মন্দ ঋণ বা বিনিয়োগের লোকসানের বিপরীতে পর্যাপ্ত প্রভিশন বা মূলধন সংরক্ষণ ইস্যুতে সমাধান করতে পারেনি তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে ২০টি। হিসাব বছর শেষ হওয়ার পর নির্ধারিত চার মাসের মধ্যে মাত্র ১৪টি ব্যাংক আর্থিক হিসাব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এ অবস্থার পরও সোমবার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ লেনদেন বাড়ার পর গতকাল মঙ্গলবার দেশের শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর শেয়ারদর বেড়েছে।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ২৭টির বাজারদর বেড়েছে, কমেছে পাঁচটির। অপরিবর্তিত চারটির দর। এতে ব্যাংক খাতের গড় শেয়ারদর বেড়েছে আড়াই শতাংশ। যেখানে ব্যাংক খাতের বাইরে তালিকাভুক্ত ৩২৪ কোম্পানির মধ্যে ২৩৮টি দর হারিয়েছে। বিপরীতে বেড়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ারদর।
অত্যন্ত দুর্বল ব্যাংক গ্লোবাল ইসলামীর শেয়ারদর ৩০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়ে কেনাবেচা হয়েছে ৩ টাকা ৩০ পয়সায়। এ ছাড়া এনআরবি ও সাউথবাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক পৌনে ১০ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদর সাড়ে ৯ শতাংশ বেড়েছে।
এদিন ব্যাংক খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধি প্রধান মূল্য সূচকে সাকল্যে ৩৮ পয়েন্ট যোগ করেছে। তা সত্ত্বেও সূচকটি ১২ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৯৫১ পয়েন্টের নিচে নেমেছে। তবে লেনদেন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার শেয়ার।

গত কয়েকদিনের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বশেষ এক সপ্তাহে ব্যাংক খাতের শেয়ার লেনদেন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। গত রোববার ঢাকার শেয়ারবাজারে ৮১ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। পরদিন  ব্র্যাক ব্যাংকের ১৪৬ কোটি টাকার ব্লক মার্কেটের শেয়ার কেনাবেচাসহ মোট ২২৮ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। গতকাল কেনাবেচা হয়েছে ১৬৪ কোটি টাকার শেয়ার। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ব্যাংক খাতের লেনদেন ছিল ৪৭ থেকে সর্বোচ্চ ৭৪ কোটি টাকা। তার আগের কয়েক সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনের লেনদেন ছিল ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকার মধ্যে।
জানতে চাইলে প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক যেখানে আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত প্রভিশন করতে ব্যর্থ হচ্ছে, এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে না পেরে এখনও হিসাবই চূড়ান্ত করতে পারেনি, তখন শেয়ারদর বৃদ্ধি যৌক্তিক বলে মনে হয় না। তাছাড়া যেসব ব্যাংকের শেয়ারের দর বেশি বেড়েছে, সেগুলো বেশি দুর্বল।
আইডিএলসি সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.

সাইফউদ্দিন সমকালকে বলেন, বেশির ভাগ ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য যেমন দুর্বল, তেমনি শেয়ারগুলোর বাজারদরও কম। তাছাড়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলের পর মালিকানা নিতে অনেকে শেয়ার সংগ্রহ করছে। এটাই দরবৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোরভাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রকৃত অবস্থা প্রকাশে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী, যেসব ব্যাংক প্রভিশনে ‘ডেফারেল’ সুবিধা নিচ্ছে বা যাদের মন্দ ঋণ ১০ শতাংশের বেশি, তারা লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে না। তাছাড়া প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ আর্থিক হিসাবে প্রকাশে চাপ রয়েছে।
এদিকে ব্যাংকের সঙ্গে গতকাল আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতেরও বেশির ভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে। তালিকাভুক্ত ২৩ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫টির দর বেড়েছে, কমেছে চারটির দর।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র র শ য় রদর র ল নদ ন দর ব ড় ছ আর থ ক গতক ল রদর ব

এছাড়াও পড়ুন:

বাঁধন বললেন, ‘প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পেয়েছি’

ঈদে মুক্তি পেয়েছে সানী সানোয়ারের সিনেমা ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’। সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। শুরুতে থ্রিলার সিনেমাটি নিয়ে মানুষের আগ্রহ না থাকলেও ধীরে ধীরে দর্শক টানছে সিনেমাটি। গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোর আয়োজন মেরিল-ক্যাফে লাইভে অতিথি হয়ে এসেছিলেন বাঁধন। সেখানেই নারীপ্রধান সিনেমা নিয়ে কথা বলেন অভিনেত্রী।

বাঁধন বলেন, ‘আমাদের এখানে তো নারীপ্রধান সিনেমা হয়ই না। আর হলেও ঈদে মুক্তি দেবে, এই সাহস করার তো প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের এটা তো পুরুষপ্রধান ইন্ডাস্ট্রি। এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমাদের গণমানুষ যাঁরা আছেন, বেশির ভাগই ভায়োলেন্স সিনেমা পছন্দ করেন...। আমার পর্যবেক্ষণ হলো, যেসব সিনেমায় নারীদের হেয় করে দেখানো হয়, সেসব সিনেমা গ্রহণযোগ্যতা একটু বেশি পায়। এটা আমাদের সমাজব্যবস্থার একটা প্রতিফলন। সেখান থেকে নারীপ্রধান একটা সিনেমা, যেখানে ওই অর্থে নায়ক নেই, আইটেম গান নেই, এমন কোনো অ্যাকশন নেই...যা আছে সেটা বাস্তবসম্মত। সব মিলিয়ে এমন সিনেমা থেকে খুব বেশি প্রত্যাশা করিনি, সে জায়গা থেকে বেশি পেয়েছি।’

আরও পড়ুন‘এশা মার্ডার’, আবারও চমকে দিলেন বাঁধন১৫ জুন ২০২৫

ঈদে প্রায় প্রতিদিনই হলে হলে ঘুরেছেন বাঁধন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ‘একটা জিনিস আমার ভালো লেগেছে, সেটা হলো বাংলাদেশের দর্শক সব ধরনের সিনেমার জন্য তৈরি। এখানে “তাণ্ডব” চলছে, “উৎসব” চলছে আবার “ইনসাফ”ও চলছে। সব সিনেমা কিন্তু আলাদা আলাদা। এই যে দর্শকের বাংলা সিনেমার প্রতি একটা ভালোবাসা, এটা কিন্তু অনেক ইতিবাচক দিক। এখন মূল দায়িত্ব পরিচালক ও প্রযোজকদের। তাঁরা এখন বিভিন্ন ধরনের গল্প নিয়ে এগিয়ে আসবেন।’
একই সঙ্গে কেবল বাণিজ্যের কথা না ভেবে সমাজ পরিবর্তনে অবদান রাখবে, এমন সিনেমা বানানোর আহ্বান জানান বাঁধন।

‘এষা মার্ডার’ সিনেমার পোস্টার থেকে। ফেসবুক থেকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ