গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির দাবি
Published: 8th, May 2025 GMT
সংবিধানে গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা, তথ্য জানার অধিকারকে সংবিধানের মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা এবং প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমকে একটি বেতন কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার জন্য আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ‘গণমাধ্যম সংস্কার: সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এসব দাবি জানানো হয়।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশ এর উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
আরো পড়ুন:
‘গুজব রোধে কর্মকর্তাদের বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে হবে’
সাংবাদিকতায় সততা ও দায়িত্ববোধই সবচেয়ে বড় শক্তি: জবি উপাচার্য
ডিআরইউ সহ-সভাপতি গাযী আনোয়ারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য এবং ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম।
আরো বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম ও সিনিয়র সাংবাদিক আসিফ শওকত কল্লোল।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশের সদস্য সচিব মো.
অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর অ্যাপ ট্যাপট্যাপ সেন্ড। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক এমদাদুল হক খান, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ), কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির), আকতারুজ্জামান, আমিনুল হক ভুঁইয়া, সুমন চৌধুরী, মো. সলিম উল্যা (এস. ইউ সেলিম)।
অনুষ্ঠানে ডিআরইউয়ের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
সেমিনারে আরো দাবি জানানো হয়, সব গণমাধ্যমকে মিডিয়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা, চলচ্চিত্রের মতো জাতীয় গণমাধ্যম ও সাংবাদিক পুরস্কার প্রদান করা, স্যাটেলাইট টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইন গণমাধ্যম ডিক্লারেশনের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন আইন প্রণয়ন করে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
সেই সঙ্গে নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করে সাইবার ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে স্টেক হোল্ডারদের রাখা হয়নি। তারা যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ, সেটা আমরা চাই। গত ১৬ বছর গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা ছিল না। বর্তমান সরকারের আমলে যেন সেটা না হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, “বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছেন। সবচেয়ে বেশি ইমেজ সংকটে পড়েছিল পুলিশ বিভাগ, বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্র। বিচারবিভাগ পরিণত হয়েছিল অবিচারের ঘানিতে আর বয়োজ্যেষ্ঠ সম্পাদকদের তৈলাক্তে সম্মানহানিতে পড়েছিল সাংবাদিকরা। এজন্য আমরা নিজেরাই দায়ী ছিলাম। সম্পাদক নিজের সম্মান বিলিয়ে দেওয়ার মানে সাংবাদিক সমাজকে ইমেজ সংকটের মধ্যে ফেলে দেওয়া।”
তিনি বলেন, “বিচার ব্যবস্থা সবচেয়ে কলুষিত করেছিল যে ব্যক্তি সেই নাসিমুল গনিকে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। সেখান থেকে কী আশা করা যায়, এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে কার্যকারিতা হারিয়ে যায়। তখনই সাংবাদিকদের প্রতিবাদ করা উচিত ছিল কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করেননি। আমাদের নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদ এলিট শ্রেণির। কেউ কেউ বলেন নোয়াব নাকি নবাব। আমার দেশ পত্রিকা সেই এলিট থেকে আলাদা, ওই শ্রেণিতে নেই। আমরা গণমানুষের হয়ে থাকতে চাই।”
গণমাধ্যমের ছুটি প্রসঙ্গে এই সম্পাদক বলেন, “সরকারি চাকরিজীবীরা ১০ দিন ছুটি পাবেন ঈদুল আজহায়। আমার ক্ষমতা থাকলে আজই অন্তত ৪দিনের ছুটির ঘোষণা দিয়ে রাখতাম। কিন্তু এ ক্ষমতা আমার নেই। এটা নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদ নামে এলিট শ্রেণি করবে। তবে ঈদের সময় অন্তত ৪দিন ছুটি থাকা দরকার। অনলাইনে যারা ছুটি বিসর্জন দিয়ে কাজ করছেন তাদের উপযুক্ত আর্থিক সুবিধা দিতে হবে।”
তিনি বলেন, “গণমাধ্যম চতুর্থ স্তম্ভ হতে পারেনি। চতুর্থ স্তম্ভ দাবি করার আগে আমাদেরকে মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য একতাবদ্ধ হতে হবে।”
আগামীতে যে সরকার আসবে সেই সরকার যদি এই সংস্কার না মানে তাহলে আমরা কি করব সেই পরিকল্পনা করার আহ্বান জানান তিনি।
ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, “দেশ স্বাধীনের আগে যেমন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ছিল না, স্বাধীনের পরও একই অবস্থা দেখেছি। ’৭৫ সালে সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়ে সাংবাদিকদের বেকার করা হয়েছিল। ’৯০ সালে নির্বাচিত সরকার এসে সাংবাদিকরা কিছুটা স্বাধীনভাবে কাজ করেন; তবে ২০০৬ সালের পর সেই স্বাধীনতা আবারও খর্ব করা হয়, যা চলে ১৬ বছর ধরে। কাজের পরিবেশ ছিল না। এজন্য আমরা গণমাধ্যম সংস্কারে মূল বিষয় তুলে আনার চেষ্টা করেছি, যা ছিল সংবাদপত্র ও সংবাদিকদের স্বাধীনতা। যেখানে সাংবাদিকদের আর্থিক স্বাধীনতা ও কাজের পরিবেশ নিহিত রয়েছে। এটা এমনভাবে করা যেখানে যুদ্ধাবস্থা ছাড়া কেউ এই সুবিধা খর্ব করতে পারবে না।”
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ বলেন, “অনেকেই বলছেন আগেই ভালো ছিলাম। তবে ম্যাজিক্যালি রাতারাতি সব পরিবর্তন হয় না। কিন্তু বিগত ১৬ বছরের মুক্ত গণমাধ্যম দিবস মুক্ত পরিবেশে কেউ পালন করতে পারিনি। সব জায়গায়ই বাধা দেওয়া হয়েছে। কেউ স্বাধীনভাবে লিখতে পারেননি। এখন সেই পরিবেশ নেই, লিখতে পারছেন সবাই, কেউ চোখ রাঙাচ্ছে না। তবে এই পরিবেশ কতদিন রাখতে পারবো সেই নিয়ে ভাবতে হবে।”
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, “একটা সময় ছিল যখন তথ্য চাইতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে। কাউকে আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটক রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সেখান থেকে এখন মুক্ত হয়ে কাজ করছেন সংবাদকর্মীরা। আমরা নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা চাই। মামলা-হুমকি যেন আগামীতে না হয় সে বিষয়েও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।”
তিনি ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য কাজ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, “বিগত ৫৪ বছরে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা সুরক্ষিত হয়নি। নতুন আমলেও সাংবাদিকদের কোনো ধরনের উন্নতি হয়নি। স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়নি, চাকরি ও ওয়েজবোর্ডের নিশ্চয়তাও পাওয়া যায়নি।”
এজন্য সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য তিনি আহ্বান জানান।
তিনি সাংবাদিকদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য গণমাধ্যমকে সংবিধানের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে অন্তর্ভুক্তি ও সব সাংবাদিকদের জন্য অভিন্ন বেতন কাঠামো প্রণয়নের আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ডিআরইউ সহ-সভাপতি গাযী আনোয়ার বলেন, “গণমাধ্যম সংস্কার নিয়ে আমলাবান্ধব সংস্কার কমিটি করা হয়েছে, এটা ঠিক হয়নি। আমরা সংস্কার প্রতিবেদনের উপরে সুপারিশ দিয়েছি তার বাস্তবায়ন হয়নি।”
তাই সাংবাদিকদের নিয়ে আরেকটি সংস্কার কমিটি করার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণম ধ যমক র স ব ধ নত স স ক র কম স ব দপত র ড আরইউ স অন ষ ঠ ন প রণয়ন ক জ কর ব দ কত র জন য ব দ কর পর ব শ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ভেজাল বিদেশি প্রসাধনী বিক্রি, গ্রেপ্তার ১
বিদেশি প্রসাধনীর নামে পুরান ঢাকার লালবাগ ও চকবাজারে নকল এবং ভেজাল প্রসাধনী অনলাইনে পাইকারি-খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকার উপকণ্ঠ কেরানীগঞ্জের পুরাতন ভাড়ালিয়ায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৯ ধরনের নকল ও ভেজাল প্রসাধনী জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিআইডির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন খবরের ভিত্তিতে সিআইডির একটি বিশেষ দল ভেজাল প্রসাধনী সামগ্রী কারখানায় পণ্য উৎপাদন ও মোড়কজাত করার সময় মো. হৃদয় হোসেন (২৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোট ৯ ধরনের ১ হাজার ৭০ প্যাকেট বিভিন্ন রকমের নকল ও ভেজাল প্রসাধনী এবং ২০০টি খালি মোড়ক জব্দ করা হয়। তাঁর বাড়ি কেরানীগঞ্জের আঁটিবাজার এলাকার পুরাতন ভাড়ালিয়ায়। হৃদয়ের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি ভেজাল প্রসাধনী ও মোড়ক উদ্ধার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে।
সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয়ভাবে এসব বিদেশি প্রসাধনী উৎপাদিত হতো, এ বিষয়ে গ্রেপ্তার হৃদয়ের কাছে কোনো কাগজপত্র নেই। উৎপাদিত ভেজাল প্রসাধনী ঢাকার লালবাগ ও চকবাজারের বিভিন্ন অসাধু পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে সরবরাহ করত প্রতারক চক্রটি। এমনকি অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সেই ভেজাল পণ্য সস্তায় কিনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখধাঁধানো বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করতেন।
উদ্ধার ভেজাল পণ্যের মধ্যে রয়েছে ১৪০টি কেম কট থাই, ১৪০টি এল অ্যাভিনিউ হোয়াইটনিং বডি ক্রিম, ১৭০টি অর্গানিক হেয়ারফর অয়েল, ১৪০টি বডি হোয়াইটনিং ক্রিম, ১৪০টি কেম বো হোয়াইটনিং বডি ক্রিম, ১৪০টি অজুফি হোয়াইটনিং বডি ক্রিম, ৬০টি হোয়াইটনিং বডি লোশন, ৫০টি হোয়াইটনিং বডি লোশন, ৯০টি কোরিয়ান ফেয়ার লুক পারমান্যান্ট হোয়াইটনিং বডি লোশন। এ ছাড়া ২০০টি নিউ ফ্রেশ অ্যান্ড হোয়াইট, স্কিন বডি লোশনের মোড়ক।
সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় হোসেন জানান, এসব প্রসাধনী বাংলাদেশে উৎপাদন বা আমদানি হয় না। চক্রের অন্য সদস্যরা বিদেশের লাগেজ পার্টির মাধ্যমে স্যাম্পল এনে তা কপি করেন এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করেন। তাঁদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এসব প্রসাধনী তৈরি করে তিনি লালবাগ ও চকবাজারের অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করতেন। পরে তাঁরা বিদেশি প্রসাধনী বলে স্থানীয় পাইকারি ও খুচরা ক্রেতাদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করেন। এ ছাড়া অনেক গ্রাহক তাঁর কাছ থেকে পণ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করেন।
প্রতারক চক্রের সহযোগীদের শনাক্ত করে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।