ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছেন ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দর শেবাগ। তাঁর দাবি, সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে পাকিস্তানই যুদ্ধের পথে হেঁটেছে। শেবাগ আরও বলেছেন, ভারতের সামরিক বাহিনী এমন জবাব দেবে যে পাকিস্তান কখনো ভুলতে পারবে না।

আরও পড়ুনভারত–পাকিস্তান সংঘাত: পিএসএল সরিয়ে নেওয়া হলো আরব আমিরাতে২ ঘণ্টা আগে

শেবাগের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডলে গতকাল রাতে লেখা হয়, ‘পাকিস্তান যুদ্ধ বেছে নিয়েছে যখন তাদের চুপ করে থাকার সুযোগ ছিল। সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তাদের নিয়ে অনেক কথাও তারা বলে। আমাদের বাহিনী সবচেয়ে উপযুক্ত জবাবই দেবে, এমন জবাব দেবে যেটা পাকিস্তান কখনো ভুলতে পারবে না।’

ভারতের জম্মু, পাঠানকোট ও উধামপুরে সামরিক স্থাপনায় গতকাল মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায় পাকিস্তান। দেশটির সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, জম্মু বিমানবন্দরে একটি ড্রোন আঘাত হেনেছে। এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করে কিছু মিসাইল ও ড্রোন নিষ্ক্রিয় করতে পেরেছে ভারত। দুটি আত্মঘাতী ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে জম্মুর পুঞ্চ জেলায়।

আরও পড়ুনভারত-পাকিস্তান সংঘাত: আইপিএলের ভাগ্যে কী আছে১ ঘণ্টা আগে

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানো যেসব ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে, সেগুলো ভারতের। ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, গত বুধবার রাতে তাদের বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে পাকিস্তানের হামলার জবাবে ড্রোন হামলা করা হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় মিসাইল আক্রমণ করে ভারত। গত এপ্রিলে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জবাবে মিসাইল আক্রমণ করা হয় বলে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

ভারতের সাবেক ক্রিকেটার আম্বাতি রাইডু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর এক্স হ্যান্ডলে এই সংঘাত নিয়ে বেশ কয়েকটি পোস্ট করেছেন। মহাত্মা গান্ধীর একটি বাণীসহ শান্তির আহ্বান জানিয়ে তাঁর একটি পোস্টে লেখা হয়, ‘চোখের বদলে চোখ গোটা পৃথিবীকে অন্ধ বানিয়ে দেয়। সবাই মনে রাখি—এটা দুর্বলতা নয় বরং জ্ঞানের প্রকাশ। ন্যায়বিচারকে সমুন্নত রাখতেই হবে তবে মানবিকতাও ভোলা যাবে না। আমরা দৃঢ়ভাবে ভালোবাসতে পারি এবং হৃদয়ে ভালোবাসা ধারণ করতে পারি। দেশপ্রেম ও শান্তির অবস্থান পাশাপাশি।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় পার্টির সম্মেলন কাল, ইসির প্রতিনিধি চেয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে

আগামীকাল শনিবার জাতীয় পার্টির যে সম্মেলন হবে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) অবহিত করে প্রতিনিধি পাঠানোর আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জি এম কাদেরবিরোধী অংশের প্রধান নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আদালতের আদেশ ও গঠনতন্ত্র মোতাবেক এই কাউন্সিল আয়োজন করেছি। নির্বাচন কমিশনকে আমরা অবহিত করেছি এবং কাউন্সিলে তাদের প্রতিনিধি আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’

কাউন্সিল উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে আজ শুক্রবার সকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এ কথা বলেন।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘এই কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে আমরা জাতীয় পার্টিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। কাউন্সিল করে আমরা গঠনতন্ত্রের বিতর্কিত ধারা বাতিল করে দেব। কোনো একক নেতৃত্বে নয়, জাতীয় পার্টি চলবে যৌথ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে।’

গত ৩০ জুলাই জি এম কাদেরের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞার পর আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত করেছে জি এম কাদেরের বিরোধী অংশ। এরপর তিনি শনিবার দলের সম্মেলন আহ্বান করেন।

এর উল্লেখ করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আগামীকাল শনিবার জাতীয় পার্টির সম্মেলন হবে ঐতিহাসিক। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলের মধ্যে দীর্ঘদিনের যে বিভেদ রয়েছে, সে বিভেদ শেষ করে দিয়ে বৃহত্তর ঐক্য করে পল্লিবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের জাতীয় পার্টির নবযাত্রা শুরু হবে। এই কাউন্সিলে সারা দেশ থেকে জাতীয় পার্টির কয়েক হাজার কাউন্সিলর ও ডেলিগেট অংশ নেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির কো–চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশের মানুষ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তনের প্রত্যাশা দেখেছিল, সেই প্রত্যাশাকে বাস্তবতায় রূপ দিতে জাতীয় পার্টি নতুন অভিযাত্রায় নেমেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক। তিনি বলেন, ৩০ জুলাই ২০২৫ তারিখে ঢাকার একটি নিম্ন আদালতের আদেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। আদালতের এই আদেশের ফলে পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম এক অনিশ্চয়তা ও স্থবিরতার মুখে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচন কমিশনের সময়সীমার বিধিবিধান এবং জাতীয় পার্টির মতো একটি বৃহৎ ও জনগণনির্ভর রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্বশূন্য বা স্থবির থাকা কোনোভাবেই দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পক্ষে সহায়ক নয়। এই বিবেচনায় দলীয় গঠনতন্ত্রের ২০(২)(খ) ধারা অনুযায়ী যথাযথ সাংগঠনিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

মুজিবুল হক বলেন, এই ধারার ক্ষমতাবলে ৫ আগস্ট জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম সভা হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় যে দলকে সাংগঠনিক স্থবিরতা থেকে মুক্ত করে গণতন্ত্র, গঠনতন্ত্র এবং নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষায় অতি দ্রুত জাতীয় কাউন্সিল আহ্বান করা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় কাউন্সিল সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা এবং জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা জরুরি।

মুজিবুল হক আরও বলেন, উপরন্তু দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর মধ্যে যে আশাবাদ, উদ্দীপনা এবং পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা জন্ম নিয়েছে, সেটা বাস্তবায়নে এটি (কাউন্সিল) সময়োচিত ও আবশ্যক পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জাতীয় পার্টি আবারও প্রমাণ করেছে, এই দল কেবল ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি, একটি আদর্শভিত্তিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যখন হতাশা, বিভ্রান্তি ও দিশাহারা ভাব বিরাজ করছে, তখন জাতীয় পার্টি ঐক্যের বার্তা নিয়ে দেশবাসীর সামনে নতুন করে আত্মপ্রকাশ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কো–চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন জাহান, শফিকুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভুইয়া, আরিফুর রহমান খান, সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম, জিয়াউল হক মৃধা, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সরদার শাহজাহান, খান মো. ইসরাফিল, ইয়াকুব হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন, শফিকুল ইসলাম, জামাল রানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ