পোরশায় স্বর্ণালংকারের লোভে ভাইবোনকে হত্যা, আদালতে আসামির জবানবন্দি
Published: 13th, May 2025 GMT
নওগাঁর পোরশায় জোড়া খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার নুরুন্নবী (৩৫) নামের এক আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে স্বর্ণালংকার লুট করার জন্য ভাইবোনকে হত্যা করা হয় বলে উল্লেখ করেন আসামি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে নওগাঁর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১১ আদালতের বিচারক মো. আব্দুর রহমান আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পোরশা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ আলম বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল সোমবার টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বৈরাতলী ইউনিয়নের বেটুয়া পশ্চিম পাড়া এলাকার একটি ফার্নিচারের দোকান থেকে নুরুন্নবীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে লুট করা স্বর্ণালংকার বিক্রির ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
পোরশা থানা-পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নুরুন্নবী পোরশা উপজেলার বানমহন গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে। তিনি পোরশা সদরের গবিরাকুড়ি গ্রামে বিয়ে করে এক যুগ ধরে ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। উপজেলার পোরশা পূর্ববাড়ি গ্রামের নূর মোহাম্মদের (৫৫) বাড়িতে দীর্ঘদিন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। বাড়ির মালিক নূর মোহাম্মদের বোন রেজিয়া খাতুনের (৫৮) কোনো সন্তান না থাকায় তিনি নুরুন্নবীকে পাতানো ছেলে বানান। এ কারণে রেজিয়া ও নূর মোহাম্মদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল তাঁর। বাড়িতে যাতায়াত করার সুবাদে রেজিয়ার কাছে বেশ কিছু স্বর্ণালংকার দেখে লোভে পড়েন নুরুন্নবী। গত ৪ এপ্রিল নুরুন্নবীকে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ দেন রেজিয়া। নিমন্ত্রণ পেয়ে সন্ধ্যায় পূর্ববাড়ি গ্রামে রেজিয়ার বাসায় যান নুরুন্নবী। রাতের খাবার শেষে রেজিয়া, নূর মোহাম্মদ ও নুরুন্নবী একসঙ্গে বসে গল্প করেন। একপর্যায়ে নূর মোহাম্মদ তাঁর ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১১টার দিকে নুরুন্নবী গল্প করার একপর্যায়ে পেছন থেকে রশি দিয়ে রেজিয়ার গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করেন। পরে ঘরে গিয়ে ঘুমন্ত নূর মোহাম্মদের মুখ চেপে ধরে তাঁর বুকে উপর্যুপরি চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। ভাইবোনকে হত্যার পর রেজিয়ার ঘরে থাকা প্রায় দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান নুরুন্নবী। বাড়ির সদর দরজা ভেতর থেকে ছিটকিনি দিয়ে আটকে প্রাচীর টপকে পালিয়ে যান তিনি।
নূর মোহাম্মদ ও রেজিয়া খাতুনকে হত্যার তিন দিন পর ৭ এপ্রিল অর্ধগলিত অবস্থায় তাঁদের লাশ উদ্ধার করে থানা-পুলিশ। এ ঘটনায় রেজিয়া ও নূর মোহাম্মদের বড় ভাই ফজলে আহম্মদ বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এরপর গতকাল নুরুন্নবীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ম হ ম মদ র স বর ণ ল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের ফাঁদে ফেলে জিম্মি, তরুণীসহ গ্রেপ্তার ২
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে মারধর ও টাকা আদায়ের অভিযোগে করা মামলায় এক তরুণীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আশুলিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিনুর কবির।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার মুন্সিরচর গিমাডাঙ্গা এলাকার ইয়াছিন শেখ (২৫) ও মাগুরার শিমুলিয়া এলাকার সুমাইয়া জান্নাত ওরফে সুমি আক্তার (২৫)। তাঁরা আশুলিয়ার শিমুলতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
মামলার বাদীর (২৫) বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের পেচুয়াধারা এলাকায়। তিনি থাকেন রাজধানীর মিরপুরে।
সংবাদ সম্মেলনে শাহিনুর কবির জানান, সম্প্রতি একটি ডেটিং সাইটের মাধ্যমে বাদীর সঙ্গে সুমির পরিচয় হয়। ওই তরুণী তাঁকে সম্প্রতি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় দেখা করতে বলেন। পরে ২০ জুন রাত ৯টার দিকে তিনি আশুলিয়ায় যান। একপর্যায়ে সুমির নির্দেশনায় তিনি আশুলিয়ার চিত্রাশাইল এলাকায় তিনতলা একটি ভবনের নিচে মোটরসাইকেল রেখে ছাদে যান। সেখানে বাদীকে আটকে মারধর করেন সুমি ও ইয়াছিন। একপর্যায়ে তাঁরা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে তাঁরা মুক্তিপণ হিসেবে ১২ হাজার ৭০০ টাকা, একটি আইফোন, ইস্টার্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নেন। এ ঘটনায় ২৫ জুন আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেন বাদী।
পুলিশের দাবি, ইয়াছিন ও সুমি দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মানুষজনকে জিম্মি করেন। পরে মারধর ও চাঁদা আদায় করেন। অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে।