আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আজ শুক্রবার রাত ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তাঁরা বলছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেই কেবল তারা সড়ক ছাড়বেন।

সরেজমিন দেখা যায়, শাহবাগ মোড় বন্ধ করে আন্দোলনকারীরা আলাদা আলাদা দলে ভাগ হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। তাদের সবার স্লোগানের মূল বিষয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।

শাহবাগ চত্বরে বিজ্ঞাপন বোর্ডের নিচে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা–কর্মীরা। এ ছাড়া ইসলামী ছাত্রশিবির, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরাও আলাদা আলাদাভাবে জড়ো হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। সেখানে মুফতি জসিম উদ্দিন রাহমানী ও তাঁর কিছু অনুসারীকেও অবস্থান নিতে দেখা গেছে। তাঁরাও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান।

আন্দোলনকারীরা ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘এই মুহূর্তে ব্যান (নিষিদ্ধ) চাই, আওয়ামী লীগের ব্যান চাই’, ‘আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ এবং ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’— এ রকম বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের হাতে জাতীয় পতাকাসহ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি সম্বলিত পোস্টার দেখা যায়।

সেখানে রাত ৯টায় এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না। শাহবাগেই আওয়ামী লীগের কবর খুড়ব।’

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে ইন্টেরিম (অন্তর্বর্তী সরকার) দেরি করলে শুধু শাহবাগ নয়, সারা বাংলা ব্লকেড দেব।’ এ সময় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

এর আগে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ মাহমুদুর রহমান খান সোহেলের স্ত্রী মরিয়ম খানম বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা আমাদের প্রাণের দাবি। ৫ আগস্টের পর এতদিন হয়ে গেলেও কেন সেটি করা হয়নি? কেন দাবি আদায়ে মাঠে নামতে হচ্ছে?’

শাহবাগ ব্লকেডে অংশ নিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দলের পক্ষ থেকে নয়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সাধারণ জনতা হিসেবে এখানে এসেছি।’

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, আওয়ামী লীগকে বাংলার জমিনে রাজনীতি করতে দেওয়া যাবে না। অবিলম্বে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিকেল পৌঁনে পাঁচটার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার কাছের ফোয়ারার পাশে তৈরি করা মঞ্চ থেকে শাহবাগ ব্লকেডের ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তাঁর ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে এসে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।

আরও পড়ুনআওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ৫ ঘণ্টা আগে

আগের ঘোষণা অনুযায়ী জুমার নামাজের পর থেকে যমুনার কাছের ফোয়ারার পাশে তৈরি করা অস্থায়ী মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এর আগে আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থানের ঘোষণা দেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

পরে রাত ১০টার দিক থেকে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ ও এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঘোষণা দেন, বাদ জুমা যমুনার পূর্ব পাশে ফোয়ারার সামনে বড় জমায়েত করা হবে। জমায়েত থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা দেন।

আরও পড়ুনআওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে এখনো যমুনার সামনে বিক্ষোভ১৬ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর অবস থ ন ন র র জন ত র স মন আওয় ম এনস প ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

কৌতূহলবশত ট্রাভেল ব্যাগটি খুলতেই বেরিয়ে এল খণ্ডিত মরদেহ

গাজীপুরের টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ট্রাভেল ব্যাগ থেকে এক ব্যক্তির খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকালে স্টেশন রোডের একটি বিরিয়ানির দোকানের সামনের রাস্তায় ব্যাগটি পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন।

নিহত ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাঁর বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় আজ সকালে একটি ট্রাভেল ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। কৌতূহলবশত কয়েক ব্যক্তি সেটি খুলে দেখেন, সেখানে খণ্ডিত মরদেহ। পরে খবর পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা-পুলিশ সকাল ৯টার দিকে এটি উদ্ধার করে।

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করে বেশ কয়েকটি টুকরা করে ব্যাগে ভরে টঙ্গীর ওই স্থানে ফেলে পালিয়ে গেছে। পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে। ওসি আরও বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ