প্রধান ফটক থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত সাজানো হয়েছে রংবেরঙের বাতি ও প্রাচীন মোটিফে। সব স্টলকে সাজানো হয়েছে শন দিয়ে তৈরি ঘরের আদলে। এসবের সামনে বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড়। তাদের চোখমুখ খুঁজে ফিরছে ফেলে আসা গ্রামজীবনের স্মৃতি। সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে আয়োজিত পক্ষকালব্যাপী মেলায় শনিবার দেখা মেলে এমন দৃশ্যের।
পরিবার নিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে এসেছেন হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য দেখতে পাওয়া যায় এই মেলায়। অতীতকালে মানুষের ব্যবহার্য জিনিসপত্র চেনানোর জন্য ছেলেমেয়েকে নিয়ে এসেছেন। এগুলো দেখলে কিছুটা হলেও পুরোনো দিনের কাছে ফিরে যেতে পারেন তিনি।
নববর্ষের এই মেলা শুরু হয়েছে পহেলা বৈশাখ সকালে। প্রতিদিন মেলার লোকজ মঞ্চে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছে। প্রতিদিনই থাকছে বাউল গান ও লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুতুলনাচ, হালখাতা, বায়োস্কোপ, সাপ ও বানর খেলা, নাগরদোলাসহ গ্রামীণ বিনোদনের নানা আয়োজন। থাকছে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলা তিন গুটি, সাত গুটি, বাঘবন্দি, কানামাছি, গোল্লাছুট, বউচি ও কপাল টোক্কা। খাবারবিলাসীদের জন্যও থাকছে মুখরোচক সব বাঙালি খাবার।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থেকে শিক্ষার্থী মাসুদ আলম ও কাউসার মৃধা এসেছেন মেলায়। তারা বলেন, ব্যতিক্রমী পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে মেলার স্টল। সব পণ্যই কারুশিল্পীদের তৈরি। এখন প্লাস্টিকজাত পণ্যের ভিড়ে কারুপণ্যের কদর কমে গেছে। বেশি বেশি এমন মেলার আয়োজন করলে বর্তমান প্রজন্ম এসব জিনিস চিনতে পারবে।
কারুশিল্পী চম্পা বর্মণের ভাষ্য, তাদের তৈরি পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করেছে ফাউন্ডেশন। প্রতিবছর শুধু কারুপণ্যের মেলা আয়োজনের আকুতি তাঁর। মৃৎশিল্পী সঞ্জয় কুমার পাল বলেন, তাদের পণ্য দর্শনার্থীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। শখের হাঁড়ি অনেকেই কিনে নিচ্ছেন শখের বশে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, আয়োজনের উদ্দেশ্য দেশের বিভিন্ন এলাকার জামদানি, শতরঞ্জি, নকশিকাঁথা, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, হাতপাখা, কাঠখোদাই শিল্প, পটচিত্রশিল্প, শোলা শিল্প, বাঁশ-বেত শিল্প ও নৃগোষ্ঠীর কারুশিল্পীদের সৃষ্টিশীল কর্মের উপস্থাপন। পাশাপাশি তারা যেন বিপণনের সুযোগ পান সেটাই লক্ষ্য।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
একটি মহল নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে: ডা. জাহিদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, “একটি মহল নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। তারা বলে আগে নাকি গণভোট হতে হবে। দেশের মানুষ ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি, এখন তারা ভোট দিতে উদগ্রীব হয়ে আছে। বাংলাদেশের জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ, তারা আর কোনো ষড়যন্ত্রের কাছে মাথা নত করবে না।”
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার মুকুন্দপুর মাদরাসা মাঠে মুকুন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত মিলন মেলায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
গণভোট নিয়ে ‘ক্রসরোডে’ সরকার
বিএনপির জুলাই সনদে ‘না’ বলার সুযোগ নেই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
ডা. জাহিদ বলেন, “বিএনপি সমঅধিকারে বিশ্বাস করে। বিএনপি মনে করে, ধনি-গরিব, মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের মানুষের উন্নতি হলেই বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, আধুনিক বাংলাদেশ হবে।”
তিনি বলেন, “যারা দেশটাকে লুটেপুটে খেয়েছে তারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বিএনপি কখনো পালায়নি। পালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস বিএনপির নেই। বিএনপি হলো জনগণের পাশে থাকার দল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ইতিহাস, বেগম খালেদা জিয়ার ইতিহাস হলো সুখে-দুঃখে জনগণের পাশে থাকার ইতিহাস।”
মুকুন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাকিম মন্ডলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান রাজা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা শফিকুল আলম মামুন, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মিঞা শিরন আলম।
ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ