মির্জাপুর পৌর এলাকার লৌহজং নদীর কুমুদিনী হাসপাতাল ঘাটে সেতু না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন অন্তত ৩৫ গ্রামের মানুষ। তারা এই ঘাটে একটি সেতু নির্মাণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সভা-সমাবেশ করছেন, তবে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না নেওয়ায় হতাশ।
মির্জাপুর পৌর এলাকার লৌহজং নদীতে কুমুদিনী হাসপাতাল খেয়াঘাট। এই খেয়াঘাট হয়ে উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ৩৫ গ্রামের মানুষ নিয়মিত চলাচল করে থাকেন। খেয়াঘাটে একটি সেতু না থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা ঘুরে হাসপাতালে যাতায়াত করতে হয়। লৌহজং নদীর কুতুববাজার ও পাহাড়পুর এলাকায় দুটি সেতু নির্মিত হলেও কুমুদিনী হাসপাতাল খেয়াঘাটে সেতু না থাকায় মানুষের ভোগান্তি কমেনি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুমুদিনী হাসপাতাল খেয়াঘাটে সেতু না থাকায় মির্জাপুরের দক্ষিণাঞ্চলসহ আশপাশের অনেক মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভরা বর্ষায় ঘাটে খেয়ানৌকায় পারাপার হতে হয়। এ ছাড়া শুষ্ক মৌসুমে চলাচলের জন্য স্থাপন করা হয় বাঁশের সাঁকো। কয়েক মাস আগেও প্রায় এক লাখ টাকা ব্যয়ে সাঁকো স্থাপন করা হয়। গত ৩ মে সন্ধ্যায় স্রোতে কচুরিপানার চাপে সাঁকোটি ভেঙে যায়। নদী পারাপারে ব্যবস্থা না থাকায় লোকজন প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে কুতুববাজার ও পাহাড়পুর এলাকার দুই সেতু দিয়ে গন্তব্যে যান। এ কারণে অতিরিক্ত অর্থ ও সময় নষ্ট হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতি বছরই ভেঙে যায় বাঁশের সাঁকো। এতে ভোগান্তির শিকার হন তারা। এর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অথচ এই ঘাট ইজারা দেয় জেলা পরিষদ।
গতকাল সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভেঙে যাওয়া সাঁকো তিন দিন আগে মেরামত করা হয়েছে। নদীতে পানি আগের চেয়ে কম। স্রোতও কমে গেছে। সাঁকো দিয়ে লোকজন কোনো রকমে নদী পার হয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। কুমুদিনী হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং স্কুল ও কলেজ, ভারতেশ্বরী হোমসের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই নদীর দক্ষিণ পাড়ে থাকেন। তারাও শুকনো মৌসুমে সাঁকো বর্ষায় নৌকা ব্যবহার করে নদীর উত্তর পাড়ে যান।
মির্জাপুর সাহাপাড়ার বাসিন্দা ডা.

বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, আমাদেরও ইচ্ছে নদীর উত্তর পাড়ের ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছেলে-মেয়েদের পড়াতে। কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে যাওয়ার ভয়ে তা পারছি না। এদিকে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
পাহাড়পুর গ্রামের বাসিন্দা সালাহ উদ্দিন ডন জানান, কুমুদিনী হাসপাতাল খেয়াঘাটে একটি সেতু নির্মাণ তাদের দীর্ঘদিনের দাবি। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ ব্যাপারে কাজ করতে হবে।
মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মনিরল সাজ রিজন বলেন, লৌহজং নদীর ওই ঘাটটি কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নিজস্ব রাস্তার সঙ্গে যুক্ত। এলজিইডি থেকে ওই ঘাটে সেতু নির্মাণ করা যাবে, তবে কুমুদিনী কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে।
কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায় জানান, ওই স্থানে সেতু নির্মাণের অনুমতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। রাস্তাটিতে রোগীসহ হাসপাতালের কর্মী ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা চলাচল করেন। সেতু নির্মাণ করা হলে যান চলাচল করলে দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকে। এ জন্য সেতু নির্মাণে কর্তৃপক্ষের অনাগ্রহ। তবে এলাকাবাসীর দাবি অনুযায়ী ওই স্থানে ফুট ওভারব্রিজ হলে ভালো হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প র এল ক

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ছেলেকে নিয়ে স্বামীর দুধ দিয়ে গোসল

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দীর্ঘ ১২ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন স্বামী তাইফুল ইসলাম। আনন্দ প্রকাশ করে ছেলে মিনহাজ শেখকে (১০) সঙ্গে নিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করেন তিনি। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা গেছে, উপজেলার বাটিকামারী গ্রামের তাইফুল ইসলাম এক যুগ আগে ভাঙ্গা উপজেলার রোজিনা বেগমের সঙ্গে সংসার শুরু করেন। তবে সংসার জীবনে নানা ধরনের কলহ ও নির্যাতনের অভিযোগে সম্পর্ক দিন দিন তিক্ত হয়ে ওঠে। অবশেষে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে তিনি স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে তালাক দেন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি তার ছেলে মিনহাজ শেখকে সঙ্গে নিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করেন। তবে তালাক পরবর্তী এমন ব্যতিক্রমী আচরণ এলাকায় কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।

তাইফুল ইসলাম দাবি করেন, গত ১২ বছর তারা বাবা-ছেলে ভীষণ কষ্টে দিন কাটিয়েছেন। নানাভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। স্ত্রীকে তালাক দিয়ে সেই অধ্যায়ের অবসান হয়েছে। তাই আনন্দ প্রকাশে তারা বাবা-ছেলে দুধ দিয়ে গোসল করেছেন।

আরো পড়ুন:

বাকৃবিতে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন

বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উপলক্ষে বাকৃবিতে নানা আয়োজন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামবাসীর মতে, দাম্পত্য জীবনের কলহ এভাবে প্রকাশ্যে চলে আসা দুঃখজনক। তবে তালাক পরবর্তী এমন ব্যতিক্রমী আচরণ এলাকায় কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।

ঢাকা/বাদল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ