টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি। আর এ জন্য ব্যবসাবান্ধব এবং দীর্ঘমেয়াদি করনীতিরও বিকল্প নেই। এ ছাড়া দেশের অবকাঠামোসহ সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কর আদায়ও বাড়াতে হবে। এই দুইয়ের সমন্বয় ছাড়া দেশের অগ্রগতি নিশ্চিত হবে না।

গতকাল রোববার ‘অর্থনীতি ও ব্যবসার উন্নয়নে ২০২৫-২৬ বাজেটের রাজস্ববিষয়ক চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর বনানীতে শেরাটন ঢাকায় যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস বাংলাদেশ (আইসিএবি), বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন এফআইসিসিআই এবং জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (জেবিসিসিআই)। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড.

মাসরুর রিয়াজ এবং কর বিশেষজ্ঞ স্নেহাশীষ বড়ুয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, সরকারের নীতি হচ্ছে বাজেট বাস্তবায়নে ঋণনির্ভরতা কমিয়ে আনা। ফলে অতীতের মতো কর ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। রাজস্ব বিভাগের সংস্কারের জন্য যে নীতি হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে এনবিআর নিজে আর কর ছাড় দেবে না। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে সংসদ। এমন গুরুত্বপূর্ণ নীতি সিদ্ধান্ত আসছে বলে জানান তিনি।

ব্যয়ের সঙ্গে রাজস্বের সামঞ্জস্য না থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর বোঝা বইতে হবে– মন্তব্য করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এবার সরকার একটি দায়িত্বশীল বাজেট দিতে চায়, যেখানে অতিরিক্ত ঋণ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার নীতি থাকবে। কর ফাঁকি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি, বাজেটে ব্যবসাবান্ধব সংস্কারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কর সংস্কার ও ব্যয়ের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন অর্থনীতিবিদ মাসরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি কঠিন এক পরীক্ষার মুখোমুখি। বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তার মাঝে দেশেও স্থিতিশীলতা ধরে রাখা চ্যালেঞ্জের। মুদ্রাস্ফীতি এখনও দু্ই অঙ্কের কাছাকাছি, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগও গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ প্রেক্ষাপটে ঋণ ব্যবস্থাপনা, শাসন ব্যবস্থা এবং ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় কাঠামোগত সংস্কারের জোর দেন তিনি।
মাসরুর রিয়াজ বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে দক্ষতা ও স্বচ্ছতার ঘাটতি আছে। ঋণনির্ভর বাজেটের কারণে সরকারের ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ বাড়ছে, যা উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ সংকুচিত করছে। সরকারি বিনিয়োগে স্বচ্ছতা বাড়ানোর পাশাপাশি পুঁজিবাজারকে সক্রিয় করলে তা ব্যাংকনির্ভরতা কমাতে সহায়ক হবে।
স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সাহসী ও বিনিয়োগবান্ধব বাজেট দিতে হবে। তিনি বলেন, কর আদায়ে স্বয়ংক্রিয়করণ, ভ্যাট আধুনিকায়ন এবং বিনিয়োগবান্ধব নীতির বিকল্প নেই। এটা করা গেলে তা স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সাহায্য করবে। 

আলোচনায় এফআইসিসিআই সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে একীভূত কর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, উৎসে কর ও অগ্রহণযোগ্য ব্যয় সীমা কমানো এবং ন্যূনতম কর ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া উচিত। 
আইসিএবি সভাপতি মারিয়া হাওলাদার বলেন, করনীতি হতে হবে এমন, যা আগে থেকে সবাই জানে এবং স্বল্প সময়ে এর পরিবর্তন হবে না। তিনি বলেন, ছয় মাস অন্তর নীতি বদলে ফেলা হলে ব্যবসায়ীরা আগাম পরিকল্পনা করতে পারেন না। 
আলোচনায় অংশ নেন লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের সিইও মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী, মারুবেনি করপোরেশনের কান্ট্রি হেড মানাবু সুগাওয়ারা প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিটি পূজা মণ্ডপে মণ্ডপে পাহারায় থাকবে বিএনপির নেতৃবৃন্দরা : মামুন মাহমুদ

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি জেলা। এই জেলায় সকল ধর্মের মানুষ আমরা একসাথে বসবাস করি।

সেই সুবাদে নারায়ণগঞ্জের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে।  আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবকে সফল করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সব ধরনের সহযোগিতা করবে। জেলার প্রতিটি পূজা মণ্ডপে মণ্ডপে পাহারায় থাকবে বিএনপি'র নেতৃবৃন্দরা। 

পূজা মন্ডপ পরিদর্শনের নামে আমাদের নেতাকর্মীরা যাতে হোন্ডা মোহড়া ও পাহারা এই দুটোই যেন কেউ না দেয়। তার জন্য আমাদের সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আর পূজা মন্ডপে অনেক নারী পূজারীরা অংশগ্রহণ করে থাকে।

তাদের আসা-যাওয়ার পথে কেউ যেন ইভটিজিং না করে। তার জন্য আমাদের নিজস্ব ভলেন্টিয়াররা সজাগ দৃষ্টি রাখবেন। আর তার জন্য মণ্ডপ কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত পরিমাণে আলোর ব্যবস্থা রাখবেন। 

শারদীয় দুর্গোৎসবকে আনন্দময় ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের  মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায়  সিদ্ধিরগঞ্জের গ্রিন গার্ডেন পার্টি সেন্টারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে আযান ও নামাজের সময় অন্তত ৩০ মিনিট আপনারা পূজা অর্চনা খানিক খানের জন্য বিরতি রাখবেন। আপনারা ভিতরে আপনাদের পূজা করবেন কিন্তু ঢাকঢোল, গানবাজনা ও সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখবেন। এই বিষয়টি আপনার বিশেষ দৃষ্টিতে দেখবেন।

অনেক সময় দেখা দেয় এক দিকটা আজান হচ্ছে অন্য দিকটা মন্ডপে ঢাকঢোল বাজানো হচ্ছে। এতে করে একটি সিমপিতি তৈরি হতে পারে। সুতরাং এই জিনিসটা আপনারা বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। 

মতবিনিময় সভায় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ বক্তব্যে তাদের চাহিদা ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন এবং দুর্গোৎসবকে আনন্দময় এবং নিরাপদ করতে মতবিনিময় সভার আয়োজন করায়  বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়কসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানান।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপ্রদ সাহা, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড. মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল বারী ভূঁইয়াসহ জেলা বিএনপিসস, তারাবো, আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ  পৌরসভা বিএনপির নেতৃবৃন্দ  এবং অঙ্গ সংগঠনের জেলা নেতৃবৃন্দ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ