নিশাত প্রিয়ম। অভিনেত্রী ও মডেল। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বিঞ্জ-এ মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘ফ্যাঁকড়া’। এতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা, বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বুলবুল ফাহিম

প্রথমেই ‘ফ্যাঁকড়া’ নিয়ে জানতে চাই 
এই সিরিজের গল্পটা দুর্দান্ত। সিরিজটি নিয়ে শুরু থেকে এক্সাইটেড ছিলাম। ফাইনালি সিরিজটি মুক্তি পেল। আমার মনে হয়, যারা সিরিজটি দেখবেন, সবার ভালো লাগবে।

এই সিরিজে দর্শক আপনাকে কীভাবে পাচ্ছেন?
এই সিরিজে আমার চরিত্রের নাম অ্যানি। সে একজন সন্দেহপ্রবণ নারী। স্বামীর কোনো বিষয়ই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারে না। এ ধরনের সন্দেহপ্রবণ নারী চরিত্রে এই প্রথম অভিনয়। সে কারণে চরিত্রটি আমার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল।  

গল্পে এমন আর কী আছে, যা দর্শক মনোযোগ ধরে রাখবে?
আমি তো এখন পর্যন্ত অনেক ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি কিন্তু ‘ফ্যাঁকড়া’ আমার কাছে বিশেষ। কারণ, এই সিরিজে অনেক অ্যালিমেন্ট আছে। একে শুধু থ্রিলার বলা যাবে না। এখানে আছে মানবিকতা, ভালোবাসা, আত্মত্যাগ, প্রতিশোধ এবং অপরাধ জগতের অনেক বিষয়।

‘অদৃশ্য’ সিরিজের অনেক পরে ‘ফ্যাঁকড়া’য় কাজ করলেন। অনেকের তুলনায় কম.

.. 
আমার সর্বশেষ সিরিজ হলো ‘অদৃশ্য’। সেটি মুক্তি পেয়েছে ২০১৩ সালে। মাঝে কিছুটা গ্যাপ। আমি মূলত গল্পপ্রধান কাজ বেশি করি। সেটি টিভি, ইউটিউব কিংবা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হোক। ফলে আমার কাজের সংখ্যা কম। সংখ্যা আমার কাছে কোনো বিষয় নয়। আমি চাই ভালো কাজ। সেটি করে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

ভিউর জন্য অনেকে অস্থির। ভিউ বিষয়টা আপনি কীভাবে দেখেন?
অবশ্যই ভিউর দরকার আছে। তবে সস্তা বিষয় নিয়ে ভিউর পেছনে দৌড়ানোর মানুষ আমি নই। আমি চাই ভালো কাজ করতে, যেটি মানুষের সুস্থ বিনোদনের খোরাক হবে। আমার বিশ্বাস, ভালো কনটেন্ট হলে সেটির ভিউ আপনাআপনি হয়ে যাবে। সুতরাং বাজে কিছু দিয়ে ভিউর পেছনে ছুটতে চাই না।

অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে মাঝেমধ্যেই সিন্ডিকেট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়....
সিন্ডিকেট তো আছেই। এ ক্ষেত্রে এটি সিন্ডিকেট, অন্যদিকে একটি টিমের সঙ্গে কাজ করতে করতে তারা হয়তো বন্ধু হয়ে গেল। তারা হয়তো ব্যাক টু ব্যাক একসঙ্গে কাজ করছে। সেই জায়গা থেকে এটি নিয়ে অনেকে কথা তোলেন। সেই জায়গা থেকে অনেক শিল্পী কাজ কম পাচ্ছে। এটি একদিক থেকে ভালো না। আবার যারা টিম হয়ে ভালো কাজ করছে, সেদিকটা ভালো। যেহেতু আমার কাজের পরিমাণ কম, তাই এ বিষয়টি আমি ফেসও কম করি। 

‌‘সিটি লাইফ’ নাটকের কাজ কি শেষ?
না। এটি আমার খুব পছন্দের এক কাজ। এটি এখনও করে যাচ্ছি। প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল। এই সিরিয়াল থেকে দর্শকের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি, এখনও পাচ্ছি।

সিনেমায় অভিনয় নিয়ে কিছু ভাবছেন?
সব অভিনয়শিল্পীরই সিনেমায় অভিনয়ের স্বপ্ন থাকে। আমারও আছে। আমি এ পর্যন্ত অনেক সিনেমার স্ক্রিপ্ট পেয়েছি। এমন কোনো গল্প এখনও পাইনি, যে গল্পটা পড়ে মনে হয়েছে আমি এ সিনেমাটি করতে চাই। গল্প পছন্দ হলে অবশ্যই বড়পর্দায় কাজ করব। সে অপেক্ষায় আছি।

নতুন কোনো ওয়েব সিরিজ বা নাটকে দেখা যাবে কী? 
আমার কাছে তো ঈদের গিফট ‘ফ্যাঁকড়া’। এ ছাড়া অল্পকিছু কাজ হাতে রয়েছে। সেগুলোর শুটিংও শুরু করেছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এই স র জ ক জ কর আম র ক চর ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১১৪, জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা

চলতি বছরের অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ফিলিপাইন। দেশটির মধ্যাঞ্চলে কালমেগির আঘাতে ভয়াবহ বন্য দেখা দিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

আরো পড়ুন:

ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা

‘সঠিক স্থান নির্ধারণ না হওয়া আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে’

প্রতিবেদনে বলা হয়, কালমেগির প্রভাবে ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহর প্লাবিত হয়েছে। কর্দমাক্ত বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে গাড়ি, ট্রাক এমনকি বিশাল আকারের কনটেইনারও।

সেবুর প্রতিরক্ষা অফিসের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানান, কেবল সেবুতেই এখন পর্যন্ত ৯৯ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, কালমেগির প্রভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ জনে। আহত হয়েছে ৮২ জন। এছাড়া ১২৭ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট মার্কোস বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারণ ঘূর্ণিঝড় কালমেগির আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং সপ্তাহান্তে দেশটিতে আরেকটি ঝড় ‘উওয়ান’ আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রায় ১০ থেকে ১২টি অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যদি এতগুলো অঞ্চল এই ধরনের প্রভাবের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে এটি একটি জাতীয় দুর্যোগ।” 

জাতীয় দুর্যোগের মানে হলো, এমন এক পরিস্থিতি যেখানে ব্যাপক হতাহত, সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জীবিকা নির্বাহ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।

এটি সরকারি সংস্থাগুলোকে জরুরি তহবিল সংগ্রহ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবা ক্রয় এবং সরবরাহ দ্রুত করার জন্য আরও ক্ষমতা দেয়।

স্থানীয়ভাবে ‘টিনো’ নামে পরিচিত ঘূর্ণিঝড় কালমেগি মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে ফিলিপাইনের স্থলভাগে আঘাত হানে। এতে সেবুর আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ছোট অনেক বাড়িঘর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে, শহরজুড়ে কাদার ঘন স্তুর পড়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘরের ভেতরে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা ব্যবহার করছে।

ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে অন্তত ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পরই সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।

সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন রাগাসা আঘাত হেনেছিল এবং তার পরেই আসে টাইফুন বুয়ালোই।

আগের মাসগুলোতে, বর্ষা মৌসুমে দেশটি ব্যাপকভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় নিম্নমানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর, মধ্য ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়েছিল, যার ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল সেবুতে।

ঘূর্ণিঝড় কালমেগি আজ বৃহস্পতিবার ফিলিপাইন ছেড়ে মধ্য ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে ইতিমধ্যেই রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ভিয়েতনামে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছিলেন।

পূর্বাভাস অনুসারে, ঘূর্ণিঝড় কালমেগি শুক্রবার সকালে মধ্য ভিয়েতনামে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেখানকার ৫০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল অথবা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।

ভিয়েতনাম ইতিমধ্যেই এক সপ্তাহ ধরে বন্যা ও রেকর্ড বৃষ্টিপাতের সাথে লড়াই করছে। দেশটির বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এখনও বন্যার কবলে রয়েছে।

থাইল্যান্ডও ঝড়ের প্রভাবের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা কালমেগির প্রভাবে সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১১৪, জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা