স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফাঁসিতে ঝুলতে থাকা প্রতিকৃতিতে ‘তৌহিদি জনতার’ জুতাপেটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তবে অনেকে এটা একজন সাধারণ নারীর প্রতিকৃতি ভেবে জুতাপেটা সাধারণ নারীদের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা।

শনিবার (৩ মে) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঝুলতে থাকা হাসিনার প্রতিকৃতিতে এ জুতাপেটার মহাউৎসব করা হয় বলে জানা গেছে।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন দাঁড়ি-টুপি পরিহিত ব্যক্তি প্রতিকৃতিতে সজোরে জুতাপেটা করছেন এবং আনন্দের করছেন। জুতাপেটার ফলে প্রতিকৃতির পরনে থাকা শাড়ি প্রায় খুলে যাওয়ার অবস্থা হলে তা আবার পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের

জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা

শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী প্রতিবেদন ও কমিশন বাতিলের দাবিতে মহাসমাবেশ করে হেফাজত ইসলাম। নেটিজেনদের ধারণা, জুতাপেটা করতে দেখা যাওয়া দাঁড়ি-টুপিওয়ালা লোকজন মূলত আজ অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলামের ওই সমাবেশে এসেছিলেন। শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি জানতে পেরেই তারা ক্ষোভ ও ঘৃণা ধরে রাখতে না পেরে জুতাপেটা শুরু করেন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১ মে) থেকে হঠাৎ করেই রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ওই প্রতিকৃতিটি দেখা যায়। ‘জাগ্রত জুলাই’ শীর্ষক এক ফাঁসির কাষ্ঠে এক নারীর প্রতিকৃতিকে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখা যায়। ওই প্রতিকৃতির পরনে ছিল জারুল ফুলের রংয়ের নকশা করা শাড়ি ও ব্লাউজ। মুখ ছিল কালো কাপড়ে ঢাকা। ভাইরাল ভিডিওতে জুতাপেটার ফলে শাড়ি খুলে যাওয়ায় দেখা যায়, প্রতিকৃতিটি মূলত ফোমজাতীয় কোন দ্রব্য থেকে তৈরি পুতুল। তবে কে বা কারা এ প্রতিকৃতি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে রেখে যান, তা জানা যায়নি।

জুতা পেটার এ ভাইরাল ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৈরি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। কেউ বলছেন, এটি শেখ হাসিনার বিগত শাসনামলের অপকর্মের প্রতি হেফাজত কর্মীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। আবার প্রতিকৃতিটি শেখ হাসিনার নয়, বরং আজকের হেফাজতের কর্মসূচি ঘিরে আজকেই নারী বিদ্বেষ থেকে নারীর প্রতিকৃতিটি তৈরি করা হয় এবং তাতে জুতা মেরে নারীদের প্রতি ধিক্কার জানানো হয় বলে দাবি করছেন অনেকে।

আনামুল হক সালমান নামের একটি ফেসবুক আইডিতে বলা হয়, ‘গণহত্যাকারী হাসিনার প্রতিকৃতিতে জুতাপেটা করলে সেটা নাকি নারীর প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ! ফ্যাসিস্টের দোসর এসব কথিত মিডিয়ার মিথ্যাচার নিয়ে প্রশ্ন তুললে সেটা নাকি আবার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ! এই ফ্যাসিনাপন্থী কথিত সুশীলদের পরাজিত করার আগ পর্যন্ত এই দেশ কখনো স্বাধীন হবে না!”

ফেসবুকে ইসহাক বিন কাফেলা নামের এক পেজ থেকে বলা হয়, “এইটা স্বৈরাচার হাসিনার প্রতীকী। কয়েকদিন আগেই ঝুলানো হয়েছে। হুজুররা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হাসিনার প্রতীকীকে নিয়ে উল্লাস করছে। অথচ আজ মিডিয়াগুলো দেখাচ্ছে, হুজুররা নারীর প্রতি নাকি এইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করছে! মানে হুজুরদের নারী বিদ্বেষী বানিয়ে দিলো! আমার লিস্টের কতক সুশীল ভাইবোনদেরও সেইম কাজ করতে দেখা গেছে।”

পোস্টে আরো বলা হয়, “এটা আজকের সমাবেশ উদ্দেশ্য করে ঝুলানো না। এটি নারীর প্রতি ক্ষোভের কারণে কেউ ঝুলায়নি। বরং হাসিনার প্রতীকী।”

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সহযোগী অধ্যাপক ড.

সাইফুদ্দিন আহমেদকে একাধিকবার মোবাইলে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

আইন মন্ত্রণালয়: ট্রুথ কমিশন গঠনে সরকা‌রি সিদ্ধান্ত হয়নি

ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের বিষয়ে এখনো সরকারি সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) আইন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, সম্প্রতি কিছু কিছু পত্রিকায় ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন সম্পর্কে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার বক্তব্য বিচ্ছিন্নভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভ্রান্তি দূর করার স্বার্থে জানানো যাচ্ছে যে, ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত হয়নি।

আরো পড়ুন:

সাত দিনের মধ্যে নতুন সাইবার আইন কার্যকর: আইন উপদেষ্টা

সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া অনুমোদন

এতে আরো বলা হয়, আইন উপদেষ্টা তার বিভিন্ন সময়ের বক্তব্যেও বলেছেন, এ ধরনের কমিশন গঠনের কথা ভাবা যেতে পারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত গণহত্যার বিচার হওয়ার পর এবং গণঅভ্যুত্থানে পতিত দলটির নেতাদের অনুশোচনা প্রকাশ সাপেক্ষে। তার বক্তব্য ছিল, গণহত্যাকারীরা যে জাতি থেকে বিচ্ছিন্ন ও পরিত্যাজ্য এটি প্রতিষ্ঠার জন্যও এ ধরনের কমিশন গঠনের কথা ভাবা যায়।

আইন উপদেষ্টা তার সর্বশেষ বক্তব্যে বলেছেন, সময়মতো রাজনৈতিক দল, ছাত্রনেতৃত্ব ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে কী করা যায় তা চিন্তা করা হবে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ
  • আইন মন্ত্রণালয়: ট্রুথ কমিশন গঠনে সরকা‌রি সিদ্ধান্ত হয়নি
  • ট্রুথ কমিশন গঠনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি: আইন মন্ত্রণালয়