বিমানের চাকা খুলে যাওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি
Published: 16th, May 2025 GMT
কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটের চাকা খুলে নিচে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যদিও পরবর্তীকালে বিমানটি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে জরুরি অবতরণ করে।
এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এবিএম রওশন কবীর এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
সিলেট থেকে মদিনার পথে প্রথম হজ ফ্লাইট
বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন তিন উপদেষ্টা
তিনি জানান, এ বিষয়ে বিমানের চিফ অব সেফটি ক্যাপ্টেন এনাম তালুকদারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিজি ৪৩৬ (ড্যাশ ৮-৪০০) বিমানটিতে শিশুসহ মোট ৭১ জন আরোহী ছিলেন। কক্সবাজার থেকে শুক্রবার বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে উড্ডয়ন করে বিমানটি। আকাশে ওড়ার পরই বিমানটির পেছনের একটি চাকা খুলে নিচে পড়ে যায়। পাইলট ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহর নেতৃত্বে দুপুর ২টা ২২ মিনিটে বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপদে অবতরণ করে। যাত্রী ও ক্রুরা সবাই সুস্থ ও নিরাপদ রয়েছেন।
এর আগে উড্ডয়নের পরপরই ক্যাপ্টেন জামিল ঢাকার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে (এটিসি) জানান, তিনি জরুরি অবতরণ করতে চাচ্ছেন। পাইলটের বার্তা পাওয়ার পরপরই ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জরুরি অবতরণের প্রস্তুতি নেয়। প্রস্তুত রাখা হয়েছিল ফায়ার সার্ভিসও।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১৫ হাজার ফুট উঁচুতে উড়োজাহাজের ডানায় আটকে গেলেন স্কাইডাইভার, শেষ পর্যন্ত কী হলো
অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ গতকাল বৃহস্পতিবার শ্বাসরুদ্ধকর একটি দৃশ্যের ভিডিও প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, একজন স্কাইডাইভারের প্যারাস্যুটের অংশবিশেষ উড়োজাহাজের পেছনের অংশে আটকে গেছে। এ অবস্থায় তিনি কয়েক হাজার মিটার উঁচুতে ভয়ংকরভাবে ঝুলছিলেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ওই স্কাইডাইভার প্রাণে বেঁচে গেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার পরিবহন নিরাপত্তা ব্যুরো (এটিএসবি) ভিডিওটি প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে তারা। প্রতিবেদনে ওই স্কাইডাইভারকে ‘পি১’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেষ পর্যন্ত ওই স্কাইডাইভার হুক নাইফ নামের একটি বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে নিজেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন এবং তিনি নিরাপদে অবতরণ করেছেন। তিনি সামান্য আঘাত পেয়েছেন।
ওই স্কাইডাইভার কুইন্সল্যান্ডের আকাশে ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় স্কাইডাইভিং করতে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে ওই উড়োজাহাজে আরও ১৬ জন প্যারাস্যুটার ছিলেন।
উড়োজাহাজ থেকে লাফ দেওয়ার সময় ‘পি১’ স্কাইডাইভারের কাছে সংরক্ষিত থাকা প্যারাস্যুটের একটি অংশ উড়োজাহাজের ডানার সঙ্গে আটকে যায়। এতে ওই সংরক্ষিত প্যারাস্যুটটি খুলে যায় এবং স্কাইডাইভারের জাম্পারটিকে পেছন দিকে টানতে থাকে। ওই সময় ‘পি১’ প্যারাস্যুটারের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার কারণে আরেকজন প্যারাস্যুটারও লাফিয়ে পড়তে বাধ্য হন। তবে তিনি নিরাপদে লাফ দিতে পেরেছেন।
উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন পাইলট। প্যারাস্যুটের অবশিষ্টাংশ তখনো উড়োজাহাজের লেজে আটকে ছিল। তিনি নিয়ন্ত্রকক্ষকে বলে রেখেছিলেন যে উড়োজাহাজের লেজের অংশ যদি ভেঙে যায়, তবে তাঁরাও প্যারাস্যুট নিয়ে বের হয়ে আসবেন।ভিডিওতে দেখা যায়, কমলা রঙের প্যারাস্যুটটি উড়োজাহাজের লেজের চারপাশে জড়িয়ে গেছে এবং ‘পি১’ স্কাইডাইভার নিচে ঝুলে আছেন এবং লাফাচ্ছেন।
এটিএসবি প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির প্রধান কমিশনার অ্যাংগাস মিচেল বলেন, ওই সময় পাইলটের মনে হচ্ছিল, উড়োজাহাজটি হঠাৎ ওপরের দিকে উঠছে এবং গতি দ্রুত কমছে। এরপর তিনি জানতে পারেন, একজন স্কাইডাইভার উড়োজাহাজের লেজে আটকে ঝুলছেন।
উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হতে পারে—এমন আশঙ্কা থেকে পাইলট পুরোপুরি এর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেন। উড়োজাহাজের এক ক্রু অন্য প্যারাস্যুটারদের নিরাপদে বের হয়ে যেতে বলেন। ১৩ জন প্যারাস্যুটার তখন লাফ দেন। দুজন প্যারাস্যুটার উড়োজাহাজের ভেতরে থেকে যান।
উড়োজাহাজের লেজে আটকে থাকা স্কাইডাইভার হুক নাইফ দিয়ে সংরক্ষিত প্যারাস্যুটের দড়িগুলো কেটে মুক্ত হতে শুরু করেন।
এটিএসবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১১টি দড়ি কাটতে এক মিনিটের কম সময় লেগেছে। পরে অবশ্য এটিএসবির তদন্ত কর্মকর্তাদের ওই স্কাইডাইভার বলেছেন, কাজটি তাঁদের ধারণার চেয়ে কঠিন ছিল।
‘পি১’ স্কাইডাইভার নিরাপদে অবতরণ করার পর উড়োজাহাজের ভেতরে থাকা অপর দুই প্যারাস্যুটারও নিরাপদে লাফিয়ে পড়েন।
উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন পাইলট। প্যারাস্যুটের অবশিষ্টাংশ তখনো উড়োজাহাজের লেজে আটকে ছিল। তিনি নিয়ন্ত্রকক্ষকে বলে রেখেছিলেন, উড়োজাহাজের লেজের অংশ যদি ভেঙে যায়, তবে তাঁরাও প্যারাস্যুট নিয়ে বের হয়ে আসবেন।
তবে শেষ পর্যন্ত তা করার আর দরকার পড়েনি। পাইলট কুইন্সল্যান্ডের টালি বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করতে সক্ষম হন।