চরফ্যাশনে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এনসিপির সাইনবোর্ড
Published: 11th, May 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখলে নিয়ে দলীয় কার্যক্রম শুরু করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
গতকাল শনিবার দুপুরে চরফ্যাশন পৌরসভার কলেজ রোডে আওয়ামী লীগের তিনতলা ভবন দখলের পর এনসিপির সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়। আজ রোববার সেখানে এনসিপির দলীয় কার্যক্রম শুরু করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির স্থানীয় নেতাদের বাড়িঘরসহ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুর করে কাগজপত্র পুড়িয়ে দেয় ছাত্র-জনতা। তার আগে কার্যালয়ে লুটপাট চালানো হয়। এর পর থেকে পড়ে ছিল কার্যালয়টি। ছয় মাস আগে তিনতলা ভবনের নিচতলায় এক নারী চা বিক্রি শুরু করেন। ভবনটির সব দরজা-জানালা খোলা ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, গতকাল শনিবার দুপুরে হঠাৎ ভবনটিতে এনসিপির সাইনবোর্ড টানানো দেখা যায়। এনসিপির উপজেলার নেতা পরিচয়দানকারী ওয়াহিদ ফয়সালের নেতৃত্বে কার্যালয়টি দখলে নেওয়া হয়। তখন তাঁর সঙ্গে মো.
জানতে চাইলে দখলে নেতৃত্ব দেওয়া ওয়াহিদ ফয়সাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা (এনসিপি) দখলকারী না। আওয়ামী লীগ দখল করেছে, সেটা আগে জানতে হবে। ২০১১-১২ সালের দিকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এই ভবন নির্মাণ করেছে। এই জমির অর্ধেক মানুষের রেকর্ডীয় সম্পত্তি (চান্দিনা ভিটা) এবং বাকি অর্ধেক সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তি। আমরা দখল করার আগে জমির প্রকৃত মালিকের সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি এবং সরকারি অংশ লিজ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’
আরেক নেতা মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আসলে আমরা ভবনটি দখল করিনি। এটা অযত্নে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল, পরিষ্কার করে ব্যবহার শুরু করছি মাত্র।’
ভোলায় এনসিপির সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা ইয়াছির আরাফাত বলেন, চরফ্যাশন উপজেলায় এনসিপির কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ওয়াহিদ ফয়সাল, হাসান মাহমুদ, শাহাদাত খন্দকার, বাহারুল ইসলাম, মো. শুভ, মঞ্জু, হাফেজ শাহাবুদ্দিনসহ ১০ জন। চরফ্যাশন উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় দখলের বিষয়টি তাঁরা জেনেছেন এবং কেন্দ্রকে জানিয়েছেন। দখলের কাজে জেলা বা কেন্দ্রের কোনো নির্দেশনা ছিল না। চরফ্যাশন এনসিপি এই দখল জেলা বা কেন্দ্রকে না জানিয়ে করেছে। কেন্দ্র খুব শিগগিরই আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখলমুক্ত করার নির্দেশনা দেবে।
এ বিষয়ে চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান হাওলাদার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প র স উপজ ল আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সবুজে ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রামে বিশাল পুরোনো বাড়ি, মালিক কে
বরগুনার আমতলীর সবুজে ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রাম ঘোপখালী। সেই গ্রামে ঢুকলে হঠাৎ চোখে পড়ে বিশাল এক পুরোনো বাড়ি। গাছপালা আর নীরবতার আবরণে ঘেরা, যেন প্রকৃতির সঙ্গে লুকোচুরি খেলে দাঁড়িয়ে আছে বাড়িটি।
একসময় এটি ছিল তিনতলা বাড়ি। তৃতীয় তলার বড় অংশ ধসে পড়ায় এখন কেবল দুইতলা দৃশ্যমান। ধ্বংসপ্রাপ্ত কাঠামোর মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা লাল-ধূসর ইটের এই ভবন যেন নিঃশব্দে উচ্চারণ করে চলেছে হারিয়ে যাওয়া কোনো ইতিহাসের ভাষ্য।
ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, বাড়ির আশপাশে সাত-আটটি পৃথক বাড়ি। সেখানে বসবাস করছেন এই বাড়ি নির্মাতার বংশধরেরা। বাড়িটির স্থাপত্যে ব্রিটিশ আমলের প্রভাব সুস্পষ্ট। খিলানযুক্ত বারান্দা, কারুকার্যপূর্ণ থাম ও অলংকৃত জানালাগুলো যেন সময়কে আটকে রেখেছে। বাড়িটির নিচতলার খিলান, মাঝের গম্বুজধর্মী কাঠামো এবং ওপরের জানালায় ব্যবহৃত কলামগুলো থেকে অনুমান করা যায়, এটি ব্রিটিশ আমলের।
বাড়ির ভেতরে ঢুকলে দেখা যায়, কাঠের দরজা-জানালাগুলো ভেঙে গেছে। ছাদ থেকে ঝরে পড়ছে মাটি ও ধুলা। ভবনটির ভেতরে প্রবেশ প্রায় অসম্ভব। একসময় যে কাঠের ছাদ শোভাবর্ধন করত, তা আজ ধসে পড়ার মতো অবস্থায়। জানালার রঙিন কাচ ভেঙে গেছে, খোদাই করা দরজাগুলো চূর্ণ–বিচূর্ণ।
ইট-চুন-সুরকি দিয়ে নির্মিত ভবনটির দেয়ালগুলো ২৪ ফুট চওড়া। ভবনটির প্রতিটি তলায় সুষমভাবে গঠিত খিলান ও জানালা আছে। নিচতলায় আছে ৭টি খিলান (অর্ধবৃত্তাকার), যা একটি দীর্ঘ বারান্দা তৈরি করেছে। এই খিলানগুলো রোমান-গথিক ধাঁচের, যা ব্রিটিশ আমলে প্রচলিত ছিল। প্রতিটি খিলানের ওপর রুফ-কার্নিশে ছোট ছোট অলংকরণ আছে।
ধ্বংসপ্রাপ্ত কাঠামোর মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা এই ভবন যেন নিঃশব্দে উচ্চারণ করে চলেছে হারিয়ে যাওয়া কোনো ইতিহাসের ভাষ্য