মৃত এক নক্ষত্রের কক্ষপথে শীতলতম এক্সোপ্ল্যানেটের (সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহ) সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গ্রহটি এখন পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া শীতলতম এক্সোপ্ল্যানেট বলে দাবি করেছেন তাঁরা। নতুন এই গ্রহের নাম দেওয়া হয়েছে ডাব্লিউডি ১৮৫৬বি। এটি একটি দৈত্যকার গ্রহ। প্রতিদিন গ্রহটি মাত্র দেড় ঘণ্টায় সাদা বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। গ্রহটি পৃথিবী থেকে ৮১ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। গ্রহটির তাপমাত্রা মাইনাস ১২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা মাইনাস ৮৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের  মিড-ইনফ্রারেড প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে গ্রহটির সন্ধান পাওয়া গেছে। সাদা বামন ধরনের একটি মৃত নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে গ্রহটি। পৃথিবী থেকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা সবচেয়ে ঠান্ডা গ্রহ এটি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী মেরি অ্যান লিম্বাচ বলেন, আমরা সবাই কিছুটা অবাক হয়েছি। এই গ্রহ বেশ ঠান্ডা।

এত দিন সবচেয়ে ঠান্ডা এক্সোপ্ল্যানেট হিসেবে পরিচিত ছিল এপসিলন ইন্ডি আব। সেই গ্রহের তাপমাত্রা প্রায় ৩৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নতুন গ্রহটির ভর বৃহস্পতির ভরের চেয়ে ছয় গুণ বেশির কম। এটি প্রতি ১ দশমিক ৪ দিনে একবার সূর্যের মতো একটি নক্ষত্রের অবশিষ্টাংশের কেন্দ্রস্থলকে প্রদক্ষিণ করছে।

ডাব্লিউডি ১৮৫৬বি গ্রহটি এমন এক অঞ্চলে অবস্থিত যেখানে গ্রহকে নক্ষত্র একপর্যায়ে গ্রাস করে ফেলে। আর তাই নক্ষত্রটি গ্রহের উপরে কেমন প্রভাব ফেলে তা জানতে আরও গবেষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহট

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি

বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ১০ গুণ বড় ‘ওয়াস্প-১৮ বি’ নামের দৈত্যকার একটি দূরবর্তী গ্যাসীয় গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে এবারই প্রথম সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই যুগান্তকারী মানচিত্র গ্রহ বিজ্ঞানের একটি বড় পদক্ষেপ। সূর্যের বাইরের অন্য কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র এর আগে তৈরি করা হয়নি। মানচিত্র তৈরির এ কৌশল ব্যবহার করে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত ছয় হাজারের বেশি বহির্গ্রহকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।

বহির্গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক দিনের। সৌরজগতের বাইরের নানা ধরনের গ্রহ দেখা যায়। কিছু গ্রহ আছে যাদের দুষ্টু গ্রহ বলা হয়। এসব গ্রহ কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে না। মহাবিশ্বে অনেকটা স্বাধীনভাবে বা বন্ধনহীনভাবে ভেসে বেড়ায়। নাসার এক্সোপ্ল্যানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ২৮টি বহির্গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। আরও প্রায় আট হাজার বহির্গ্রহ গ্রহের মর্যাদার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, থ্রিডি ইক্লিপস ম্যাপিং কৌশল ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রটি তৈরি করেছেন। এই প্রক্রিয়া স্পেকট্রোস্কোপিক ইক্লিপস ম্যাপিং নামেও পরিচিত। এর আগে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে বহির্গ্রহের টুডি বা দ্বিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন বহির্গ্রহ পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন বলে নতুন ত্রিমাত্রিক মানচিত্র বেশ উপকারী হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আবিষ্কৃত ওয়াস্প-১৮ বি গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উপস্থিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান চ্যালেঞ্জার বলেন, ‘টেলিস্কোপ ও এই নতুন কৌশলটির মাধ্যমে আমরা আমাদের সৌরজগতের প্রতিবেশীদের মতোই বহির্গ্রহকে বোঝার সুযোগ পাব।’

সূত্র: স্পেস ডট কম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি