কাশ্মীরে হামলা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। এই অভিযানের নাম ‘অপারেশন সিন্দুর’ দিয়েছে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে ভারতের সরকারি ব্রিফিংয়ে প্রতিরক্ষা বাহিনীর যে দুই নারী অংশ নেন, সোফিয়া কুরেশি তাদের একজন। অন্যজন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।

কীভাবে কখন পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’র ঘাঁটি ভারতীয় বাহিনী গুঁড়িয়ে দেয়, সোফিয়া ও ব্যোমিকা তার বিবরণ দেন। সেই থেকে দুই নারীর পরিচয় নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয়। 

কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামরিক যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিকস অভিযান সহায়ক শাখা সিগন্যাল কোরের অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা। একাধিক যুগান্তকারী সাফল্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার নাম।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২০ সালে এক বার্তায় সোফিয়া সম্পর্কে জানিয়েছিল, ২০১৬ সালে তিনি ১৮টি দেশের উপস্থিতিতে সামরিক মহড়া ‘এক্সারসাইজ ফোর্স ১৮’–এ ৪০ সদস্যের ভারতীয় বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তখন তিনি ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তা। বহুজাতিক মহড়ার ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম নারী কর্মকর্তা তিনিই।

মহারাষ্ট্রের পুনেতে অনুষ্ঠিত সেই মহড়ায় অংশ নিয়েছিল চীন, জাপান, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ। সেই মহড়ায় অন্য কোনো দেশের নেতৃত্বে কোনো নারী ছিলেন না।

শান্তিরক্ষার কাজে নিযুক্তির অভিজ্ঞতাও রয়েছে সোফিয়ার। ২০০৬ সালে কঙ্গোয় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অভিযানে তিনি সামরিক পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

সোফিয়া কুরেশি ভারতের গুজরাট রাজ্যের বাসিন্দা। বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে এমএ পাস করার পর তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালে অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমি থেকে উত্তীর্ণ হন তিনি। কাউন্টার ইনসার্জেন্সিসহ বহু অভিযানে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সোফিয়ার পরিবারের সম্পর্ক বহুদিনের। সোফিয়ার দাদা ও বাবা দুজনেই সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। সোফিয়ার স্বামীও সেনা কর্মকর্তা। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি অফিসার।

বুধবারের আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে সোফিয়ার সঙ্গী ছিলেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। ব্যোম শব্দের অর্থ মহাশূন্য। ব্যোমিকা নামের অর্থ আকাশকন্যা। আকাশকন্যা যে মহাশূন্য–বিহারী হবেন তাতে আশ্চর্য কী?

ছোট থেকে সেই স্বপ্নই দেখে এসেছেন ব্যোমিকা। স্বপ্ন সার্থকও হয়েছে। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে প্রকৌশলে স্নাতক হয়ে যোগ দেন ভারতীয় বিমানবাহিনীতে। বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার পাইলট হিসেবে কাজে যোগ দিয়ে ২০১৭ সালে উইং কমান্ডার হন।

উঁচু ও ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকায় আড়াই হাজার ঘণ্টারও বেশি ওড়ার অভিজ্ঞতা আছে ব্যোমিকার। পর্বতারোহণও তার শখ। ২০২১ সালে ২১ হাজার ৬৫০ ফুট উঁচু মাউন্ট মনিরং অভিযানে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন শাখার নারী প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছিলেন। ব্যোমিকা ছিলেন তাদের অন্যতম।

সূত্র:এনডিটিভি, বিবিসি

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত কম ন ড র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে না: গঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেছেন, বৃহস্পতিবার ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় গাজীপুর চৌরাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। বিকালেই তিনি গাজীপুর চৌরাস্তায় ফুটপাতে চাঁদাবাজি নিয়ে লাইভ করেছিলেন। সন্ধ্যায় তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। দেশের চাঁদাবাজরা কত নৃশংস ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তার আরেকটি ভয়ংকর দৃষ্টান্ত এটা। এই ন্যক্কারজনক নৃশংস হত্যাকাণ্ড থেকে এটা প্রমাণ হয় যে, ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে দেশ এখন সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের দখলে চলে গেছে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) বাদ জুমআ নগরীর ডিআইটি চত্বর থেকে গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশ সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেক্রেটারি সুলতান মাহমুদের সঞ্চালনায় মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন, নগর সহ-সভাপতি মুহা. নুর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাও. শামসুল আলম, অর্থ সম্পাদক মুহা. ইসমাইল, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক মাও. সাইয়্যেদ রিদওয়ান, সহ প্রচার ও দাওয়া সম্পাদক মোস্তফা তালুকদার প্রমুখ।
 
তিনি আরও বলেন, ফুটপাতে কারা চাঁদাবাজি করে তা সবাই জানে। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা স্পষ্ট। অবিলম্বে এদের গ্রেফতার করতে হবে এবং শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, একের পর এক এরকম হত্যাকাণ্ড, জুলুম করেই যাচ্ছে। অপরদিকে প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। দেশের জনগণ আইনের শাসন পাচ্ছে না। 

নেতৃবৃন্দ হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, একটি মহলের উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের উস্কানিমূলক বক্তব্য দেশ আরও অশান্ত করে তুলছে। প্রকাশ্যে তারা মানুষকে দা, কুড়াল ও চাপাতি দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। এটা কোন সভ্য মানুষের বক্তব্য হতে পারে না। এমন বক্তব্য কেবল উগ্র সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকেই আসতে পারে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ