কক্সবাজারের সাবেক এমপি জাফর আলম ৪ দিনের রিমান্ডে
Published: 5th, May 2025 GMT
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমের (৬৯) চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ সোমবার এই মামলার শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র।
এদিন আসামিকে আদালতে উপস্থিত করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। অন্যদিকে আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল জাফর আলমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো.
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকা হয়। মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করার উদ্দেশে পুলিশের সহায়তায় মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। হামলায় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়।
এর আগে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জাফর আলম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০২৪ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন অংশ নিয়ে হেরে যান তিনি। জাফর আলম ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ছিলেন। ২০১৪ সালে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে জয়ী হন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব ক এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
টিকটকের অ্যালগরিদমের নিয়ন্ত্রণ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে
টিকটকের অ্যালগরিদমের নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকবে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বহুল প্রতীক্ষিত এই চুক্তির অংশ হিসেবে এখন থেকে টিকটকের অ্যালগরিদম নিয়ন্ত্রণ করবে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো। সেই সঙ্গে অ্যাপটির মার্কিন কার্যক্রম পরিচালনায় যে সাত সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ হবে, তার মধ্যে ছয়জন হবেন মার্কিন নাগরিক।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই’ চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে; যদিও বেইজিং এ বিষয়ে এখনো মন্তব্য করেনি।
জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরেই ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটির মার্কিন কার্যক্রম মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের কাছ থেকে সরিয়ে নিতে চাইছিল।
টিকটককে এর আগে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম চালাতে চাইলে অবশ্যই সে দেশের কার্যক্রম বিক্রি করতে হবে, নইলে বন্ধ করে দিতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চারবার সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের সময় পিছিয়েছেন এবং চলতি সপ্তাহের শুরুতে তিনি আবারও সময়সীমা বাড়িয়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত করেছেন।
লেভিট ফক্স নিউজকে বলেন, অ্যাপটির তথ্য ও গোপনীয়তা দেখভাল করবে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি ওরাকল, যে কোম্পানির চেয়ারম্যান বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ল্যারি এলিসন। অ্যালগরিদমও নিয়ন্ত্রণ করবে যুক্তরাষ্ট্র। এসব বিষয়ে ইতিমধ্যেই চুক্তি হয়ে গেছে। এখন কেবল স্বাক্ষর বাকি।
এলিসনের ছেলে ডেভিড এলিসন সম্প্রতি মিডিয়া কোম্পানি প্যারামাউন্ট অধিগ্রহণ করেছেন; এই প্যারামাউন্ট সিবিএস নিউজের মালিক। এতে এলিসন পরিবার সে দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী মিডিয়া পরিবারগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে।
গত শুক্রবার ট্রাম্প জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপে টিকটকের মার্কিন কার্যক্রম নিয়ে চুক্তি তিনি ও সি চিন পিং অনুমোদন করেছেন। তবে বেইজিং থেকে সে বিষয়ে নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে এবং তিনি সির অনুমোদনের জন্য ‘কৃতজ্ঞ’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিকটকের মার্কিন ব্যবসা মার্কিন বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করা হবে।
গতকাল শনিবার চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানায়, ‘টিকটকের বিষয়ে চীনের অবস্থান স্পষ্ট। চীন সরকার প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানায় এবং বাজারনীতির ভিত্তিতে বাণিজ্যিক আলোচনার মাধ্যমে এমন সমাধান স্বাগত জানায়, যে সমাধান চীনের আইন ও বিধিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে এবং চীনের স্বার্থের ভারসাম্য রক্ষা করবে।’
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, আলোচনার ফলাফল নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশায় আছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সি জানিয়েছেন, বেইজিং ‘টিকটক নিয়ে আলোচনা স্বাগত জানায়’। আলোচনায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল মূলত অ্যালগরিদমের মালিকানা, যে অ্যালগরিদমের ভিত্তিতে টিকটক ১৭ কোটি মার্কিন ব্যবহারকারীর কাছে কনটেন্ট পৌঁছে দেয়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে কি নতুন অ্যালগরিদম তৈরি করতে হবে, নাকি তারা বিদ্যমান অ্যালগরিদম ব্যবহার করতে পারবে? কিন্তু ট্রাম্প প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।
প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প টিকটক নিষিদ্ধ করার পক্ষে ছিলেন। তবে তিনি অবস্থান পাল্টান এবং ২০২৪ সালের সফল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তরুণ ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে টিকটক কাজে লাগান।
২০২৪ সালের গোড়ার দিকে কংগ্রেসে পাস হওয়া আইনকে সর্বোচ্চ আদালত সমর্থন করলে টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে, যদি না বাইটড্যান্স তাদের মার্কিন কার্যক্রম বিক্রি করে দেয়। সে সময় অ্যাপটি অল্প সময়ের জন্য বন্ধও হয়েছিল; যদিও পরবর্তীকালে নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা পিছিয়ে দেওয়া হয়।
মার্কিন বিচার বিভাগ আগেই সতর্ক করেছিল, টিকটকের মার্কিন ব্যবহারকারীদের ডেটায় প্রবেশাধিকার ‘অত্যন্ত গভীর ও ব্যাপক’ জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করতে পারে।