জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ সরকার ও সংগঠনের দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলি, হত্যাকাণ্ড কারও অজানা নয়। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ক্ষমতাচ্যুত নেতৃবৃন্দের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ দলটিকে নিষিদ্ধ করবার দাবিও অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব পক্ষ থেকেই ওঠে। তখন থেকেই প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টাসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন বলে আসছেন, দোষীদের শাস্তি দেবার পক্ষে তারা; দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করবার পক্ষে সরাসরি সায় নেই। ‘আওয়ামী লীগ কি নিষিদ্ধ হবে বা রাজনীতি করবে কিনা, নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা’– এই প্রশ্নের উত্তরে বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ড.

মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘আমার বরাবরই পজিশন হলো যে, আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমরা সব ভাই ভাই। আমাদেরকে এই দেশেই বাঁচতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশে থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিত, তার বিচার হবে।’ (বিবিসি, ৩ মার্চ, ২৫)।

তারপর প্রায় আড়াই মাস কেটে গেছে। সরকার গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক আলোচনা চলছে; নানা বিষয়ে মতৈক্য ও অনৈক্যের সংবাদ আমরা পাচ্ছি। অপেক্ষা করছি, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সমঝোতায় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষিত হবে। এরই মধ্যে, আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে সরকার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে। এই ট্রাইব্যুনাল এখন অপরাধী রাজনৈতিক দল, এর অঙ্গসংগঠক বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবেন।

এদিকে, জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন’ (সত্য ও সমঝোতা) গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, ‘অনন্তকাল হানাহানি করে জাতির মুক্তি আসবে না। জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো ঘৃণ্য কাজ যারা করেছে, সংখ্যায় তারা খুব বেশি না। তাদের উপযুক্ত ও যথেষ্ট শাস্তির ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে।’ (সমকাল, ১১ মে, ২৫)।
গণঅভ্যুত্থানের ৯ মাস পেরুনোর পর সরকার রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করছে; অন্যদিকে ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনও তৈরি হচ্ছে। এই দুই কার্যক্রমের পারস্পরিক অবস্থান কিছু প্রশ্ন তৈরি করে বৈকি। 

২.
৮ মে থেকে ১০ মে– আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করবার দাবিতে শুরুতে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে ও পরে শাহবাগে আন্দোলনের ডাক দেন গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতা ও এনসিপির আঞ্চলিক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। লক্ষণীয়, এনসিপি সাংগঠনিকভাবে এই আন্দোলন বা সমাবেশ আহ্বান করেনি। বিএনপি বা জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকে এই আন্দোলনে দেখা যায়নি। গুরুত্বপূর্ণ বাম সংগঠনগুলোও অনুপস্থিত ছিল। অবশ্য বেশ কয়েকটি ইসলামী দলের তরুণ নেতাকর্মী সমাবেশে ছিলেন; তাদের কিছু কর্মকাণ্ড সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে সমালোচিতও হয়েছে। বিশেষত ‘গোলাম আযমের বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’ স্লোগানে গণঅভ্যুত্থানজয়ী ছাত্রছাত্রীদের কেউ একমত হবেন বলে মনে হয় না। 

শুধু তাই নয়, সমাবেশে গাওয়া জাতীয় সংগীত এক দলের আপত্তির মুখে মাঝপথে থামিয়ে দিতে বাধ্য হয় তরুণ-তরুণীরা। এসব ঘটনার ভিডিওচিত্র দেখে অনেকের মনে অস্বস্তি ও শঙ্কা জাগে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে যাদের কণ্ঠে ছিল ‘ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’ কিংবা যাদের সাহসে কেঁপে উঠেছিল স্বৈরাচারের সিংহাসন; সেই তরুণ-তরুণীরা জাতীয় সংগীত গাইতে পারছে না!
যে তরুণ নেতৃবৃন্দ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গণঅভ্যুত্থান করেছে, তাদের অধিকাংশের অনুপস্থিতি নানা প্রশ্নের অবতারণা করে। কেনইবা সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ যাবার পরপরই নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী গ্রেপ্তার হবেন? শামীম ওসমানের মতো নেতা সদলবলে নিরাপদে পার পেয়ে যান, আইভীর মতো নেতা গ্রেপ্তার হন! এসবের সঙ্গে নিশ্চয়ই শাহবাগের সাম্প্রতিক আন্দোলনের সম্পর্ক নেই; কিন্তু আকস্মিকতায় মিল রয়েছে। 

৩.
কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার রিকনসিলিয়েশন বা সমঝোতা প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের আদলে একটি ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস কমিশন করতে পারি! গত দেড় দশকে যেসব অপরাধ হয়েছে, তার ন্যায়বিচার হতে হবে। তারা যেন মনে বল পায়, ন্যায়বিচারে আস্থা রাখে, সেই পরিবেশ তৈরি করা দরকার। তাদের মব ট্রায়ালের কাছে ছেড়ে দেওয়া ভুল হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে, বিগত শাসনামলে অপরাধের জন্য আওয়ামী লীগের কোনো অনুশোচনা নেই।’ (সমকাল, ৫ জানুয়ারি ২০২৫)।

অনুশোচনাহীন আওয়ামী লীগের প্রতি রিকনসিলিয়েশনের মনোভাব প্রবল বৈরী বিএনপি নেতৃবৃন্দের মধ্যেও স্পষ্ট। বিএনপি ২০২৩ সালের জুলাইতে তাদের দেওয়া ৩১ দফায় অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে ‘ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কমিশন’ গঠন করবার কথা বলেছে।  বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘মূল কথা হচ্ছে, রিকনসিলিয়েশনের মাধ্যমে রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা আনা। কত লাখ, কত হাজার মানুষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়? তা করতে গেলে রাষ্ট্রে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হতে পারে। ভালো হচ্ছে, রিকনসিলিয়েশনের মাধ্যমে সমাধানের দিকে যাওয়া। বিএনপি সেদিকে গেছে, যাতে রাষ্ট্রে শান্তি, স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা যায়’ (সমকাল, ৩ মে ২০২৫)।

রাষ্ট্রে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হলে মুক্ত ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। সুশাসনের জন্য অপরাধের শাস্তি যেমন অনিবার্য; তেমনি হানাহানি ও হিংসা জিইয়ে রাখা চলে না। গত দেড় দশকে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করলেই যেভাবে ‘বিএনপি-জামায়াত’ ট্যাগিং দেওয়া হতো, তেমনি বর্তমানে ‘মব ভায়োলেন্স’ নিয়ে সমালোচনা করলেই তাঁকে ফ্যাসিবাদের দোসর ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এসবই অগণতান্ত্রিক গোষ্ঠীবাজি আচরণ। রিকনসিলিয়েশন বা পুনর্মিলনের পথে বাধা পারস্পরিক অবিশ্বাস, জিঘাংসা। গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে জিঘাংসা বাদ দিয়ে সকলের প্রতি ছাড় দেওয়ার মনোভাব যেমন থাকতে হবে, তেমনি অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করবার বিষয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া চলবে না। আবার অপরাধীদের নিজেদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অনুশোচনা ও ক্ষমা প্রার্থনার মানসিকতাও থাকতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধোত্তর ৫৪ বছরের রাজনীতিতে আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা বা ক্ষমা প্রার্থনার ভূমিকায় দেখিনি। একাত্তরের ভূমিকার জন্য জামায়াত যেমন ক্ষমা চায়নি, তেমনি চব্বিশে নিজেদের কর্মকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগ ক্ষমা চায়নি বা অনুশোচনা প্রকাশ করেনি। বরং আওয়ামী লীগের দেশত্যাগী নেতৃবৃন্দের ফাঁস হওয়া কথোপকথনে পুরোনো দম্ভেরই প্রকাশ দেখেছি। এ অবস্থায় গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশে নতুন গণতান্ত্রিক যাত্রায় সব মত ও পথের অংশগ্রহণে অবাধ নির্বাচন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ বন্ধুরই মনে হচ্ছে। 
সমাজের বিপুলসংখ্যক মানুষকে বাদ রেখে রিকনসিলিয়েশনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবার নয়। আবার দম্ভ, পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সংঘাত দূরত্বই কেবল তৈরি করে; স্থিতি ও শান্তি আনতে পারে না। সমঝোতা বা রিকনসিলিয়েশন কিংবা মিটমাট যা-ই বলি না কেন, তার জন্য সকলকে ছাড় দিয়ে দেশ ও দেশের মানুষের স্থিতি-শান্তি ও স্বস্তিকে সবার আগে স্থান দিতে হবে। 

মাহবুব আজীজ: উপসম্পাদক, সমকাল; সাহিত্যিক 
mahbubaziz01@gmail.com

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমঝ ত চ ক ত গণঅভ য ত থ ন ন ষ দ ধ কর ন উপদ ষ ট সরক র র অপর ধ র এই দ শ র জন য ব এনপ সমক ল আওয় ম সমঝ ত করব র

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন কুঁড়ির শিশুশিল্পীরা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে খ্যাতি অর্জ

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, “নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুশিল্পীরা পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে খ্যাতি অর্জন করবে।”

শনিবার ঢাকার রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) অডিটোরিয়ামে ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু-কিশোরদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু-কিশোরদের অভিনন্দন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হিসেবে নতুন কুঁড়ির শিশু শিল্পীদের সংস্কৃতিচর্চা চালিয়ে যেতে হবে। একইসঙ্গে অন্যান্য বিষয়েও শিশু শিল্পীদের প্রতিভা বিকশিত করতে হবে।”

শিশু-কিশোরদের প্রতিভা বিকাশে অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, “নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় শিশু শিল্পীরা যে সাফল্য দেখিয়েছে, তার মূলে রয়েছে অভিভাবক ও শিক্ষকদের অবদান।” 

তিনি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু শিল্পীদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের অভিনন্দন জানান।

শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, “তোমরা অনেকেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাক্ষী হয়েছ। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ অনেকেই হয়তো তোমাদের পরিচিত। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতরা যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্নের পথে হাঁটার জন্য আমরা এই আয়োজনটা (নতুন কুঁড়ি) করেছি।”

২০ বছর পর নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা শুরুর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “গত জুলাই মাসে এই প্রতিযোগিতা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে বিজয়ী শিশুশিল্পীদের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলো।”

নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা সফলভাবে আয়োজনের জন্য তিনি বিটিভির মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

মাহফুজ আলম বলেন, “নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একটা আশার সঞ্চার হয়েছে যে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি টিকে থাকবে এবং সারা দুনিয়ায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।”

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আগামী সরকারও নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, “নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু শিল্পীরা শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনে নেতৃত্ব দেবে। এই শিশু শিল্পীরা বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্যকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় বিটিভির মহাপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম বলেন, “তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার প্রত্যক্ষ নির্দেশনা ও আন্তরিক পদক্ষেপের কারণে মাত্র দেড় মাসের মধ্যে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে।”

প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুশিল্পীদের নিয়ে বিটিভির পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার সব শাখার সেরা দশ জন সরাসরি বিটিভির শিল্পী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে। এছাড়া বিটিভি আয়োজিত ‘শিশুপ্রহর’ অনুষ্ঠানে শুধু নতুন কুঁড়ির সেরা দশের শিল্পীরা অংশগ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানটি প্রতি শুক্রবার প্রচারিত হবে।”

বাংলাদেশ টেলিভিশন আয়োজিত পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’ প্রতিযোগিতায় ‘ক’ ও ‘খ’ বিভাগের প্রতি বিষয়ে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জনকারী মোট ৭৩ জন শিশুশিল্পী পুরস্কৃত হয়। 

পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশুশিল্পীরা হলো
‘ক’ বিভাগ :
অভিনয়ে ১ম আরহাম হাসান আরিয়ান; ২য় রুফাইদা আফরা; ৩য় মুগ্ধতা মল্লিক। আধুনিক গানে ১ম প্রিয়সী চক্রবর্তী; ২য় স্মিতা বাড়ই; ৩য় শেখ রোদসী রায়ান। আবৃত্তিতে ১ম আরিশা দানীন মাহা; ২য় মো. ইছা আল মাহিম; ৩য় নাভীদ হাসান। উচ্চাঙ্গ নৃত্যে ১ম মোছা. আদৃতা তাসনিম লাবণ্য; ২য় শৌনক কুন্ডু; ৩য় আর্যশ্রী বিশ্বাস পৃথা। কৌতুকে ১ম সাবিক সাদত; ২য় জেরাল্ড বিশ্বাস; ৩য় মাহিরা। গল্প বলায় ১ম রোহিনী হাসান হৃদ্ধি; ২য় আয়েশা সিদ্দিকা; ৩য় নুসরাত তাসনিম। দেশাত্মবোধক গানে ১ম অংকিতা সরকার; ২য় মো. ইহানুর রহমান; ৩য় তোজো মণ্ডল। নজরুল সংগীতে ১ম অরিত্রা বসাক; ২য় শ্রেয়া রায়; ৩য় অংকিতা সরকার। রবীন্দ্রসংগীতে ১ম প্রিয়সী চক্রবর্তী; ২য় আরিশা দানীন মাহা; ৩য় শুভশ্রী সরকার। লোকসংগীতে ১ম চিশতি রহমতুল্লাহ সাফীন মন্ডল; ২য় আইয়ান রেজা; ৩য় মো. ইহানুর রহমান। সাধারণ নৃত্যে ১ম ঐশ্বর্য্য জিতা স্পর্শ; ২য় নাজিফা হোসেন (স্বাধিকা); ৩য় দীপশিখা দে। হামদ-নাতে ১ম সুরাইয়া আক্তার; ২য় তাসবিহা আয়ান তানহা; ৩য় শুহাদা।

খ বিভাগ:
অভিনয়ে ১ম হুমায়রা আসিফা; ২য় মাহিমা জামান কথা; ৩য় মুরাদুস সালিহীন। আধুনিক গানে ১ম রোদসী নূর সিদ্দিকী; ২য় তুষ্মি দাস; ৩য় শ্রীতমা রায়। আবৃত্তিতে ১ম সাবিলা সুলতান বাণী; ২য় আফিয়া সাইয়ারা ত্বাহা; ৩য় নাহিনা বিনতে জামান। উচ্চাঙ্গ নৃত্যে ১ম মৃনময়া পাল ও তুলি মল্লিক (যৌথভাবে); ২য় তনুশ্রী মন্ডল; ৩য় কায়নাত বিনতে মোর্শেদ রাই। কৌতুকে ১ম দিশান রায় দুর্জয়; ২য় এহসানুল হক; ৩য় তাসফিয়া মুনতাহা। গল্প বলায় ১ম ফাইরুজ বারী মালিহা; ২য় সমহৃদ্ধি সূচনা স্বর্গ; ৩য় মাহিমা জামান কথা। দেশাত্মবোধক গানে ১ম শ্রেয়া সাহা; ২য় শ্রদ্ধা কর্মকার; ৩য় অন্বেষা বর্মন।

নজরুল সংগীতে ১ম আজমাইন আরহাম; ২য় শুভমিতা তালুকদার; ৩য় অন্বেষা বর্মন। রবীন্দ্র সংগীতে ১ম শুভমিতা তালুকদার; ২য় শ্রীতমা রায়; ৩য় অন্বেষা বর্মন। লোক সংগীতে ১ম কুমারী রিয়া ব্যাধ; ২য় মো. বাইজিদ আহমেদ; ৩য় তানিশা ইসলাম হিয়া। সাধারণ নৃত্যে ১ম রাওজা করিম রোজা; ২য় রাধিকা তাছাল্লুম রিয়ন্তি; ৩য় ইউশা শাহিরা আনুভা। হামদ-নাতে ১ম আহনাফ আদিল; ২য় তাসনিম জাহান; ৩য় রোদসী নূর সিদ্দিকী।

অনুষ্ঠানে ১ম স্থান অর্জনকারীকে ২ লাখ টাকা, ২য় স্থান অর্জনকারীকে ১ লাখ টাকা এবং ৩য় স্থান অর্জনকারীকে ৫০ হাজার টাকার চেকসহ ট্রফি ও সনদ প্রদান করা হয়।

নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার ‘ক’ বিভাগের চ্যাম্পিয়ন প্রিয়সী চক্রবর্তী এবং ‘খ’ বিভাগের চ্যাম্পিয়ন শুভমিতা তালুকদার গত ১৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকার চেক ও ট্রফি গ্রহণ করে।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • হৃদয় থেকে বলছি, শেখ হাসিনা খালাস পেলে খুশি হব: রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
  • রায় শুনতে ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধারা 
  • ঢাকায় বড় পর্দায় দেখা যাবে শেখ হাসিনার মামলার রায়
  • শেখ হাসিনার মামলার রায়: ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতার দাবি ফখরুলের
  • বেওয়ারিশ জুলাই শহীদদের শনাক্তে আসছে বিদেশি ফরেনসিক টিম
  • নতুন কুঁড়ির শিশুশিল্পীরা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে খ্যাতি অর্জ