নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারের সমালোচনায় হাসনাত
Published: 19th, May 2025 GMT
হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারের ঘটনায় সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি সমালোচনা করেন।
এর আগে আজ সকালে নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারের ঘটনাকে বিব্রতকর ঘটনা বলে উল্লেখ করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
আরো পড়ুন:
মামলাবাজির নাটক বন্ধ করেন, ফারিয়া প্রসঙ্গে নিপুন
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারের ঘটনা বিব্রতকর: ফারুকী
হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, “সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনিকে দেশ থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, শিরীন শারমিনকে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে বাসায় গিয়ে পাসপোর্ট করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল জানুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও মে মাসে এসেও শুরু হয়নি।”
৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে প্রাণ রক্ষার্থে রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার ৬২৬ জনকে আশ্রয় দিয়েছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
এ প্রসঙ্গে হাসনাত প্রশ্ন তুলে বলেন, “ইন্টেরিম, ৬২৬ জনের লিস্ট কোথায়? ৬২৬ জনকে নিরাপদে বের করে দিয়ে এখন নুসরাত ফারিয়াকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে বোঝাতে চাচ্ছেন আপনারা খুব বিচার করছেন? এগুলো বিচার নয়, এগুলো হাসিনা স্টাইলে মনোযোগ ডাইভারশন।”
থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় ১৮ মে সকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন নুসরাত ফারিয়া। সোমবার (১৯ মে) সকালে শুনানি নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। তার জামিনের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী শনিবার দিন ঠিক করেছে আদালত।
এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি গত মার্চ মাসে নায়িকা নুসরাত ফারিয়া, অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, আশনা হাবিব ভাবনা, নায়ক জায়েদ খানসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীসহ ২৮৩ জনের নামে আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে ভাটারা থানা গত ২৯ এপ্রিল তা এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এসময় গুলি চালানো হলে তা এনামুলের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নির্ভর ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ফারিয়া।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় ‘আশিকী’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে নায়িকা হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি গানও করেন ফারিয়া।
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চরম ব্যাটিং ধসে বিব্রতকর পরাজয়
১ উইকেটে বাংলাদেশের রান ১০০। ২৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে তখন স্বাগতিকদের কড়া জবাব দিচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। যে ছন্দপতনে স্কোরবোর্ডের চিত্রটা হয়ে যায় এরকম, ৮ উইকেটে ১০৫।
স্কোরাবোর্ডে মাত্র ৫ রান যোগ করতেই নেই ৭ উইকেট। চরম এই ব্যাটিং ধসে বিব্রতকর পরাজয়কে সঙ্গী করেছে বাংলাদেশ। ১৬৭ রানে অলআউট হয়ে ৭৭ রানে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে শ্রীলঙ্কা এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
লম্বা সময় পর ব্যাটিংয়ে এমন ধস দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। ২০০২ সালের ১০ অক্টোবর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও বাংলাদেশের এমন কিছু হয়েছিল। সেবারের অবশ্য আরো ভয়ংকর। ৩ উইকেটে ৮০ রান থেকে ৮৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
আরো পড়ুন:
টস হেরে ব্যাটিংয়ে ভারত, একাদশে তিন পরিবর্তন
৭৭ রানের বড় হারে বাংলাদেশের সিরিজ শুরু
উইকেট আহামরি কঠিন ছিল না। কিন্তু স্পিন বিষে নীল হয়েছে বাংলাদেশ। পারভেজ হোসেন ইমন শুরুতে ১৩ রানে আউট হন। সেখান থেকে ৭১ বলে ৭১ রানের জুটি গড়েন শান্ত ও তানজীদ। দুজন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন। তানজিদ তুলে নেন তার ক্যারিয়ারে চতুর্থ ফিফটি। বাংলাদেশের দলীয় রানও তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলে। এর পরপরই সব ওলটপালট।
বিপদটা নাজমুল হোসেন নিজেই ডাকলেন। বেশ ছন্দে যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন ডাবল রান নিতে গিয়ে রান আউট হলেন। শান্তর বিদায়ের পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার।
লিটন ৪ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি। ওপেনার তানজিদ দারুণ এক ক্যাচে ফেরেন। ৬২ রানে আউট তানজিদ। সেঞ্চুরির জন্য আরো অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাকে। দুজনকেই আউট করেন স্পিনার হাসারাঙ্গা। পরের ওভারে বল হাতে নেন কামিন্দু মেন্ডিস। এসেই তাওহীদ হৃদয়ের উইকেট উপচে ফেললেন। হাসারাঙ্গা পরের ওভারে সাজঘরে পাঠান বাংলাদেশের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকে। তাওহীদ ১, মিরাজ শূন্য রানে আউট। এরপর তানজিম হাসান, তানকিন আহমেদ সতীর্থদের দেখানো পথেই হাঁটেন।
নিশ্চিত পরাজয়ের ম্যাচে তখন কেবল জাকের আলীর পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর লড়াই। ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৫১ রান তুলে দলের স্কোর ১৬৭ রানে নিয়ে যান। তার আউটেই নিশ্চিত হয়ে যায় করুণ পরাজয়। ৭.৫ ওভারে ২ মেডেনে ১০ রানে ৪ উইকেট নেন হাসারাঙ্গা। তার বোলিং স্পেলে ৪০টিই ছিল ডট বল। এছাড়া মেন্ডিস ১৯ রানে নেন ৩ উইকেট।
এর আগে টস হেরে বোলিংয়ের শুরুটা ভালো করেছিল বাংলাদেশ। ২৯ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা তাসকিন আহমেদ সাজঘরে ফেরত পাঠান নিশান মাদুশঙ্কা (৬) ও কামিন্দু মেন্ডিস (০)। আরেকপ্রান্তে পেসার তানজিম হাসান সাকিব আউট করেন পাথুম নিশাঙ্কাকে (০)। তৃতীয় শ্রীলঙ্কা প্রতিরোধ পায় কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কার ব্যাটে। ৭৭ বলে ৬০ রান যোগ করেন তারা। প্রতি আক্রমণে গিয়ে রান করায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশকে। তাদেরকে লড়াইয়ে ফেরান স্পিনার তানভীর। অভিষিক্ত এই স্পিনার মেন্ডিসকে এলবিডব্লিউ করেন।
এরপর আসালাঙ্কা ও লিয়ানাগে জুটি বেঁধে ৬৪ রান যোগ করেন। যা ছিল শ্রীলঙ্কার ইনিংসে সর্বোচ্চ রান। মনে হচ্ছিল তাদের ব্যাটে বড় কিছুই করবে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তাদের পথ আটকে দেন শান্ত। নিয়মিত বোলাররা যখন রান পাচ্ছিলেন না তখন অধিনায়ক মিরাজ শান্তকে বোলিংয়ে এনে জুটি ভাঙেন।
লিয়ানাগে ২৯ রানে ক্যাচ দেন সীমানায়। সেখান থেকে আসালাঙ্কার একার লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কা আড়াইশ রানের কাছাকাছি পুঁজি পায়। লঙ্কান অধিনায়ক ১২৩ বলে ১০৬ রান করেন ৬ চার ও ৪ ছক্কায়। শেষ দিকে মিলান রত্নায়েকের ও হাসারাঙ্গার ২২ রানের দুটি ইনিংসে আড়াইশ রানের কাছাকাছি পুঁজি পায় লঙ্কানরা।
দলে ফিরে ৪৭ রানে ৪ উইকেট নেন তাসকিন। ২ মেডেন ছিল তার বোলিং স্পেলে। ৩ উইকেট পেয়েছেন তানজিম হাসান। ১টি করে উইকেট নেন তানভীর ও শান্ত। মিরাজ ও মোস্তাফিজ ছিলেন উইকেটশূন্য।
সেঞ্চুরি করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন আসালাঙ্কা।
অসহায় আত্মসমর্পণে বাংলাদেশ সিরিজে পিছিয়ে গেল। ৫ জুলাই একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। মিরাজের অধিনায়কত্বের যাত্রাটা শুরু হলো পরাজয় দিয়ে। সিরিজে টিকে থাকতে পারবে তো বাংলাদেশ?
ঢাকা/ইয়াসিন