বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) খামার ব্যবস্থাপনা শাখার উদ্যোগে ‘বোরো বীজ ধান কর্তন ২০২৫’ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।

রবিবার (৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ বছর ২০০ টন মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাকৃবির প্রধান খামার তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) মো জিয়াউর রহমানের সার্বিক সহযোগীতায় অন্যদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

মো শহীদুল হক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো আব্দুল আলীম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.  হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

প্রধান খামার তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, “চলতি বছর ১৫৯ একর জমিতে বীজ ধান কর্তন করা হবে। এর মধ্যে ব্রি-২৯, ব্রি-৭৮, ব্রি-৮৮, ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, বিনা-১০, বিনা-২৫ ও বিনা-২৮ জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে। এ বছর ২০০ টন মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদিত এসব বীজ ধান বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এবং বিএডিসির মাধ্যমে সারাদেশে সরবরাহ করা হবে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ধান, শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, মুরগিসহ কৃষির প্রতিটি খাতেই উৎপাদন বৃদ্ধি ও গবেষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে কৃষি উন্নয়নের একটি মডেল হিসেবে গড়ে তোলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জমির মালিকানা বিশ্ববিদ্যালয়েরই এবং সেগুলো প্রয়োজন ও পরিকল্পনার ভিত্তিতে বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ বা খামারকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই জমিগুলো কোনো ব্যক্তির জন্য নয়, শুধু শিক্ষা, গবেষণা ও উৎপাদনমুখী কার্যক্রমে ব্যবহৃত হবে।”

তিনি আরো বলেন, “যেসব জমি বা পুকুর বর্তমানে পতিত পড়ে আছে বা গবেষণায় ব্যবহৃত হচ্ছে না, সেগুলো খুব দ্রুত চিহ্নিত করে তালিকাভুক্ত করা হবে। এরপর সেগুলো পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল উৎপাদন ও গবেষণামূলক কার্যক্রমে যুক্ত করা হবে। ব্যক্তিগত স্বার্থে বা বহিরাগতদের অনুকূলে কোনো জমি ব্যবহারের সুযোগ নেই। গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও উৎপাদন—এই তিনটি ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি সর্বোচ্চভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাটজিপিটির স্বাস্থ্য পরামর্শ মানতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে

ওপেনএআইয়ের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি এখন দৈনন্দিন নানা কাজে ব্যবহার করছেন অনেকেই। কেউ আবার চ্যাটজিপিটির কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে থাকেন। তবে সম্প্রতি চ্যাটজিপিটির পরামর্শে দৈনন্দিন খাবার থেকে লবণ প্রায় পুরোপুরি বাদ দিয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাসিন্দা ৬০ বছরের এক ব্যক্তি। এরপর বাধ্য হয়ে হাসপাতালে তিন সপ্তাহ চিকিৎসা নেন তিনি। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, রোগী কয়েক সপ্তাহ দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা থেকে সোডিয়ামের মাত্রা প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনেন। এতে তাঁর শরীরে ‘হাইপোনাট্রেমিয়া’ নামের বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হয়। এর ফলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়।

ওই ব্যক্তির পরিবারের দাবি, চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই তিনি সম্পূর্ণভাবে এআইভিত্তিক হেলথ প্ল্যানের ওপর নির্ভর করেছিলেন। তিন সপ্তাহ হাসপাতালে থাকার পর তিনি সুস্থ হন । ঘটনাটি সম্প্রতি আমেরিকান কলেজ অব ফিজিশিয়ানসের সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, সোডিয়ামের মতো অপরিহার্য খনিজ এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানসম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান ছাড়া এআইয়ের পরামর্শ অনুসরণ করা গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কীভাবে খাবার থেকে সম্পূর্ণভাবে সোডিয়াম ক্লোরাইড বা সাধারণত খাবার লবণ বাদ দেওয়া যায়, তা ওই ব্যক্তি চ্যাটজিপিটিকে জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে চ্যাটজিপিটি তাঁকে বিকল্প হিসেবে সোডিয়াম ব্রোমাইড ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। চ্যাটজিপিটির পরামর্শ মেনে তিনি অনলাইনে সোডিয়াম ব্রোমাইড কিনে প্রায় তিন মাস রান্নায় ব্যবহার করেন। এর ফলে ধীরে ধীরে বিভ্রম, সন্দেহপ্রবণতা, অতিরিক্ত তৃষ্ণা, এমনকি পানি পান করতে অনীহার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এমনকি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় তিনি বিভ্রান্ত ছিলেন এবং পানিকে দূষিত মনে করতেন।

চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর শরীরে ‘ব্রোমাইড টক্সিসিটি’ বা ব্রোমিজম ধরা পড়েছে, যা এখন অত্যন্ত বিরল হলেও একসময় উদ্বেগ, অনিদ্রা ও নানা স্নায়বিক সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো। তাঁর শরীরে ব্রোমিজমের অন্যান্য উপসর্গও দেখা যায়। এর ফলে ত্বকে ব্রণের মতো ফুসকুড়ি এবং ‘চেরি অ্যাঞ্জিওমা’ নামে পরিচিত লাল দাগ দেখা যায়। চিকিৎসায় গুরুত্ব দেওয়া হয় শরীরে পর্যাপ্ত পানি ও ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার ওপর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ তথ্য জানার ক্ষেত্রে এআই কার্যকর হলেও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সিদ্ধান্তে চিকিৎসকের পরামর্শ অপরিহার্য। চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই তাদের শর্তাবলিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছে, ‘আমাদের সেবার আউটপুটকে একমাত্র সত্য বা নির্ভরযোগ্য তথ্য হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয় এবং এটি কখনোই পেশাদার পরামর্শের বিকল্প হতে পারে না। এই সেবা রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসার উদ্দেশ্যে তৈরি করা নয়।’

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ