মেইঞ্জ ২, লেভারকুসেন ২। গতকাল বুন্দেসলিগায় মেওয়া অ্যারেনার ম্যাচটিতে কেউ না জিতলেও হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছে লেভারকুসেন। না, ২–২ ড্রয়ে শিরোপা জেতেনি দলটি। বরং গত বছর বুন্দেসলিগা জেতা দলটি এ মৌসুমে সেটি বায়ার্ন মিউনিখের কাছে খুইয়ে ফেলেছে।

তবে ২০২৪–২৫ বুন্দেসলিগার শেষ দিনের ম্যাচ ড্র করে অনন্য এক কীর্তি গড়েছে লেভারকুসেন। টানা দুই মৌসুম অ্যাওয়ে ম্যাচে অপরাজিত থাকল দলটি। জার্মান ফুটবলে এমন কীর্তি আর কারও নেই। লেভারকুসেনকে অনন্য এক কীর্তির মালিক বানিয়ে এ দিনই ক্লাবটির ডাগআউটের দায়িত্ব শেষ করেছেন জাবি আলোনসো। ৪৩ বছর বয়সী এই স্প্যানিশের রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হওয়ার জোর গুঞ্জন আছে।

২০২৩–২৪ মৌসুমে বুন্দেসলিগা জয়ের পথে ৩৪ ম্যাচের একটিতেও হারেনি লেভারকুসেন। ঘরে–বাইরে সব ম্যাচেই ন্যূনতম ১ পয়েন্ট হলেও তুলেছে আলোনসোর দল। লিগ শিরোপার পাশাপাশি হাতে তুলেছে জার্মান কাপও। এবার দুটি ট্রফির কোনোটিই জিততে পারেনি দলটি। লিগে ম্যাচও হেরেছে। তবে প্রতিপক্ষের মাঠে অপরাজেয় ধারা ঠিকই রয়ে গেছে।

গত আসরের মতো এবারও হোমে ১৭টি এবং অ্যাওয়েতে ১৭টি ম্যাচ খেলেছে লেভারকুসেন। এর মধ্যে হেরেছে ৩টিতে, সব কটিই ঘরের মাঠে। অ্যাওয়েতে খেলা ১৭ ম্যাচই অপরাজিত। মেইঞ্জের সঙ্গে ড্র করে টানা দ্বিতীয় মৌসুম অপরাজিত থেকে বায়ার্নের রেকর্ড ভেঙেছে লেভারকুসেন। বায়ার্ন ২০১১–১২ মৌসুমের ৩২তম ম্যাচ থেকে ২০১৩–১৪ মৌসুমের ২৭তম ম্যাচ পর্যন্ত টানা ৩৩টি অ্যাওয়ে ম্যাচে অপরাজিত ছিল।

আবার বায়ার্নের সেই সাফল্য এসেছিল দুজন কোচের হাত ধরে—জাপ হেইঙ্কস ও পেপ গার্দিওলা। লেভারকুসেনে সেটা একা আলোনসোর অধীন। বুন্দেসলিগায় একক কোচ হিসেবে সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ে ম্যাচে অপরাজিত থাকার কীর্তিটা উদো ল্যাটেকের ২৭ ম্যাচ (১৯৮৩–৮৭ সময়ে বায়ার্নের কোচ ছিলেন)। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতেই তাঁকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন আলোনসো।

অ্যাওয়েতে অপরাজিত থাকা টানা ৩৪ ম্যাচের মধ্যে লেভারকুসেন জিতেছে ২৩টিতে, ড্র করেছে বাকি ১১টি। আগামী ২২ আগস্ট ২০২৫–২৬ মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই রেকর্ডটা আরও লম্বা করে নেওয়ার সুযোগ পাবে লেভারকুসেন। তবে সে সময় আলোনসো আর ডাগআউটে থাকবেন না।

চুক্তির মেয়াদ এক বছর বাকি থাকলেও স্প্যানিশ এই কোচ এরই মধ্যে ক্লাব ছেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। ওদিকে কার্লো আনচেলত্তি ব্রাজিলে চলে যাচ্ছেন বলে তাঁর রিয়াল মাদ্রিদ কোচ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। তবে জার্মানি ছাড়ার আগে লেভারকুসেনকে অনন্য এক রেকর্ডই উপহার দিয়ে গেলেন আলোনসো।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপর জ ত থ ক ল ভ রক স ন র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ