সন্দেহপ্রবণ নারী চরিত্রে এই প্রথম অভিনয়
Published: 9th, May 2025 GMT
নিশাত প্রিয়ম। অভিনেত্রী ও মডেল। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বিঞ্জ-এ মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘ফ্যাঁকড়া’। এতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা, বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বুলবুল ফাহিম
প্রথমেই ‘ফ্যাঁকড়া’ নিয়ে জানতে চাই
এই সিরিজের গল্পটা দুর্দান্ত। সিরিজটি নিয়ে শুরু থেকে এক্সাইটেড ছিলাম। ফাইনালি সিরিজটি মুক্তি পেল। আমার মনে হয়, যারা সিরিজটি দেখবেন, সবার ভালো লাগবে।
এই সিরিজে দর্শক আপনাকে কীভাবে পাচ্ছেন?
এই সিরিজে আমার চরিত্রের নাম অ্যানি। সে একজন সন্দেহপ্রবণ নারী। স্বামীর কোনো বিষয়ই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারে না। এ ধরনের সন্দেহপ্রবণ নারী চরিত্রে এই প্রথম অভিনয়। সে কারণে চরিত্রটি আমার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল।
গল্পে এমন আর কী আছে, যা দর্শক মনোযোগ ধরে রাখবে?
আমি তো এখন পর্যন্ত অনেক ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি কিন্তু ‘ফ্যাঁকড়া’ আমার কাছে বিশেষ। কারণ, এই সিরিজে অনেক অ্যালিমেন্ট আছে। একে শুধু থ্রিলার বলা যাবে না। এখানে আছে মানবিকতা, ভালোবাসা, আত্মত্যাগ, প্রতিশোধ এবং অপরাধ জগতের অনেক বিষয়।
‘অদৃশ্য’ সিরিজের অনেক পরে ‘ফ্যাঁকড়া’য় কাজ করলেন। অনেকের তুলনায় কম.
..
আমার সর্বশেষ সিরিজ হলো ‘অদৃশ্য’। সেটি মুক্তি পেয়েছে ২০১৩ সালে। মাঝে কিছুটা গ্যাপ। আমি মূলত গল্পপ্রধান কাজ বেশি করি। সেটি টিভি, ইউটিউব কিংবা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হোক। ফলে আমার কাজের সংখ্যা কম। সংখ্যা আমার কাছে কোনো বিষয় নয়। আমি চাই ভালো কাজ। সেটি করে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
ভিউর জন্য অনেকে অস্থির। ভিউ বিষয়টা আপনি কীভাবে দেখেন?
অবশ্যই ভিউর দরকার আছে। তবে সস্তা বিষয় নিয়ে ভিউর পেছনে দৌড়ানোর মানুষ আমি নই। আমি চাই ভালো কাজ করতে, যেটি মানুষের সুস্থ বিনোদনের খোরাক হবে। আমার বিশ্বাস, ভালো কনটেন্ট হলে সেটির ভিউ আপনাআপনি হয়ে যাবে। সুতরাং বাজে কিছু দিয়ে ভিউর পেছনে ছুটতে চাই না।
অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে মাঝেমধ্যেই সিন্ডিকেট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়....
সিন্ডিকেট তো আছেই। এ ক্ষেত্রে এটি সিন্ডিকেট, অন্যদিকে একটি টিমের সঙ্গে কাজ করতে করতে তারা হয়তো বন্ধু হয়ে গেল। তারা হয়তো ব্যাক টু ব্যাক একসঙ্গে কাজ করছে। সেই জায়গা থেকে এটি নিয়ে অনেকে কথা তোলেন। সেই জায়গা থেকে অনেক শিল্পী কাজ কম পাচ্ছে। এটি একদিক থেকে ভালো না। আবার যারা টিম হয়ে ভালো কাজ করছে, সেদিকটা ভালো। যেহেতু আমার কাজের পরিমাণ কম, তাই এ বিষয়টি আমি ফেসও কম করি।
‘সিটি লাইফ’ নাটকের কাজ কি শেষ?
না। এটি আমার খুব পছন্দের এক কাজ। এটি এখনও করে যাচ্ছি। প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল। এই সিরিয়াল থেকে দর্শকের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি, এখনও পাচ্ছি।
সিনেমায় অভিনয় নিয়ে কিছু ভাবছেন?
সব অভিনয়শিল্পীরই সিনেমায় অভিনয়ের স্বপ্ন থাকে। আমারও আছে। আমি এ পর্যন্ত অনেক সিনেমার স্ক্রিপ্ট পেয়েছি। এমন কোনো গল্প এখনও পাইনি, যে গল্পটা পড়ে মনে হয়েছে আমি এ সিনেমাটি করতে চাই। গল্প পছন্দ হলে অবশ্যই বড়পর্দায় কাজ করব। সে অপেক্ষায় আছি।
নতুন কোনো ওয়েব সিরিজ বা নাটকে দেখা যাবে কী?
আমার কাছে তো ঈদের গিফট ‘ফ্যাঁকড়া’। এ ছাড়া অল্পকিছু কাজ হাতে রয়েছে। সেগুলোর শুটিংও শুরু করেছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এই স র জ ক জ কর আম র ক চর ত র
এছাড়াও পড়ুন:
অযত্নে অচল ১৮ আইসিইউ শয্যা
চট্টগ্রামে আবার চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস। ঈদুল আজহার পর হঠাৎ করে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। ইতোমধ্যে দু’জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু শহর-গ্রামে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি কম। অনেক হাসপাতালে কিটের অভাবে হচ্ছে না পরীক্ষা। এ নিয়ে প্রিয় চট্টগ্রামের বিশেষ আয়োজন
নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) কয়েকটি শয্যা নড়বড়ে হওয়ায় রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। মরিচা পড়ে যায় শয্যার লৌহদণ্ডে। কোনোটির স্ক্রু ছিল ভাঙা, অনেক শয্যার চাকা থেকে বেশির ভাগ যন্ত্রপাতিই ছিল নষ্ট। দীর্ঘদিন ধরে অকেজো পড়ে ছিল আইসিইউর গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম বাইপ্যাপ মেশিন, হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা, ইনফিউশন পাম্প, কার্ডিয়াক মনিটর, সিরিঞ্জ পাম্প। এখনও শয্যার সঙ্গে নেই ভেন্টিলেটর।
অযত্ন-অবহেলায় করোনা চিকিৎসার জন্য ‘ডেডিকেটেড’ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ১৮ আইসিইউ শয্যার অবস্থা নাজুক। বর্তমানে করোনা চিকিৎসার জন্য শয্যা ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি সচলের চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। এটা সময়সাপেক্ষ হওয়ায় করোনা পরীক্ষা ও যথাযথ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। করোনা ইউনিটে ২২ জন চিকিৎসকের পদও এখন খালি।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবস্থাও তেমন ভালো নয়। প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর থেকে সরকারিভাবে হাসপাতালটিতে করোনা পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও সেটা হয়নি। এখন পরীক্ষা হলেও রয়েছে কিট ও জনবল সংকট।
আবার বন্দরনগর চট্টগ্রামে চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস (কভিড)। হঠাৎ করেই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এরই মধ্যে দু’জনের মৃত্যুতে কিছুটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এতে নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য প্রশাসন। তবে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত করা যায়নি করোনা রোগীদের চিকিৎসা। চট্টগ্রামে আসেনি চাহিদামতো কিট। বর্তমানে প্রতিদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও করোনা ডেডিকেটেড জেনারেল হাসপাতালে অনেক রোগী করোনা পরীক্ষা করাতে এলেও কিট সংকটের কারণে তারা ফিরে যাচ্ছেন। জেনারেল হাসপাতালে পর্যাপ্ত কিট না থাকায় কয়েকদিন আগে চমেক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৫০টি কিট এনে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালটি করোনা রোগীদের জন্য ‘ডেডিকেটেড’ বলা হলেও এটি এখনও করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। কয়েকদিন আগে চমেক হাসপাতাল থেকে একটি ভেন্টিলেটর ধার করে এনেছে হাসপাতালটি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক, কিটের চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও আশানুরূপ সাড়া মেলেনি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে ছিল ১৮ আইসিইউ শয্যা। অনেক চিকিৎসা যন্ত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। বেশির ভাগ যন্ত্রই সচল অবস্থায় নেই। করোনা ইউনিটের জন্য যে ২২ জন চিকিৎসককে এই হাসপাতালে সংযুক্তিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তারাও অন্য জায়গায় বদলি হয়ে গেছেন। এখন ‘শূন্য’ চিকিৎসকদের সেই পদগুলো। তাই করোনা ডেডিকেটেড এই হাসপাতালটি পুরোপুরি চালু করতে আইসিইউ বিভাগের জন্য বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি নতুন প্রয়োজন হবে। নিয়োগ দিতে হবে চিকিৎসকও, যা সময়সাপেক্ষ।
এমন নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে করোনা রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতালটি পুরোপুরি প্রস্তুত করা চ্যালেঞ্জের মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় নষ্ট যন্ত্রপাতি সচল করে আপাতত পাঁচ থেকে ছয়টি আইসিইউ শয্যা চালু করতে চায় স্বাস্থ্য প্রশাসন। এজন্য কয়েকদিন ধরে তোড়জোড়ও শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০২০ সালের দিকে করোনা মহামারির শুরুতে চট্টগ্রামে আইসিইউ শয্যার অভাবে বেশির ভাগ রোগী জরুরি মুহূর্তে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় তখন জেনারেল হাসপাতালে বিশেষায়িত করোনা চিকিৎসার জন্য ১০টি আইসিইউ শয্যা স্থাপন করা হয়। পরে এ সংখ্যা বাড়িয়ে ১৮ করা হয়। ২০২০ সালে করোনা ইউনিটের জন্য ২২ জন চিকিৎসক সংযুক্তিতে দেওয়া হলেও গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদের একসঙ্গে বদলি করা হয়। এরপর থেকে সেখানে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
করোনা রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের একমাত্র সদর এই হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু ওয়ার্ডকে এখন করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়েছে। সাধারণ রোগীদের জন্য থাকা আইসিইউ শয্যায় চিকিৎসা পাবেন করোনা রোগীরাও।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালের যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক সংকটসহ নানা বিষয়ে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত আলাপ হচ্ছে। এগুলো পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসক ও নার্স এনে ঘাটতি পূরণ করা হবে।’
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন বলেন, ‘আপাতত ডেঙ্গু ওয়ার্ডকে করোনা রোগীদের আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়েছে। করোনা রোগীদের আইসিইউর প্রয়োজন হলে সেটিরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিটসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এরইমধ্যে কিছু এসেছে, আরও আসবে বলে জানানো হয়েছে।’
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকরাম হোসেন বলেন, ‘করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে কয়েকজনকে দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে একটি টিম এসেছে। তারা আইসিইউ বিভাগের নষ্ট-অচল যন্ত্রপাতিগুলো মেরামত করে ঠিক করার চেষ্টা করছেন। এরইমধ্যে ৫ থেকে ৬টি অনেকটা সচল হয়েছে। সংযুক্তিতে পাঁচজন চিকিৎসক দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, চিকিৎসকসহ যাবতীয় বিষয়ে আমি প্রতিনিয়ত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি। আশা করছি আগামীতে আরও কিছু যন্ত্রপাতি এসে পৌঁছাবে।’