ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র কে এই সোফিয়া
Published: 7th, May 2025 GMT
ভারতীয় সময় আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার পর ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশি খোঁজ হয়েছে যে নারীর, তিনি কর্নেল সোফিয়া কুরেশি। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে ভারতের সরকারি ব্রিফিংয়ে প্রতিরক্ষা বাহিনীর যে দুই নারী অংশ নেন, সোফিয়া কুরেশি তাঁদের একজন। অন্যজন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।
কীভাবে কখন পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’র ঘাঁটি ভারতীয় বাহিনী গুঁড়িয়ে দেয়, সোফিয়া ও ব্যোমিকা তার বিবরণ দেন। সেই থেকে সৃষ্টি কৌতূহলের। এই দুই নারীর পরিচয় জানতে আগ্রহ দেখা যায় সর্বত্র।
কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামরিক যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিকস অভিযান সহায়ক শাখা সিগন্যাল কোরের অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা। একাধিক যুগান্তকারী সাফল্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাঁর নাম।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২০ সালে এক বার্তায় সোফিয়া সম্পর্কে জানিয়েছিল, ২০১৬ সালে তিনি ১৮টি দেশের উপস্থিতিতে সামরিক মহড়া ‘এক্সারসাইজ ফোর্স ১৮’–এ ৪০ সদস্যের ভারতীয় বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তখন তিনি ছিলেন লে.
মহারাষ্ট্রের পুনেতে অনুষ্ঠিত সেই মহড়ায় অংশ নিয়েছিল চীন, জাপান, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ। সেই মহড়ায় অন্য কোনো দেশের নেতৃত্বে কোনো নারী ছিলেন না।
শান্তিরক্ষার কাজে নিযুক্তির অভিজ্ঞতাও রয়েছে সোফিয়ার। ২০০৬ সালে কঙ্গোয় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অভিযানে তিনি সামরিক পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
সোফিয়া কুরেশি ভারতের গুজরাট রাজ্যের বাসিন্দা। বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে এমএ পাস করার পর তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালে অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমি থেকে উত্তীর্ণ হন তিনি। কাউন্টার ইনসার্জেন্সিসহ বহু অভিযানে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সোফিয়ার পরিবারের সম্পর্ক বহুদিনের। সোফিয়ার দাদা ও বাবা দুজনেই সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। সোফিয়ার স্বামীও সেনা কর্মকর্তা। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি অফিসার।
আজ বুধবারের আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে সোফিয়ার সঙ্গী ছিলেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। ব্যোম শব্দের অর্থ মহাশূন্য। ব্যোমিকা নামের অর্থ আকাশকন্যা। আকাশকন্যা যে মহাশূন্য–বিহারী হবেন তাতে আশ্চর্য কী?
ছোট থেকে সেই স্বপ্নই দেখে এসেছেন ব্যোমিকা। স্বপ্ন সার্থকও হয়েছে। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে প্রকৌশলে স্নাতক হয়ে যোগ দেন ভারতীয় বিমানবাহিনীতে। বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার পাইলট হিসেবে কাজে যোগ দিয়ে ২০১৭ সালে উইং কমান্ডার হন।
উঁচু ও ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকায় আড়াই হাজার ঘণ্টারও বেশি ওড়ার অভিজ্ঞতা আছে ব্যোমিকার। পর্বতারোহণও তাঁর শখ। ২০২১ সালে ২১ হাজার ৬৫০ ফুট উঁচু মাউন্ট মনিরং অভিযানে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন শাখার নারী প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছিলেন। ব্যোমিকা ছিলেন তাঁদের অন্যতম।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
শ্বশুরের পেটে ছুরিকাঘাত, মুহূর্তেই বেরিয়ে গেল নাড়িভুঁড়ি
মেহেরপুর গাংনীতে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ্বশুর নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের স্কুলপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম ইলিয়াস হোসেন (৪৪)। তিনি গাড়াবাড়িয়া স্কুলপাড়ার মৃত নেককার আলীর ছেলে। আর জামাইয়ের নাম সবুজ। তিনি একই উপজেলার ষোলটাকা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ময়নাল আলীর ছেলে। ইলিয়াস সম্পর্কে সবুজের চাচা শ্বশুর।
নিহত ইলিয়াসের ভাই ইমদাদুল হক বলেন, সবুজ বাড়িতে এসে শ্যালক আব্দুল্লাহ ও স্ত্রী সালমা খাতুনের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে। পরে ইলিয়াস পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে সবুজ তাকে ছুরিকাঘাত করেন। ছুরি তার পেটে লাগলে মুহূর্তে নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
সবুজের শ্যালক আব্দুল্লাহ জানান, ‘সবুজ মাদকাসক্ত হওয়ায় টাকার জন্য বোনকে প্রায়ই নির্যাতন করে। তিন দিন আগে আমার বোনকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে বোন আমাদের বাড়ি চলে এসেছে। বোনকে নিয়ে যাওয়ার অজুহাতে ভোর আমাদের বাড়ি আসে সবুজ। পরে সকালে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে কোমরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে আমার চাচাকে হত্যা করে সে। আমি ঠেকাতে গেলে আমাকেও আঘাত করেছে। আমি সবুজের ফাঁসি চাই।’
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সবুজকে স্থানীয়রা ধরে একটি ঘরে আটকে রাখেন। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।