রায় সাড়ে ৫৪ শতাংশ ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে। কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের সর্বশেষ ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল ২০২২ সালের জন্য। ২০২৪ সালের মতো ২০২৩ সালেও কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছ থেকে প্রভিশনিংয়ের ক্ষেত্রে নানা ছাড় নেওয়ার সুযোগ থাকলেও আমরা সেটি করিনি। বরং শতভাগ প্রভিশনিং করেছি, যাতে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি এড়ানো যায়। তাই গত বছর বড় লোকসান হয়েছে।কায়সার হামিদ, এমডি, বিডি ফাইন্যান্স।এদিকে রেকর্ড লোকসানের খবরে আজ রোববার ঢাকার শেয়ারবাজারে বিডি ফাইন্যান্স শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৮ শতাংশ বা ৮০ পয়সা কমে ৯ টাকা ২০ পয়সায় নেমেছে। এদিন কোম্পানিটির প্রায় সাড়ে ৮ লাখ শেয়ার হাতবদল হয়। দুই বছরের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম প্রায় ৪০০ শতাংশ বা ৩৫ টাকা কমেছে। পরপর দুই বছর বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ায় কোম্পানিটিকে দুর্বল মানের ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার থেকে জেড শ্রেণিভুক্ত হিসেবে কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন হবে।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, নিয়ম অনুযায়ী জেড শ্রেণিভুক্ত হওয়ায় কোম্পানিটির শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা কোনো ধরনের ঋণসুবিধা পাবেন না। পাশাপাশি এটির শেয়ারের লেনদেন নিষ্পত্তিতেও এক দিন বেশি সময় লাগবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ইন য ন স র শ য় রব জ র র ব পর ত বছর শ ষ গত বছর র কর ড ত বছর ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েট ভর্তি পরীক্ষা: জেনে নিন ১০৬৫ আসনের খুটিনাটি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, বিইউআরপি ও বিআর্ক কোর্সে ভর্তিতে আবেদন শুরু হবে আগামী বুধবার (৩ ডিসেম্বর ২০২৫)। সকাল ১০টা থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন আগ্রহী ব্যক্তিরা। ১৩ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।
২৭ নভেম্বর প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, বিইউআরপি ও বিআর্ক কোর্সে ভর্তি হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনলাইনে আবেদনপত্র আহ্বান করা যাচ্ছে। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদগুলোয় ১৬টি বিভাগে ১ হাজার ৬৫টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের পাঠ্যসূচির ওপর এবং ফাংশনাল ইংলিশের ওপর ভিত্তি করে ৩ ঘণ্টার ৫০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা হবে।আবেদনের যোগ্যতা—প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২২ অথবা ২০২৩ সালের মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ ৪.০০ অথবা সমতুল্য গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে অথবা ২০২৪ সালের নভেম্বর বা তারপরে ‘A’ লেভেল সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত হতে হবে।
প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে উচ্চমাধ্যমিক/আলিম/সমমানের পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও ইংরেজি—চারটি বিষয়ে কমপক্ষে মোট জিপি ১৮ অথবা বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় উক্ত বিষয়গুলোয় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড পেয়ে পাস হতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণিত, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে এককভাবে ন্যূনতম জিপিএ-৪ পেতে হবে। এ ছাড়া বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হতে হলে প্রার্থীকে উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে কমপক্ষে জিপি ৪.০০ থাকতে হবে।
প্রার্থী জিসিই ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল পাস করে থাকলে তাঁর ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ‘ও’ লেভেল পরীক্ষায় কমপক্ষে পাঁচটি বিষয়ে ন্যূনতম ‘বি’ গ্রেড পেয়ে পাস হতে হবে। ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও গণিতে পৃথকভাবে কমপক্ষে ‘বি’ গ্রেড পেয়ে পাস হতে হবে। এ ছাড়া বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হতে হলে প্রার্থীকে জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে কমপক্ষে ‘বি’ গ্রেড পেয়ে পাস হতে হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২২ অথবা ২০২৩ সালের মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ ৪.০০ অথবা সমতুল্য গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে