ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি ৭ বছর ধরে পলাতক। এর মধ্যে আটজন জামিনে মুক্ত হয়ে এবং আটজন হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক। দফায় দফায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও তাদের হদিস মিলছে না। ২০১৮ সালে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় ৩৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন ফেনীর আদালত। 
রাষ্ট্রপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে থাকা মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ২৩ আসামির মধ্যে একজন মারা গেছেন। অন্য ২২ আসামির আপিল বর্তমানে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে নিষ্পত্তির জন্য কার্যতালিকাভুক্ত রয়েছে। শিগগির আপিলের শুনানি শুরু হবে। 

এদিকে পলাতক আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া এবং হাইকোর্টে ৭ বছর ধরে আপিল ঝুলে থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন একরামুল হকের বড় ভাই ও মামলার বাদী জসিম উদ্দিন। তিনি সমকালকে বলেন, রায় হওয়ার পর ৭ বছর পেরিয়েছে। অথচ এক আসামিরও ফাঁসি হলো না। পলাতকরা অধিকাংশই বিদেশে অবস্থান করছেন। এরাই গডফাদার। তাদের গ্রেপ্তারে কোনো উদ্যোগ নেই। তিনি দ্রুত আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের বিলাসী সিনেমা হলের সামনে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি একরামকে গুলি করে, কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর বড় ভাই জসিম উদ্দিন মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ এ মামলায় রায় দেন ফেনীর দায়রা জজ আদালত। রায়ে ৩৯ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। তবে মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী মিনারসহ ১৬ জনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। 

রায়ে বলা হয়, স্থানীয় নির্বাচন থেকে আসামিদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের কারণেই একরামকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর বিধি অনুযায়ী বিচারিক আদালত থেকে রায়ের নথিসহ ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) আবেদন হাইকোর্টে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরাও জেল আপিল দায়ের করেন। মামলাটি শুনানির জন্য হাইকোর্টে কার্যতালিকাভুক্ত হয়েছে। 
দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ১৬ আসামি হলেন– জাহিদ হোসেন জিহাদ, আবিদুল ইসলাম আবিদ, নাফিজ উদ্দিন অনিক, আরমান হোসেন কাউসার, জাহেদুল হাসেম সৈকত, জসিম উদ্দিন নয়ন, এমরান হোসেন রাসেল ওরফে ইঞ্জি.

রাসেল, এরফান ওরফে আজাদ, একরাম হোসেন ওরফে আকরাম, শফিকুর রহমান ওরফে ময়না, কফিল উদ্দিন মাহমুদ আবির, মোসলে উদ্দিন আসিফ, ইসমাইল  হোসেন ছুট্টু, মহিউদ্দিন আনিস, বাবলু ও টিটু। 

পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে ফেনী সদর মডেল থানার ওসি মো. সামসুজ্জামান সমকালকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। ২০২১ সালে সর্বশেষ এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২২ জন কারাগারে। একজন কারাগারে মারা গেছেন।
এদিকে বিচারিক আদালতের রায়ে খালাস পাওয়া আসামিদের সাজা নিশ্চিতে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এর শুনানি ও ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল শুনানির সময় গ্রহণ করা হবে। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী সমকালকে বলেন, আপিলটি বর্তমানে শুনানির জন্য কার্যতালিকায়। আসাসিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী সমকালকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আপিল নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছি। আশা করছি শিগগির এর শুনানি হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আস ম র জন য একর ম ৭ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাম ঝরে একজনের, নম্বর জোটে সবার

ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাধ্যমিকে কর্মবিরতি, বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি
  • ইমরান খানকে কি ভুট্টোর পরিণতি বরণ করতে হচ্ছে
  • তারেক রহমান না এলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, এমন নয়: তৌহিদ হোসেন
  • সাগরে নতুন ৬৫ প্রজাতির মাছের সন্ধান
  • কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হলো বুক অলিম্পিয়াড
  • কেমন ছিলেন সাহাবি যুগের নারীরা
  • ‘সালাতুল হাজাত’ নামাজে যে দোয়া পড়বেন
  • মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের কর্মবিরতি, রোগী ভোগান্তি চরমে
  • সাখাওয়াত স্যার, আপনার কাছে জাতির যত ঋণ
  • ঘাম ঝরে একজনের, নম্বর জোটে সবার