রাজশাহীর গুটি আম পাওয়া যাবে ১৫ মে, হিমসাগর ৩০ মে
Published: 7th, May 2025 GMT
রাজশাহীতে গাছ থেকে আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের সময়সূচি ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বুধবার রাজশাহী জেলার আম পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও সংগ্রহবিষয়ক মতবিনিময় সভায় এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।
ঘোষিত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, গুটি আম ১৫ মে থেকে বাজারজাত করা যাবে। ২২ মে থেকে গোপালভোগ, ২৫ মে থেকে রানিপসন্দ ও লক্ষ্মণভোগ, ৩০ মে থেকে হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি, ১০ জুন থেকে ব্যানানা ম্যাংগো ও ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে আম্রপালি ও ফজলি, ৫ জুলাই থেকে বারি আম-৪, ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা, ১৫ জুলাই থেকে গৌড়মতি সংগ্রহ করা যাবে। এ ছাড়া কাটিমন ও বারি আম-১১ সারা বছরই পাকা সাপেক্ষ পাড়া যাবে।
আজকের সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। তিনি ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার ঘোষণা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে সালমা, আম গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান, চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসানসহ আমসংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন।
আরও পড়ুনসাতক্ষীরার গোপালভোগ আম মিলবে ৫ মে, হিমসাগর ২০ মে৩০ এপ্রিল ২০২৫অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে সালমা বলেন, ‘অপরিপক্ব আম যাতে ভোক্তাদের কাছে না যায়, এ জন্যই আমাদের এই ক্যালেন্ডার। জাতের কারণেই আম পাকার তারতম্য হয়। কৃষক ও সব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। নিজেরা আমবাগানগুলোয় ঘুরে দেখেছি। তারপর একটা তালিকা আমরা নির্ধারণ করেছি।’
জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, ‘উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, চাষি ও বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মানুষ যাতে জীবাণুমুক্ত, ফ্রেশ আম পায়, সেই জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। যদি কোনো অসাধু ব্যবসায়ী অপরিপক্ব আম রাসায়নিক দিয়ে পাকিয়ে বাজারজাত করার চেষ্টা করেন, সেই বিষয়টিও আমরা দেখব।’ তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগের কারণে কোথাও যদি নির্ধারিত তারিখের আগে আম পাড়ার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে অনুমতি নিয়ে আগে আম পাড়ার ব্যবস্থা করা যাবে।
আরও পড়ুনজিআই স্বীকৃতির পর নাক ফজলি আম এখন নওগাঁর১৮ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে আম পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও সংগ্রহ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় ম্যাংগো ক্যালেন্ডার ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সেবার বিকেন্দ্রীকরণ, ব্যবস্থাপত্র নিরীক্ষা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণের সুপারিশ
উপজেলা পর্যায়ে সেকেন্ডারি স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করতে হবে। জেলা হাসপাতালগুলোয় বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা চালু করতে হবে, যাতে সেবার বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত হয়। এতে মেডিকেল কলেজ ও জাতীয় ইনস্টিটিউটগুলোর ওপর রোগীর চাপ কমবে। ভৌগোলিক কারণে কেউ বিশেষায়িত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবেন না।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তাতে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংস্কার কমিশনের প্রধান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানের নেতৃত্বে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়।
এতে বলা হয়, প্রতিটি বিভাগীয় সদরে অন্তত একটি পূর্ণাঙ্গ, সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ও বিশ্বমানের টারশিয়ারি সেবা হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা জটিল ও বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য একটি আঞ্চলিক রেফারেল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
এই নিরীক্ষার মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা চিহ্নিত করে সেবার মান উন্নয়ন ও অর্থ অপচয় রোধ করা যাবে। নিরীক্ষার ফলাফল ব্যবহার করে চিকিৎসক ও প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন, অর্থায়ন, পেমেন্ট এবং ক্রয় সিদ্ধান্তে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
কমিশন মনে করে, বাংলাদেশে এই ব্যবস্থা অবিলম্বে চালু করতে হবে। এতে ওষুধ ও ডায়াগনস্টিক ব্যবহারে শৃঙ্খলা আসবে। ওষুধের অপব্যবহার ও অতিরিক্ত খরচ রোধ হবে এবং জবাবদিহিমূলক ও ব্যয়সাশ্রয়ী চিকিৎসা সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।
কমিশনের সুপারিশগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে যেসব সুপারিশ এখনই বাস্তবায়নযোগ্য, তা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সংস্কার প্রতিবেদনে সরকারি হাসপাতালে সেবা বিকেল ৫টা পর্যন্ত করা, বেসরকারি হাসপাতালে সেবামূল্য নির্ধারণ, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ওষুধের কাঁচামাল তৈরি, স্বতন্ত্র স্বাস্থ্য সার্ভিস গঠনসহ ৩২টি সুপারিশ করা হয়েছে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে দুই বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক থেকে নেওয়া