দুবাই চেম্বারের অধীন থাকা তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম হলো দুবাই ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার। এই চেম্বারের নতুন আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি কার্যালয়রা রাজধানী ঢাকায় চালু করেছে। দুবাই ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন এই কার্যালয়ের মধ্য দিয়ে চেম্বারটির আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি কার্যালয়ের সংখ্যা বিশ্বজুড়ে ৩৫-এ পৌঁছাল। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি ঢাকায় এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন এই অফিস উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আবদুল্লাহ খাসেইফ আলহামৌদি।

এতে বলা হয়েছে, ‘দুবাই গ্লোবাল’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০টি আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণ এবং বিশ্বজুড়ে তাৎপর্যপূর্ণ ৩০টি বিপণনস্থলে স্বদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্প্রসারণ করার মাধ্যমে দুবাইয়ের অবস্থান দৃঢ় করাই এ উদ্যোগের লক্ষ্য।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ ও দুবাইয়ের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমবর্ধমান এবং আলোচ্য প্রতিনিধি কার্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে তেল ব্যতীত ১৭১ কোটি ডলারের বাণিজ্যিক লেনদেন হয়; আগের বছরে যা ছিল ১৫৮ কোটি ডলার। এ সময়ে প্রবৃদ্ধির হার ৯ শতাংশ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুবাই চেম্বার্সের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মোহাম্মদ আলী রাশেদ লুতাহ বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় ও দ্রুত বর্ধনশীল দেশ, যেখানে দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বিদ্যমান। ঢাকায় আমাদের আন্তর্জাতিক কার্যালয় চালু করা দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী মাইলফলক। এই কার্যালয় দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সহযোগিতা তৈরি, বাণিজ্যিক সম্পর্ক সহজ করা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি দুবাইকে একটি শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে সহায়তা করবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ও দুবাইয়ে অবস্থানরত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে ঢাকার এই আন্তর্জাতিক কার্যালয়। একই সঙ্গে দুবাইয়ে বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য-পরামর্শ, বাণিজ্যিক উপাত্ত ও ব্যবসায়িক মহলে শক্তিশালী নেটওয়ার্কের সন্ধান দিয়ে সহযোগিতা করবে। বৈশ্বিক বাজারের প্রবেশদ্বার হিসেবে দুবাইয়ের ইতিবাচক অবস্থানকে কাজে লাগাবে।

পাশাপাশি নতুন কার্যালয়টি বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করতে চাওয়া দুবাইয়ের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাণিজ্যিক তথ্য-উপাত্ত প্রদান ও ব্যবসায়িক সুযোগ চিহ্নিত করতে সহযোগিতা করবে এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে পরামর্শগত সহায়তা প্রদান করবে। যেন বাংলাদেশের বাজারে তাদের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালিত হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় ক

এছাড়াও পড়ুন:

ইউএনওর বদলির দাবিতে লংমার্চ ছাত্র-জনতার

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাঁর অপসারণ দাবিতে লংমার্চ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-­জনতা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সুনামগঞ্জ জেলা শহর পার্শ্ববর্তী চালবন্দ পয়েন্ট থেকে (বিশ্বম্ভরপুরের সীমানা শুরু হওয়ার পয়েন্ট) এ লংমার্চ শুরু হয়। 
এর আগে ৪ মে একই দাবিতে তারা বিক্ষোভ মিছিল করতে চাইলে ইউএনওর পক্ষ হয়ে বিএনপি সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা করায় বৃহস্পতিবার এ কর্মসূচি দেওয়া হয়। 
বিক্ষোভকারীরা প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কে লং মার্চ করে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সদরে পৌঁছেন আন্দোলনকারীরা। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম। পরে তিনি আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইউএনও অফিসে আলোচনায় বসেন। তিনি ইউএনও মফিজুর রহমানকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রত্যাহার ও হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে কর্মসূচি স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, থানার ওসি মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান আকন্দ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শিল্পী রাণী মোদক প্রমুখ। 
কর্মসূচি চলাকালে সুনামগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমনুদ্দোজা বলেন, আমরা একটি যৌক্তিক দাবি নিয়ে আসছিলাম। শান্তিপুর্ণভাবে পথে দাঁড়িয়েছিলাম, প্রকাশ্যে ইউএনও’র লাঠিয়াল বাহিনী আমাদের ওপর হামলা করে কয়েকজনকে রক্তাক্ত করে। 
ইমনুদ্দোজা আরও বলেন, এখনও মনে হচ্ছে প্রশাসনের চেয়ারগুলোয় আওয়ামী লীগের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে। বিশ্বম্ভরপুরের ইউএনও এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় দোসর। আমাদের একটি দাবি– ‘এই মফিজ হটাও বিশ্বম্ভরপুর বাঁচাও।’
আন্দোলনকারী জনি আহমদ বলেন, আমরা একটি যৌক্তিক আন্দোলনে নেমেছিলাম। কিন্তু ইউএনও গুন্ডাবাহিনী দিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন, এতে আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন। প্রশাসন একবারের জন্যও কোনো খোঁজখবর নেয়নি।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তাদের (আন্দোলনকারীদের) বলেছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব, আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে যেন 
তাঁকে (ইউএনও) এখান থেকে বদলি করা হয়। 
পরে ছাত্রদের বিরুদ্ধে কেউ যেন হামলা বা অন্য কোনোভাবে ঝামেলা না করতে পারে, সেজন্য যারা আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে রয়েছেন, তারা দেখবেন বিষয়টি। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ