রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে প্রায় তিন বছর পর সরাসরি শান্তি আলোচনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলে রুশ ড্রোন হামলায় একটি যাত্রীবাহী বাসের ৯ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও চারজন। এ হামলাকে ‘নির্লজ্জ যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে কিয়েভ।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘সব নিহতই সাধারণ বাসযাত্রী। এটি পরিকল্পিত বেসামরিক মানুষ হত্যার ঘটনা।’ তিনি বলেন, ‘রাশিয়াকে থামাতে হলে তাদের ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও চাপ দরকার। না হলে তারা কোনো দিন প্রকৃত কূটনৈতিক পথে আসবে না।’ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিই সিবিহা অভিযোগ করেন, পুতিন বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা সুমিতে ইউক্রেনীয় সামরিক সরঞ্জাম লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। সেই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি মস্কো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া বরাবরই বেসামরিকদের লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।

এ হামলার ঠিক আগেই শুক্রবার ইস্তাম্বুলে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে ৯০ মিনিটের শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। যুদ্ধবিরতি নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি না হলেও দু’পক্ষই ১ হাজার করে বন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর এটিই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময়।

বৈঠক শেষে রুশ প্রতিনিধি দলের প্রধান আলোচক ভ্লাদিমির মেডিনস্কি বলেন, ‘সব পক্ষই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তাদের মতামত দেবে এবং বিস্তারিতভাবে তা উপস্থাপন করবে। রাশিয়া ভবিষ্যতেও আলোচনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী।’ তবে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে জানান, রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো একেবারেই ‘বাস্তবতা বিচ্ছিন্ন’। 

তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেনকে নিজের ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে বলেছে। এটি অগ্রহণযোগ্য ও অসংগত দাবি। এগুলো যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব নয়, বরং আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার কৌশল।’

জেলেনস্কির অভিযোগ, ‘এ আলোচনা শুধু সময়ক্ষেপণ ছাড়া কিছু নয়। আমরা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও অন্যান্য মিত্রদের কাছ থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাশা করছি।’  শান্তি আলোচনার ফলাফল নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিও। 

ইসলামাবাদে রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার পক্ষ থেকে আবারও অস্পষ্টতা এবং আন্তরিকতার অভাব দেখা যাচ্ছে। তারা এখনও শান্তির জন্য প্রস্তুত নয়।’ 

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেন, ‘পুতিনের এ নির্লজ্জতা দেখে আমি নিশ্চিত, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তির দিক বিবেচনা করে সঠিক পদক্ষেপ নেবেন।’

তবে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, পুতিন ও জেলেনস্কির সরাসরি বৈঠক ভবিষ্যতে হতে পারে। তবে সেটি নির্ভর করছে এ আলোচনার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু অর্জনের ওপর। তিনি বলেন, ‘এ চুক্তিতে কে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করবেন, সেটিই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

অস্ট্রেলীয় নাগরিককে ১৩ বছরের কারাদণ্ড

রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত লুহানস্ক অঞ্চলের একটি আদালত ইউক্রেনের পক্ষে যুদ্ধ করার অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক অস্কার জেনকিন্সকে ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। রাশিয়াপন্থি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, জেনকিন্স ‘ভাড়াটে যোদ্ধা’ হিসেবে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে সহযোগিতা করেছেন।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

অজিতের পারিশ্রমিক ২৪১ কোটি টাকা!

ভারতের তামিল সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা অজিত কুমার। ভক্তদের কাছে তিনি থালা অজিত নামেই পরিচিত। গত ১০ এপ্রিল মুক্তি পায় তার অভিনীত ‘গুড ব্যাড আগলি’ সিনেমা। মুক্তির পর বক্স অফিসে বেশ সাড়া ফেলেছিল এটি। এরই মাঝে গুঞ্জন উড়ছে, পারিশ্রমিক বাড়াতে যাচ্ছেন অজিত।

পিঙ্কভিলা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অজিত কুমারের পরবর্তী সিনেমা ‘একে৬৪’। এখনো সিনেমাটির নাম চূড়ান্ত হয়নি। গুঞ্জন অনুযায়ী, এ সিনেমার জন্য অজিত কুমার তার পারিশ্রমিক ১৫০ কোটি রুপি থেকে বাড়িয়ে ১৭৫ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০৭-২৪১ কোটি টাকার বেশি) করতে পারেন। 

আরো পড়ুন:

মুক্তির আগেই কত টাকা আয় করল ‘কানতারা টু’?

আমি খুব কেঁদেছিলাম: মোহিনী

অজিত কুমার মনে করেন—‘সাধারণ গল্পের সিনেমাকেও রাজকীয়ভাবে উপস্থাপন করা উচিত।’ এই কারণে, সিনেমাটির বাজেট সম্ভবত ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি রুপির মধ্যে হতে পারে। তবে অজিতের টিমের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি।

‘গুড ব্যাড আগলি’ সিনেমা নির্মাণ করেন পরিচালক আধিক রবিচন্দ্রন। ‘একে৬৪’ সিনেমাও তারই নির্মাণের কথা রয়েছে। রেসিং সিজনের বিরতিতে সিনেমাটির শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। কারণ অজিত কুমার তখন তার সিনেমার দিকেই সম্পূর্ণ মনোযোগ দেবেন। শোনা যাচ্ছে, এই সিনেমা সব ধরণের দর্শকদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হবে, যেখানে ‘গুড ব্যাড আগলি’ কেবল অজিত ভক্তদের কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছিল।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ