বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন: শ্রমিক লীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৬ নেতা-কর্মীর প্রার্থিতা বাতিল
Published: 5th, May 2025 GMT
বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আসন্ন নির্বাচনে শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ছয় নেতা–কর্মীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে গতকাল রোববার বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে।
যে ছয়জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে, তাঁরা হলেন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ও বগুড়া জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন শেখ হেলাল, সহসভাপতি পদপ্রার্থী ও বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ইব্রাহীম শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী ও জেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি আবদুল গফুর প্রামাণিক, প্রচার সম্পাদক পদপ্রার্থী ও বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন, কার্যকরী সভাপতি পদপ্রার্থী ও শ্রমিক লীগের নেতা আনোয়ার হোসেন এবং ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী ও জেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম।
এর মধ্যে গত শনিবার বিকেলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে জাল স্বাক্ষরের অভিযোগসংক্রান্ত শুনানিতে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন জেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম। আর কার্যকরী সভাপতি প্রার্থী আনোয়ার হোসেনকে আটকের পর পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা।
আনোয়ার হোসেন শ্রমিক লীগের সমর্থক এবং বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং বগুড়া সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি আমিনুল ইসলামের চাচা। আমিনুল ইসলাম বগুড়া বাস মিনিবাস পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকও। ৫ আগস্টের পর একাধিক হত্যা মামলায় আসামি করায় তিনি বর্তমানে আত্মগোপনে আছেন।
আরও পড়ুনশ্রমিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫ নেতার প্রার্থিতা বাতিলে সময় বেঁধে দিল এনসিপি০৩ মে ২০২৫নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও বগুড়া আদালতের কৌঁসুলি আবদুল বাছেদ বলেন, কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জাল করে মনোনয়ন দাখিল করার লিখিত অভিযোগ পেয়ে যাচাই–বাছাই ও শুনানির জন্য শনিবার বিকেলে সশরীর উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। শুনানিতে বেশ কয়েকজন প্রার্থী উপস্থিত না হওয়ায় বিধি মোতাবেক তাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী নজরুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন শুনানিতে হাজির হলেও তাঁরা তাঁদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ খণ্ডন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৬ জনকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে ১১৭ জন বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনবগুড়ায় শ্রমিক লীগ নেতাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ২২ ঘণ্টা আগেএর আগে শ্রমিক লীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নিকট লিখিত আপত্তি দাখিল করেন গণ অধিকার পরিষদের নেতারা। একই দাবি জানিয়ে গত শুক্রবার লিখিত আপত্তি দাখিল করে জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) শ্রমিক উইং। শুক্রবার বিকেলে এনসিপির নেতারা মিছিল নিয়ে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন এবং মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান।
২৩ মে বগুড়া জিলা স্কুলে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ১৩তম ত্রিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৩০টি পদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ৪৭২।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব চ ছ স বক ল গ র ল ইসল ম কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
১২–দলীয় জোটভুক্ত লেবার পার্টি ভেঙে ‘ইউনাইটেড লিবারেল পার্টি’ গঠন
১২–দলীয় জোটের সদস্য লেবার পার্টি বাংলাদেশ থেকে বের হয়ে ‘ইউনাইটেড লিবারেল পার্টি (ইউএলপি)’ নামে একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। জোটের নেতারা দলটিকে স্বাগত জানালেও এভাবে দল ভাঙার সংস্কৃতি দেশের রাজনীতির জন্য ভালো না বলেও মন্তব্য করেছেন।
আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে নতুন এই দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। লেবার পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে এ দল গঠন হয়।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির বড় দুর্ভাগ্য। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নানা কারণে তাঁরা একতার বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পারেন না। এ জন্য শুধু এই দল দায়ী নয়। তাঁর নিজের দল জাতীয় পার্টিও বহু ভাগে বিভক্ত। আরও অনেক রাজনৈতিক দল একই নামে ব্র্যাকেটবন্দী হয়ে ভিন্ন পরিচয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আত্মপ্রকাশ করছে। এটা ভালো কথা নয়।
নতুন দলের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, লেবার পার্টি কয়েকবার ভেঙেছে। তবে এবার নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করায় তিনি বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে এই রাজনীতিবিদ বলেন, এখনো ষড়যন্ত্র বিদ্যমান। নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চলছে। আগামী শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১২ দলের এই জোটের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা নতুন দলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ৫ আগস্ট না এলে এই দলের মতো অনেক দলেরই আত্মপ্রকাশ হতো না। তিনি আশা করেন, নতুন দল রাজনীতির মাঠে নিজের সঠিক অবস্থান তুলে ধরবে।
জুলাই ঘোষণাপত্রের মঞ্চে মোস্তফা জামাল হায়দারের মতো নেতার জায়গা না হওয়ার সমালোচনা করে এহসানুল হুদা বলেন, ফ্যাসিস্টদের দোসর, শেখ হাসিনার ছায়ায় থাকা মানুষদের ঠাঁই হয়েছে। এখানে বৈষম্য করা হয়েছে।
ইউএলপির চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ১২–দলীয় জোটের সঙ্গে আছেন। আগামী দিনে যা–ই হোক, তাঁর দ্বারা অনৈতিক কিছু হবে না। জোটের সিদ্ধান্তের তিনি বাইরে যাবেন না। ১২–দলীয় জোটের মতো তিনিও বিএনপির সঙ্গে থাকবেন।
অনুষ্ঠানে ইউএলপির কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. হুমায়ুন কবির; সহসভাপতি শওকত হোসেন চৌধুরী, ফেরদৌস, মুফতি আবদুল্লাহ; ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. আশরাফুল আলম সৈকতের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ১২–দলীয় জোটের অন্য নেতারাও বক্তব্য দেন।