এবারের আইপিএলে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার খেলছেন ১৬ জন। এর মধ্যে অধিকাংশকেই ১৭ মে থেকে ফের শুরু হতে যাওয়া আইপিএলে দেখা যাবে না। ১১ জুন থেকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। এজন্য অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদেরও পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া দ্বিপক্ষীয় সিরিজের কারণে ইংল্যান্ড ও উইন্ডিজের ক্রিকেটারদেরও দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। এ চার দেশের ক্রিকেটার যেসব ফ্র্যাঞ্চাইজিতে আছেন, তারা এবার বিপদে পড়তে যাচ্ছে।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের কারণে ৮ মে ধর্মশালায় পাঞ্জাব-দিল্লি ম্যাচের মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায় আইপিএল। বিদেশি নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে বিরাট কোহলির দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। অসি পেসার যশ হ্যাজেলউড ও দক্ষিণ আফ্রিকার লুঙ্গি এনগিদিকে পাচ্ছে না তারা। ক্যারিবীয় পেস অলরাউন্ডার রোমারিও শেফার্ড ও ইংলিশ ব্যাটার টম বেথেলকে পাবে না তারা। পাঞ্জাব নাও পেতে পারে প্রোটিয়া পেসার মার্কো ইয়ানসেনকে।
মুম্বাইয়ের দুই প্রোটিয়া ক্রিকেটার রায়ান রিকেলটন ও করবিন বশের আসার সম্ভাবনা কম। ইংলিশ ক্রিকেটার উইল জ্যাকও আসবেন না। গুজরাটের চার মূল বিদেশি হলেন ইংল্যান্ডের জস বাটলার, উইন্ডিজের শেফরানে রাদারফোর্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসু রাবাদা ও জেরাল্ড কোয়েতজে। তাদের মধ্যে বাটলার ও কোয়েতজি আসতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়া সানরাইজার্স হায়দরাবাদের দুই অস্ট্রেলিয়ান প্যাট কামিন্স ও ট্রাভিস হেডের আসার সম্ভাবনা কম। রাজস্থানে জোফরা আর্চারের আসার সম্ভাবনাও কম।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্ভিক্ষের ‘মারাত্মক ঝুঁকিতে’ গাজার ২১ লাখ বাসিন্দা
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল মানবিক ও ত্রাণসহায়তা ঢুকতে না দেওয়ায় সেখানে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। এতে অবরুদ্ধ উপত্যকার ২১ লাখ বাসিন্দা, বিশেষ করে শিশুরা দুর্ভিক্ষের মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে। গত সোমবার প্রকাশিত ‘ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশন (আইপিসি)’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও দাতব্য সংস্থার উদ্যোগে গঠিত একটি সংস্থা হচ্ছে আইপিসি।
আইপিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার খাদ্যসংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এখনো দুর্ভিক্ষ শুরু হয়নি। তবে পরিস্থিতির যেভাবে অবনতি হচ্ছে, তাতে দুর্ভিক্ষের মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
কয়েক মাসের আলোচনার পর গত বছরের শেষ দিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য রাজি হয় ইসরায়েল ও হামাস। এরপর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপর সেখানে ত্রাণসহায়তা ঢুকতে শুরু করলে সাময়িক স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু দুই মাসের মাথায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল আবারও নির্বিচার ও নৃশংসভাবে হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির আবারও অবনতি ঘটতে শুরু করে।
বর্তমানে গাজার প্রায় ২ লাখ ৪৪ হাজার বাসিন্দা ভয়াবহ খাদ্যসংকটের মধ্যে রয়েছেন বলে আইপিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, এতে দিন দিন সেখানে দুর্ভিক্ষ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে। গাজার ২১ লাখ মানুষকে দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।
গাজার বর্তমান খাদ্যসংকট পরিস্থিতি তুলে ধরে আইপিসির মূল্যায়নে বলা হয়েছে, গাজার প্রায় ৫ লাখ বাসিন্দা, অর্থাৎ উপত্যকাটির প্রতি পাঁচজনে একজন বর্তমানে অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। এ খাদ্যসংকট যদি চলতেই থাকে, তাহলে আগামী ১১ মাস, অর্থাৎ ২০২৬ সালের এপ্রিল নাগাদ পাঁচ বছরের কম বয়সী গাজার প্রায় ৭১ হাজার শিশু মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগবে।
খাবারের জন্য ভিক্ষা
খাবারের জন্য গাজার ফিলিস্তিনের মরিয়া হয়ে যাওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে আইপিসির প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, গাজার অনেক পরিবার খাবারের জন্য ভিক্ষার মতো কাজ করতেও বাধ্য হচ্ছে। কেউ কেউ আবর্জনার স্তূপে কিছু পেলে তা বিক্রি করে খাবার কেনার চেষ্টা করছেন।
চলমান সংঘাতের কারণে গাজায় বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ খাদ্যসংকট চলছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। গাজার খাদ্যসংকট নিয়ে এর আগে গত বছরের অক্টোবরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল আইপিসি। সেই সময়ের কথা উল্লেখ করে তাদের সর্বশেষ এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেই সময়কার তুলনায় বর্তমানে গাজার খাদ্যসংকটে আরও বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে এসেছে। সেখানকার মানুষের জীবনে বয়ে এনেছে চরম দুর্দশা।
আইপিসির মূল্যায়নে উঠে এসেছে, গাজার ১৯ লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি, অর্থাৎ সেখানকার ৯৩ শতাংশ মানুষ উচ্চমাত্রার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২ লাখ ৪৪ হাজার রয়েছেন বিপর্যয়কর খাদ্যসংকটে।
জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংস্থা, দাতব্য সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের সরকারের নেওয়া একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ আইপিসি। বিশ্বের কোনো অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ চলছে কি না অথবা কোথাও দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে কি না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।