শেখ হাসিনার প্রতিকৃতিতে জুতাপেটা নিয়ে বিতর্ক, ভিডিও ভাইরাল
Published: 3rd, May 2025 GMT
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফাঁসিতে ঝুলতে থাকা প্রতিকৃতিতে ‘তৌহিদি জনতার’ জুতাপেটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তবে অনেকে এটা একজন সাধারণ নারীর প্রতিকৃতি ভেবে জুতাপেটা সাধারণ নারীদের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা।
শনিবার (৩ মে) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঝুলতে থাকা হাসিনার প্রতিকৃতিতে এ জুতাপেটার মহাউৎসব করা হয় বলে জানা গেছে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন দাঁড়ি-টুপি পরিহিত ব্যক্তি প্রতিকৃতিতে সজোরে জুতাপেটা করছেন এবং আনন্দের করছেন। জুতাপেটার ফলে প্রতিকৃতির পরনে থাকা শাড়ি প্রায় খুলে যাওয়ার অবস্থা হলে তা আবার পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী প্রতিবেদন ও কমিশন বাতিলের দাবিতে মহাসমাবেশ করে হেফাজত ইসলাম। নেটিজেনদের ধারণা, জুতাপেটা করতে দেখা যাওয়া দাঁড়ি-টুপিওয়ালা লোকজন মূলত আজ অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলামের ওই সমাবেশে এসেছিলেন। শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি জানতে পেরেই তারা ক্ষোভ ও ঘৃণা ধরে রাখতে না পেরে জুতাপেটা শুরু করেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১ মে) থেকে হঠাৎ করেই রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ওই প্রতিকৃতিটি দেখা যায়। ‘জাগ্রত জুলাই’ শীর্ষক এক ফাঁসির কাষ্ঠে এক নারীর প্রতিকৃতিকে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখা যায়। ওই প্রতিকৃতির পরনে ছিল জারুল ফুলের রংয়ের নকশা করা শাড়ি ও ব্লাউজ। মুখ ছিল কালো কাপড়ে ঢাকা। ভাইরাল ভিডিওতে জুতাপেটার ফলে শাড়ি খুলে যাওয়ায় দেখা যায়, প্রতিকৃতিটি মূলত ফোমজাতীয় কোন দ্রব্য থেকে তৈরি পুতুল। তবে কে বা কারা এ প্রতিকৃতি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে রেখে যান, তা জানা যায়নি।
জুতা পেটার এ ভাইরাল ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৈরি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। কেউ বলছেন, এটি শেখ হাসিনার বিগত শাসনামলের অপকর্মের প্রতি হেফাজত কর্মীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। আবার প্রতিকৃতিটি শেখ হাসিনার নয়, বরং আজকের হেফাজতের কর্মসূচি ঘিরে আজকেই নারী বিদ্বেষ থেকে নারীর প্রতিকৃতিটি তৈরি করা হয় এবং তাতে জুতা মেরে নারীদের প্রতি ধিক্কার জানানো হয় বলে দাবি করছেন অনেকে।
আনামুল হক সালমান নামের একটি ফেসবুক আইডিতে বলা হয়, ‘গণহত্যাকারী হাসিনার প্রতিকৃতিতে জুতাপেটা করলে সেটা নাকি নারীর প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ! ফ্যাসিস্টের দোসর এসব কথিত মিডিয়ার মিথ্যাচার নিয়ে প্রশ্ন তুললে সেটা নাকি আবার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ! এই ফ্যাসিনাপন্থী কথিত সুশীলদের পরাজিত করার আগ পর্যন্ত এই দেশ কখনো স্বাধীন হবে না!”
ফেসবুকে ইসহাক বিন কাফেলা নামের এক পেজ থেকে বলা হয়, “এইটা স্বৈরাচার হাসিনার প্রতীকী। কয়েকদিন আগেই ঝুলানো হয়েছে। হুজুররা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হাসিনার প্রতীকীকে নিয়ে উল্লাস করছে। অথচ আজ মিডিয়াগুলো দেখাচ্ছে, হুজুররা নারীর প্রতি নাকি এইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করছে! মানে হুজুরদের নারী বিদ্বেষী বানিয়ে দিলো! আমার লিস্টের কতক সুশীল ভাইবোনদেরও সেইম কাজ করতে দেখা গেছে।”
পোস্টে আরো বলা হয়, “এটা আজকের সমাবেশ উদ্দেশ্য করে ঝুলানো না। এটি নারীর প্রতি ক্ষোভের কারণে কেউ ঝুলায়নি। বরং হাসিনার প্রতীকী।”
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সহযোগী অধ্যাপক ড.
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল গংদের বিচারের দাবিতে শহরে মানববন্ধন
ভূমিদস্যু, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যাকারী, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর, পলাতক সাবেক পুলিশের ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল হক, খোরশেদ আলম, মোরশেদ আলম বাবু ও আরিফুর রহমানের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৬ আগষ্ট) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ১৪নং ওয়ার্ডবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় মানববন্ধনে বক্তৃতারা বলেন, আমাদের পৈত্রিক বসতবাড়ি নারায়ণগঞ্জ শহরের ১৪নং ওয়ার্ডস্থ ১৮৫/০১ বি.বি. রোডস্থ ২৭ শতাংশের (৫ তলা) বাড়ী থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা বাড়িতে থাকতে পারছি না। প্রতিবেশী ভূমিদস্যু গং অবৈধ দখলের জন্য পায়তারা করছে কৌশলে।
বিগত আওয়ামী লীগের আমলে পুলিশের ডিআইজি পোস্ট কে পুঁজি করে ভূমিদস্যু, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যাকারী, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর, পলাতক সাবেক পুলিশের ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল হক গং ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোর পূর্বক অনাধিকার প্রবেশ করে আমাদের পৈত্রিক বসতবাড়ি থেকে আমাদের স্ব পরিবারে তাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া সেই সময় আমাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি প্রদান করে ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল গং এর খোরশেদ আলম, মোরশেদ আলম বাবু, আরিফুর রহমান প্রমুখ।
আমরা এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা জজ আদালতে দেওয়ানী মামলা নং২৬৮/২১ এবং ৪৫৪/২৩ দুটি রুজু করার পরও নিজ বাড়ীতে ফিরতে পারছি না। বর্তমানে মামলা দুটি বিচারাধীন রয়েছে। তাছাড়া উপরোক্ত ভূমিদস্যু গং বিভিন্ন সময় আমাদের নিরীহ পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট কারন উল্লেখ করে থানায় জিডি ও অভিযোগ দায়ের করে হয়রানি করে আসছে।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী নিরীহ পরিবারের দাবী ভূমিদস্যুদের অবৈধ দখল থেকে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র্যাব-১১, সেনাবাহিনী ও গণমাধ্যমের সহযোগিতায় আমাদের পৈত্রিক বাড়ি দখল মুক্ত করা। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এসময় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, নালিশা বাড়ির প্রকৃত মালিক মৃত হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া চাঁন মিয়ার পুত্র মোমেনুর রহমান, আমিনুর রহমান, মামুনুর রহমান, কন্যা শামীমা কামাল রানী, ফাতেমা ইয়াসমিন ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর কৃষক দলের ক্রীড়া সম্পাদক মো. রানা সহ ১৪নং ওয়ার্ডের জনসাধারণ।
জানা গেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৬ হাজার কোটিরও বেশি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল হক। অন্যের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে তার ওপরে। সম্প্রতি মোজাম্মেল হক, তার স্ত্রী ও সন্তানের নামে থাকা জমি ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।