গাজার বেইত হানুন শহর ধ্বংসের ছবি প্রকাশ করল ইসরায়েল
Published: 12th, July 2025 GMT
গাজা উপত্যকার উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ফিলিস্তিনি শহর বেইত হানুন সম্পূর্ণ ধ্বংস করার একটি ছবি প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ফিলিস্তিনি শহরটিকে ‘মাটির সঙ্গে মিশিয়ে’ দেওয়ার জন্য গর্ব করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিটি পোস্ট করেছেন।
শনিবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ উত্তর গাজার বেইন হানুনের ধ্বংসযজ্ঞের ছবি তার ‘এক্স’ অ্যাকাউন্ট পোস্ট করে বলেছেন, “রাফা ও বেইত হানুনের পরে.
আরো পড়ুন:
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৭ হাজার ৮০০ ছাড়াল
ফিলিস্তিনিদের ওপর নিষ্ঠুর অমানবিকতার শেষ কোথায়?
আকাশ থেকে তোলা ছবিটিতে ধ্বংসস্তূপের বিশাল এলাকা ও ধ্বংসস্তূপের দৃশ্য দেখা গেছে। ইসরায়েলের দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত বেইত হানুনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসস্তূপ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান কতটা বিপর্যয় ডেকে এনেছে, ছবিটি যেন তারই মাত্রা প্রকাশ করে।
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্থল অভিযান শুরু করার সময় প্রথম যে এলাকায় প্রবেশ করেছিল তার মধ্যে বেইত হানুন ছিল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরু হওয়ার ২১ মাসেরও বেশি সময় পরেও, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনবাহিনীর বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিতভাবে অতর্কিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে ইসরায়েলি বাহিনীতে হতাহতের ঘটনা বেড়ে চলেছে, যা তেল আবিবের যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়।
গত সোমবার বেইত হানুনে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় ‘কেফির’ ব্রিগেডের ‘নেটজাহ ইয়েহুদা’ ব্যাটালিয়নের পাঁচজন সৈন্যের মৃত্যু এবং আরো ১৪ জন আহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।
পরে, একটি সামরিক তদন্তে জানা গেছে, হামাস যোদ্ধারা বেইত হানুনে ব্যাটালিয়নের একটি পদাতিক টহল দলের বিরুদ্ধে তিনটি বিস্ফোরক ডিভাইসের বিস্ফোরণ ঘটায়, তারপর মেশিনগান দিয়ে তাদের আক্রমণ করে।
বেইত হানুন গাজা উপত্যকার উত্তর সীমান্তে অবস্থিত। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শহরটি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ও কামানের তীব্র গোলাবর্ষণের মুখে পড়ে। একইসঙ্গে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পদাতিক ইউনিটগুলো শহরের ভেতরে ও আশেপাশে স্থল অভিযানও জোরদার করে।
গত মঙ্গলবার ইসরায়েল ঘোষণা করে যে, তারা সব দিক থেকে শহরটি অবরোধ করেছে।
এর আগে, গত বছরের ২ জুন, উত্তর গাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি হামলায় শহরের অবকাঠামো ও গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস ও মানবিক পরিস্থিতির পতনের কারণে বেইত হানুনকে ‘দুর্যোগ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
বেইত হানুন পৌরসভার তথ্যানুসারে, ইসরায়েলি সামরিক অভিযান শুরুর আগে ১৭ হাজার দুনাম (এক দুনাম সমান ১ হাজার বর্গমিটার) জুড়ে বিস্তৃত এই শহরে ৬০ হাজার ফিলিস্তিনির বসবাস ছিল।
যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষের দিক থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যানুসারে, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ নগরীতে আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৩৭ হাজার ছাড়িয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং প্রায় ৮৫ শতাংশ জনসংখ্যা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। খাবার, পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ম নব ক অবস থ ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
যশোর বোর্ডে এসএসসিতে ৭৫ স্কুলে শতভাগ পাস, ফেল ২ প্রতিষ্ঠানে
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে। পাশাপাশি শতভাগ ফেল করেছে দু’টি প্রতিষ্ঠান। আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে। এবার শতভাগ পাস করেছে ৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মতিন।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় এবার ২ হাজার ৫৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ৭৫টির সব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। তবে এই সংখ্যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গতবছর শতভাগ পাস করেছিল ৪২২টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি গতবছর শতভাগ ফেলের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না। এবার দু’টি প্রতিষ্ঠান এই তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এ দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো নড়াইলের মুলাদি তালতলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের নাহালখালি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। এই স্কুল দু’টি থেকে একজন করে ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে অনুত্তীর্ণ হয়েছে। ২০২৩ সালেও শতভাগ ফেলের তালিকায় ছিল মুলাদি তালতলা স্কুল।
যশোর বোর্ড সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে শতভাগ পাসের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১৯৩টি। আর ২০২২ সালে শতভাগ উত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১৩টি। আর গতবছর শতভাগ অনুত্তীর্ণ কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকলেও ২০২৩ সালে যশোর বোর্ডের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যশোরের শার্শা উপজেলার সাড়াতলা নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতক্ষীরার তালা উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নড়াইলের মুলাদি তালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীই অনুত্তীর্ণ হয়েছিল। ২০২২ সালে এমন প্রতিষ্ঠান ছিল একটি।