বিএনপির চেয়াপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, বাংলাদেশের ৭৫ ভাগ মানুষ এখন নির্বাচন চায়। আর বিলম্ব নয়, এখনই নির্বাচন প্রয়োজন। 

বুধবার (৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় নাগরিক পরিষদের প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, সংস্কারও শেষ পর্যায়ে। এমন সংস্কারে হাত দেবেন না, যে সংস্কার ১/১১ এর মতো আরেকটা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে পারে। নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে দিতে হবে, দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আপনি যদি একটি সুষ্ঠু ভোট করে দিতে পারেন, তাহলে দেশের মানুষ তাদের পছন্দের দলকে ভোট দিয়ে সংসদে সরকার গঠনের সুযোগ দিতে পারবে। সেই সংসদে ৩১ দফা দাবির পূর্ণ বাস্তবায়ন করে দেশ পরিচালনা করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে ‘মানবিক করিডোর’ না দিয়ে রাখাইনকে মানবিক সহায়তা দেন। লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে সুনাম অর্জন করেছে। রাখাইনকে মানবিক করিডোর না দিয়ে, তাদের মানবিকভাবে সহায়তা করার শক্তি বাংলাদেশের আছে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের নেতারা বাংলাদেশের যে সম্পদ লুট করেছে, বর্তমান সরকার এসব সম্পদ উদ্ধার করে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি দ্বীপরাষ্ট্র কিনে দিতে পারেন। কিন্তু, বাংলাদেশে এমন সমস্যা সৃষ্টি করা যাবে না, যেন আমরা আবারও কোনো ষড়যন্ত্রে পড়ে যাই। আবারও যেন আমাদের এই করিডোর নিয়ে আন্দোলন করতে না হয়।

জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, জানতে পারলাম, মানবিক কারণে একটি করিডোর দেওয়া হচ্ছে। ড.

ইউনূস আপনি আমাদের দেশের জন্য সম্মান এনে দিয়েছেন। সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে আপনি এখনো মানুষের মনে আছেন। কিন্তু, কোথাও যেন একটা দাবা খেলা হচ্ছে, কোথাও যেন নির্বাচন নিয়ে একটা চক্রান্ত হচ্ছে, কোথাও যেন আপনাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সে বিষয়ে আপনাকে অবহিত হতেই হবে। আপনার অ্যাডভাইজরদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে।

জাতীয় নাগরিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. সোলায়মান তালুকদারের সঞ্চালনায় এবং ডা. মাইনুল ইসলাম বাদল তালুকদারের সভাপতিত্বে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন—বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুন অর রশিদ, কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট কর ড র

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লার সেই বিএনপিকর্মী ইব্রাহিম মারা গেছেন

ফতুল্লার বিএনপি কর্মী ইব্রাহিম (৫২) মারা গেছেন। সে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ছিলেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীনবস্থায় মারা যান।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে হাজিগঞ্জ জামে মসজিদে নিহতের নামাজের জানাজা শেষে পাঠানটুলি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নিহত ইব্রাহিম ফতুল্লা থানার ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড হাজীগঞ্জের আব্দুল জলিলের পুত্র। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।

জানা যায়,২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে বিএনপির ডাকা মহা সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদলের ব্যানারে সে অংশগ্রহণ করে।

সমাবেশের শেষের দিকে মুল মঞ্চের পেছনের দিকে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা,কর্মীও সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। সে সময় পুলিশ বিএনপি নেতা- কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের কে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

ইব্রাহিম পুলিশের হামলায় মারাত্নক আহত হয়ে রাস্তায় পরে থাকে। সে সময় সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। ঘটনার চারদিন পর তার সহোযোগিরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে খুঁজে পায়। দীর্ঘদিন সহোযোগিরা নিজেদের অর্থায়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর আল বারাকা নামের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা করায়। 

পরবর্তীতে ইব্রাহিমকে নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন হলে বিএনপি নেতা ও শিল্পপতি আবু জাফর আহমেদ  বাবুল তার চিকিৎসার দ্ধায়িত্ব নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পিজি হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানেই রোববার রাতে তিনি মারা যান।

ফতুল্লা ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ পারভেজ মিয়া জানান,নিহত ইব্রাহিম ২০২৩ সালে ২৮ অক্টোবর  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ঘোষিত পল্টন পার্টি অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি ও  ইউনিয়ন যুবদলের সাথে ঢাকায় গিয়েছিলেন । 

সমাবেশ চলাকালে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন টিপু  ও নিহত ইব্রাহিম এবং তিনি সহ আরো নেতা-কর্মীরা পল্টন পার্টি অফিস সংলগ্ন  চায়না টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।  হঠাৎ পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয়। এতে করে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে  পরে।

অতর্কিত হামলায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার  পর  প্রায় চার দিন পর  পত্রিকার নিউজে দেখতে পায় ইব্রাহিম নামে একজন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

সেই সংবাদের পর  তার পরিবারের লোকজন  এবং ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন আলী ঢাকা মেডিকেলে খোঁজ নেওয়ার পরে তারা নিশ্চিত হন যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে থাকা চিকিৎসারতি হচ্ছে তাদের নিখোঁজ  ইব্রাহিম।

ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা শেষ করে তাকে বাসায় আনা হয়। বাসায় আনার পরে উনি আবার অসুস্থ হয়ে পরে। ফলে ৮ নং ওয়ার্ডের সকল নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় পুনরায় তাকে মদনপুর আল বারাকা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় তিন মাস চিকিৎসা  শেষে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পরেন। 

এমতাবস্থায় নাসিক ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক রিপন তাকে দেখতে আসলে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ পায়। প্রকাশিত সংবাদের পর বিএনপি নেতা শিল্পপতি  প্রাইম বাবুল ভাই তার চিকিৎসার দ্ধায়িত্ব নেন। 

বাবুল ভাই নিজে এসে তার দাত্ব নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পিজি হাসপাতালে ভর্তি করান। দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমান ১১ টা ৪০ মিনিটের সময় তিনি ইন্তেকাল করেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ