বিরে রুমা: মদিনার পানির সংকট দূর করেছে যে কুয়া
Published: 4th, May 2025 GMT
মদিনা শহরের ধর্মীয় নিদর্শনগুলোর মধ্যে বিরে রুমা বা রুমা কুয়া একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। এই কুয়াটি শুধু পানির উৎস নয়, বরং ইসলামি ইতিহাসের এক অনন্য অধ্যায়ের সাক্ষী। মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সময়ে মদিনার মুসলিম সম্প্রদায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে পড়েছিল। এই সংকট দূর করতে উসমান ইবনে আফফান (রা.)-এর অবদান এবং তাঁর মহানুভবতা বিরে রুমা কুয়াকে ইসলামের ইতিহাসে একটি গৌরবময় স্থান দিয়েছে।
সে সময় মদিনায় রুমা নামে এক ইহুদির একটি বড় কুয়া ছিল। এই কুয়ার মালিক মুসলিমদের কাছে চড়া মূল্যে পানি বিক্রি করত। এদিকে মুসলিমরা পানির তীব্র সংকটে পড়েছে। এই সংকটের সময় মহানবী (সা.
এই আহ্বান শুনে উসমান (রা.) ইহুদির কাছে কুয়াটি ক্রয়ের প্রস্তাব দেন। প্রথমে সে কুয়াটি বিক্রি করতে রাজি হলো না। পরে উসমান (রা.) অর্ধেক কুয়া ক্রয়ের প্রস্তাব করেন, অর্থাৎ ইহুদি একদিন নিজে পানি নেবে এবং অন্যদিন উসমান (রা.) পানি নেবেন বলে সম্মত হয়। উসমান (রা.) তাঁর নির্ধারিত দিনে মুসলিমদের বিনা মূল্যে পানি বিতরণ শুরু করেন। এতে ইহুদির ব্যবসায় সংকট দেখা দিলে সে পুরো কুয়া বিক্রি করতে সম্মত হয়। উসমান (রা.) ৩৫ হাজার দিরহামের বিনিময়ে পুরো কুয়ার মালিকানা লাভ করেন এবং তা মুসলিমদের জন্য ওয়াকফ করে দেন।
আরও পড়ুনমদিনার ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখছেন হজযাত্রীরা২৬ জুন ২০২৪উসমান (রা.)-এর কাজটি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
বর্তমানে রুমা কুয়াটি সৌদি আরবের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন। কুয়াটি এখনও সক্রিয় এবং এর পানি দিয়ে খেজুরবাগানে সেঁচ দেওয়া হয়। আয়তনে কুয়াটি ৮ মিটার গভীর এবং ৩.৬ মিটার চওড়া। বর্তমানে কুয়ার অবস্থান আকীক উপত্যকার মাঝখানে এবং মসজিদে কিবলাতাইন থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার উত্তরে। কুয়ার চারপাশে একটি বাগান রয়েছে। সৌদি সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় বাগানটিকে পরীক্ষামূলক কৃষি কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
রুমা কুয়ায় যেতে হলে মসজিদে নববি থেকে মানাখা সড়ক ধরে উত্তর দিকে সুলতানা সড়কে যেতে হবে। এই সড়কটি বর্তমানে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক নামে পরিচিত। সেখান থেকে ডান দিকে একটি কালো পাহাড় পড়ে। পাহাড়ের পাশ দিয়ে পশ্চিমমুখী রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলে রুমা কুয়া দেখতে পাওয়া যায়।
রুমা কুয়া শুধু একটি ঐতিহাসিক স্থানই নয়, বরং এটি ইসলামি বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের এক জীবন্ত সাক্ষী, যা মুসলমানদের জন্য গর্ব ও অনুপ্রেরণার উৎস।
আরও পড়ুন মদিনা যাত্রায় মনের কোণে যত কথা২১ জুন ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আজ স্ত্রীকে প্রশংসা করার দিন
দাম্পত্য জীবনে সুখের অন্যতম উপায় হলো সঙ্গীর প্রশংসা করা। প্রশংসা স্বামী-স্ত্রী দুইজনের জন্যই প্রয়োজন। তবে আজকের দিনটি স্পেশালি স্ত্রীদের জন্য। কারণ আজ স্ত্রীকে প্রশংসা করার দিন। ভেবে দেখুন, বিষয়টি কিন্তু মন্দ নয়, তাই স্ত্রীকে প্রশংসা করার সুযোগ হেলায় হারাবেন না।
প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় রোববার ‘ওয়াইফ অ্যাপ্রিসিয়েশন ডে’ পালিত হয়।২০০৬ সালে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে দিবসটি উদযাপিত হয়। তারপর থেকে এটি অনেক দেশে পালিত হয়ে আসছে। জানা যায় যে, স্ত্রীর প্রশংসা দিবসটি মূলত স্ত্রীদের সম্মান জানানোর জন্যই উদযাপন করা হয়।
আরো পড়ুন:
স্ত্রীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার উপকারিতা
১০ বছরের ছেলেকে বিমানবন্দরে রেখেই বেড়াতে যাচ্ছিলেন বাবা-মা, এরপর
প্রশংসা আসে সম্মানবোধ থেকে। যা একটি সম্পর্ককে মজবুত করে তুলতে পারে। অনেকেই আছেন যারা মনে মনে কৃতজ্ঞ থাকলেও মুখে ফুটে বলতে পারেন না। তারা আজকের এই বিশেষ দিবসটি বেছে নিতে পারেন। প্রশংসাসূচক বাক্য বলার মাধ্যমে সহজেই বোঝাতে পারবেন স্ত্রীর প্রতি আপনার ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা।
দিবসটি উদযাপনের জন্য, স্ত্রীর ভালোগুণগুলো উল্লেখ করে তার প্রশংসা করতে পারেন। স্ত্রীকে ফুল উপহার দিতে পারেন। অথবা তার প্রিয় কোনো জায়গায় ঘুরতে যেতে পারেন।
ঢাকা/লিপি