জুলাই আন্দোলন শেষ হয়নি, বিরোধী শক্তি হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে: প্রেস সচিব
Published: 4th, May 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, জুলাই আন্দোলন এখনও শেষ হয়নি। কারণ জুলাই বিরোধী শক্তিগুলো হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি বলেন, “গত নয় মাসে আমি বুঝতে পেরেছি যে জুলাই শেষ নয়। এটি কেবল একটি সময়কাল নয়—এটি একটি ফ্রন্টলাইন, যেটিকে প্রতিদিন রক্ষা করতে হয়।”
শনিবার (৩ এপ্রিল) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লিখেন “যারা জুলাইয়ের বিরোধিতা করেছিল, তারা হারিয়ে যায়নি। তারা দেখছে, অপেক্ষা করছে, হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের দুটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে এটি এক ধরনের যুদ্ধ। একটি দৃষ্টিভঙ্গির অনুসারীরা চায় গণতান্ত্রিক, মুক্ত ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ, অন্যরা চায় লুটেরা, বংশগত, চেতনাবাজি শাসনব্যবস্থা, যা তার দুর্নীতিপরায়ণ অতীতের ছায়া আঁকড়ে ধরে আছে।”
তিনি বলেন, “আর ভুল কোরো না: যখনই তুমি বিশ্রাম নাও, ভাবো যে লড়াই শেষ—তখনই তারা ফিরে আসে—হিংসা নিয়ে, প্রপাগান্ডা নিয়ে, বিষ ছড়িয়ে।”
তিনি আরো বলেন, “তারা অপেক্ষা করে রাস্তাগুলো ফাঁকা হওয়ার, যেন আবার দখল নিতে পারে। কিন্তু আমি শিখেছি, আমাদের কখনো রাস্তাগুলো ছেড়ে দেয়া চলবে না। শুধু বাস্তব রাস্তা নয়, আদর্শের রাস্তাও না।”
তিনি জানান, যেকোনো বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সত্যকে রক্ষা করা।
প্রেস সচিব বলেন, “যদি তুমি সজাগ না থাকো, তাহলে তোমার প্রতিপক্ষ আনন্দের সঙ্গে তাদের কল্পিত সত্য চাপিয়ে দেবে। বিহারিদের ভাগ্যটা দেখো না? হ্যাঁ, কিছু লোক মুক্তিযুদ্ধের সময় দালালি করেছিল। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল গোলাগুলির মাঝে আটকে পড়া—হত্যাকাণ্ডের শিকার, প্রান্তিক ও নিস্তব্ধ করে দেওয়া।”
তিনি আরো বলেন, “জেনেভা ক্যাম্পে জন্ম নেওয়া প্রজন্মগুলো আজ লজ্জায় বড় হয়, এমনকি তাদের নিজেদের গল্প বলার অধিকারও নেই। ‘এটা আমাদের ভবিতব্য হতে পারে না।”
প্রেস সচিব বলেন, “এখান থেকে জীবন আমাকে যেখানে নিয়ে যাক না কেন, একটি জিনিস নিশ্চিত: আমি রাস্তা ছাড়বো না। আমি জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলা থামাবো না।”
“আমি সত্য বলা থামাবো না। ২০০৯ থেকে ২০২৪ এর আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ, অন্ধকার সময় নিয়ে—যেটা ছিল এক ধরনের ডিজিটাল দাসত্ব, দমন ও ভয়ের সময়।”
তিনি বলেন, “নতুন বাংলাদেশের জন্য লড়াই শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি ব্যক্তিগতও। এটি অস্তিত্বের প্রশ্ন। এটি আমার জীবনের বাকি অংশ গঠন করবে। আর আমি এই লড়াইতে হারতে পারি না, হারব না।”
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুরা কারিয়াতে কিয়ামতের ভয়াবহতার বর্ণনা
সুরা কারিয়া (মহাপ্রলয়) পবিত্র কোরআনের ১০১তম সুরা। কিয়ামতকে মহাপ্রলয় বলা হয়েছে, এ জীবনে যাদের সৎকর্মের পাল্লা ভারী হবে, সেদিন তারাই সুখের জীবন লাভ করবে। আর যার পাল্লা হালকা হবে, তার স্থান হবে গনগনে আগুন হাবিয়ায়।
সুরা কারিয়ার অর্থ আবার দেখে নিই
১. মহাপ্রলয়! ২. মহাপ্রলয় কী? ৩. মহাপ্রলয় সম্বন্ধে তুমি কী জান? ৪. সেদিন মানুষ বাতির পোকার মতো বিক্ষিপ্ত হবে। ৫. আর পাহাড়গুলো ধুনিত হবে রঙিন পশমের মতো। ৬. তখন যার পাল্লা ভারী হবে ৭. সে তো পাবে সুখ ও শান্তির জীবন, ৮. কিন্তু যার পাল্লা হালকা হবে ৯. তার জায়গা হবে হাবিয়া। ১০. সেটা কী, তুমি কি তা জান? ১১. (সে) এক গনগনে আগুন।
সুরার মূল বিষয়বস্তু
প্রথমেই আল্লাহ করিয়াহ শব্দটি ব্যবহার করেছেন এবং একটি শব্দেই প্রথম আয়াত শেষ করে দিয়েছেন। এর ফলে প্রশ্ন জাগে এই ‘করিয়াহ’ কী? আল্লাহ বলে দিচ্ছেন পরের আয়াতে। এরপর আবার আল্লাহ প্রশ্ন করে বললেন মহাপ্রলয় সম্বন্ধে তুমি কী জান? করিয়াহ শব্দটি বেশ অর্থবহ। করিয়াহ বলতে বিকট শব্দ বোঝায়, বিরক্তিকর, ভীতিকর, ধ্বংসাত্মক। আল্লাহ সুরার শুরুতে তিনবার (১ম, ২য়, ৩য় আয়াতে) এই শব্দ ব্যবহার করে এর গুরুত্ব তিন গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনবার ফুৎকার দেওয়ার কথা জানা যায়, প্রথম ফুৎকারে কিয়ামত হবে, দ্বিতীয়তে সবাই মারা যাবে, তৃতীয় ফুৎকারে আবার সবাই জেগে উঠবে। এই তিনবার করিয়াহ বলার মাধ্যমে ওই তিন ফুৎকারের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনসুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের বিশেষ ফজিলত০৭ মার্চ ২০২৫চতুর্থ আয়াতে বলা হয়েছে, সেদিন মানুষ বাতির পোকার মতো বিক্ষিপ্ত হবে। তারা এদিক–সেদিক লক্ষ্যহীন ছুটতে থাকবে। এখানে আল্লাহ মানুষ বোঝাতে ‘নাস’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
পঞ্চম আয়াতে আছে, আর পাহাড়গুলো ধুনিত হবে রঙিন পশমের মতো। পাহাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে হালকা হয়ে যাবে যে উড়তে থাকবে। এরপরই ষষ্ঠ আয়াতে আল্লাহ বললেন, তখন যার ওজনের পাল্লা ভারী হবে, সে সুখী জীবন লাভ করবে। অপর দিকে কিন্তু যার পাল্লা হালকা হবে, তার জায়গা হবে হাবিয়া (৮ম ও ৯ম আয়াত)। এখানে হাবিয়াহকে তার মা হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে।
হাবিয়াহ জাহান্নাম ‘মা’ বলা হলো কারণ শিশু তার মায়ের দিকে এমনিতেই, নিজ ইচ্ছাতেই এগিয়ে যায়। তেমনি পাপী মানুষেরাও নিজেরাই তাদের মায়ের (হাবিয়াহ জাহান্নাম) দিকে এগিয়ে যাবে, নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। মা যেমন তার শিশুকে জন্মের আগে পেটের মধ্যে যত্নে রাখে, বড় হলেও বুকে আগলে রাখে, তেমনি হাবিয়াহ জাহান্নামও পাপীদের তার ভেতরে যত্নসহকারে আটকে রাখবে, বের হতে দেবে না। ১০ম আয়াতে সেটা কী, তুমি কি তা জানো? প্রশ্ন করার পর পরের (১১তম) আয়াতে আল্লাহই এর উত্তর দিয়েছেন। তা হলো (সে) এক গনগনে আগুন।
আরও পড়ুনমুসা (আ.)-এর বিয়ের শর্ত১৫ এপ্রিল ২০২৫