এই প্রথম বিশ্বকাপে বাঁশি বাজাবেন বাংলাদেশের দুজন
Published: 8th, May 2025 GMT
ভারতের তামিলনাড়ুতে আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বরে হতে যাচ্ছে অনূর্ধ্ব-২১ হকি বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। যেকোনো পর্যায়ের হকি বিশ্বকাপে এটিই বাংলাদেশের প্রথম অংশগ্রহণ।
টুর্নামেন্টে বাঁশি বাজাবেন বাংলাদেশের দুজন আম্পায়ার। বাংলাদেশের প্রথম আম্পায়ার হিসেবে তাঁরাও হকির কোনো বিশ্বকাপে বাঁশি বাজানোর সুযোগ পাচ্ছেন। ভাগ্যবান সেই দুই আম্পায়ার সেলিম লাকি ও শাহবাজ আহমেদ। বিশ্ব হকি ফেডারেশনের সভাপতি তৈয়ব ই ইকরাম এক চিঠিতে বাংলাদেশের দুই আম্পায়ারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সেলিম লাকি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আম্পায়ারিং করছেন ২০১২ থেকে। সুলতান আজলান শাহ, জার্মানিতে চার জাতি অনূর্ধ্ব-২১ টুর্নামেন্ট, দুটি এশিয়ান গেমস, তিনটি এশিয়া কাপসহ বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ৫০টির বেশি ম্যাচ পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা তাঁর।
তবে এই প্রথম বিশ্বকাপে বাঁশি বাজাবেন ভেবে বেশি রোমাঞ্চিত সেলিম লাকি বলেছেন, ‘যেকোনো পর্যায়ের বিশ্বকাপের এই প্রথম বাঁশি বাজানোর ডাক পেয়েছি। এর চেয়ে বড় আনন্দের কিছু হয় না। টুর্নামেন্টে আমাদের দলও প্রথমবার খেলবে। সবকিছু মিলিয়ে এই সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের হকির জন্য বেশ ইতিবাচক।’
হকির ব্যর্থতা খতিয়ে দেখতে এনএসসির কমিটি২০১৫ থেকে আন্তর্জাতিক ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছেন শাহবাজ আহমেদ। এখন পর্যন্ত ৩৭টি ম্যাচ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরের ম্যাচ করেছেন গত মার্চে ওমানে এফআইএইচ নেশেনস কাপ টুয়ে। গত ডিসেম্বরে ক্রোয়েশিয়ায় ইনডোর বিশ্বকাপে রিজার্ভ আম্পায়ার ছিলেন।
টুর্নামেন্টে আম্পায়ার ছিলেন ১৬ জন। শাহবাজ ছিলেন ১৭তম। প্রয়োজন না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁর যাওয়া হয়নি ক্রোয়েশিয়ায়। তবে এবার যুব বিশ্বকাপে ১৬ জন আম্পায়ারের তালিকায় আছেন শাহবাজ।
সেলিম লাকি ও শাহবাজ আহমেদকে হকি বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং করতে দেখা যাবে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বক প আম প য় র শ হব জ প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
আরচার আলিফের সোনালি হাসি
গায়ে লাল-সবুজের পতাকা জড়িয়ে দাঁড়ান পোডিয়ামে। একটু পর সাউন্ড বক্সে বেজে ওঠে ‘আমার সোনার বাংলা..’। আবেগ ছুঁয়ে যায় আব্দুর রহমান আলিফকে। তাঁর সৌজন্যে সিঙ্গাপুরের আকাশে উড়েছে বাংলাদেশের পতাকা, বেজেছে জাতীয় সংগীত। অনেক দিন পর বাংলাদেশের আরচারি থেকে মিলল সুখবর। এশিয়ান কাপ আরচারির স্টেজ টুতে সোনালি হাসি হেসেছেন ১৯ বছর বয়সী আলিফ। গতকাল বুকিত গমবাক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত পুরুষদের রিকার্ভ এককের ফাইনালে জাপানের মিয়াতা গাকুতোকে ৬-৪ সেট পয়েন্টে হারিয়ে প্রথমবার স্বর্ণপদক জিতেছেন পাবনার এ তীরন্দাজ। বাংলাদেশের দ্বিতীয় আরচার হিসেবে এশিয়ান লেভেলে স্বর্ণ জিতেছেন।
এর আগে সর্বশেষ এশিয়া কাপ আরচারি স্টেজ থ্রিতে স্বর্ণ জিতেছিলেন আমেরিকায় পাড়ি জমানো রোমান সানা। ২০১৯ সালে এ মঞ্চের লেগ-৩ এ বাংলাদেশকে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছিলেন রোমান।
অতীতে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিলেও পদকের মঞ্চে যেতে পারেননি আলিফ। বিশ্বকাপ, এশিয়ান আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপ, এশিয়ান আরচারির গ্রাঁ প্রিঁর মতো আসরে রিকার্ভ এককে বরাবরই হতাশ হওয়া আলিফ শুক্রবার ফাইনালে স্নায়ুর লড়াইয়ে হাসেন শেষ হাসি। অথচ জাপানের গাকুতোর বিপক্ষে প্রথম দুই সেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানো আলিফের জয়টি মনে হয়েছিল সময়ের অপেক্ষা। প্রথম ও দ্বিতীয় সেট জিতে নেন ২৮-২৭, ২৯-২৮ ব্যবধানে। কিন্তু পরের দুই সেটে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানো জাপানের প্রতিযোগীর কাছে আলিফ হেরে যান ২৮-২৭, ২৭-২৬ পয়েন্টে। পঞ্চম সেটে গিয়ে ছন্দে ফেরা এ তীরন্দাজ ২৯-২৬ পয়েন্টে করেন বাজিমাত। তাঁর সঙ্গে সিঙ্গাপুরে থাকা বাংলাদেশ দলের বাকিরাও উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন।
২০১৮ সালে বিকেএসপিতে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া আলিফ তখনও জানতেন না তীর-ধনুক হাতে নিবেন। কারণ আগে আরচারি খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না তাঁর। জাতীয় দলের সঙ্গে থাকলেও সবসময় আড়ালে পড়ে ছিলেন। রোমান সানার পর রিকার্ভ ইভেন্টে বড় তারকা হয়ে উঠেছিলেন হাকিম আহমেদ রুবেল। তিনিও যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমালে আলোয় আসেন সাগর ইসলাম। কিন্তু তিনি এই আসরে ব্যর্থ হলে আলিফ একাই হাল ধরেন রিকার্ভ পুরুষ ইভেন্টে। স্বর্ণ জয়ের অনুভূতি এভাবেই প্রকাশ করেন এ তীরন্দাজ, ‘অনুভূতিটা অন্যরকম। এই প্রথমবার আমি বিদেশে আমার দেশের জাতীয় সংগীত বাজাতে পেরেছি। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এটা আমার প্রথম স্বর্ণ।’
এখানেই থেমে থাকতে চান না আলিফ। এইচএসসি পরীক্ষার্থী আলিফের চাওয়া বেশি বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা, ‘সামনে আমার লক্ষ্য ২০২৮ অলিম্পিকে মেডেল নিয়ে আসা। সেই ধারাবাহিকতায় অনুশীলন করছি। সুযোগ-সুবিধা ভালো হচ্ছে। বেশি ম্যাচ খেললে আমাদের র্যাঙ্কিং উন্নতি হবে এবং আমরা টিমসহ অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করতে পারব। ফেডারেশন বা সরকারের কাছে চাওয়া যেন সব গেমসে অংশ নিতে পারি। আন্তর্জাতিক আঙিনায় বেশি খেললে অলিম্পিকে সরাসরি কোয়ালিফাই করাটা সহজ হয়ে যাবে।’