সেতু নির্মাণের চেয়ে বিদ্যমান সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি
Published: 19th, May 2025 GMT
নতুন সেতু নির্মাণের চেয়ে বিদ্যমান সেতুগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে সেতু দীর্ঘায়ু ও টেকসই করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে। পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীল সেতু নির্মাণে মনোযোগী হতে হবে।
‘বাংলাদেশ ব্রিজেস: আ রোডম্যাপ ফর সেফটি, সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড হ্যাজার্ড মিটিগেশন’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা উঠে আসে। সোমবার সকালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কাউন্সিল ভবনের সেমিনার কক্ষে এ সেমিনার হয়। সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প–২–এর উদ্যোগে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং বুয়েট–জিডপাস যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন। তিনি বলেন, সব সংস্থা মিলে ম্যানুয়াল বানিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এখানে বুয়েট, সড়ক ও জনপথ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) আলাদাভাবে কাজ করলে হবে না।
প্রধান আলোচক যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটনের অধ্যাপক নুর ইয়াজদানি বলেন, উন্নত বিশ্বের আলোকে একটি ম্যানুয়াল তৈরি করতে হবে। কিন্তু এটি হবে নিজের দেশের প্রেক্ষাপটে। ভবনের যেমন বিএনবিসি কোড আছে, তেমনি বাংলাদেশের একটি সেতু ম্যানুয়াল করতে হবে। নতুন সেতু নির্মাণের চেয়ে বিদ্যমান সেতুগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে সেতুর দীর্ঘায়ু ও টেকসই করা জরুরি।
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক তানভীর মঞ্জুর বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাই জলবায়ু সহনশীল সেতু নির্মাণে মনোযোগী হতে হবে। যাতে এমন কৌশল বা পদক্ষেপ নেওয়া যায় যা পরিবর্তনশীল পরিবেশে সহজে মানিয়ে নিতে পারে।
সেমিনারে মডারেটরের দায়িত্বে ছিলেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিক কাদির।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যে জমিতে ঠাঁই মিলেছে সেখানেই লুটপাট
সরকারি ফেরি চালক হিসেবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জমির ওপর করা একটি ঘরে থাকার সুযোগ মেলে আবুল বাশারের। তাতে করে মাসে সামান্য যে টাকা বেতন পেতেন, তার ওপরে বাড়ি ভাড়ার বোঝা চাপেনি। অথচ আশ্রয় পাওয়া সেই আঙিনার গাছ, বালু, পাথর সবই সাবাড় করে দিয়েছেন তিনি।
নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার বানশা গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার। তিনি ছাতক সওজের একজন স্থায়ী ফেরিচালক ছিলেন। সেই সুবাদে ছাতক পৌর এলাকার দক্ষিণ বাগবাড়িতে সুরমা নদীর তীরবর্তী সওজের একটি সরকারি পাকা ঘরে বসবাস করতেন বাশার। বছর ৩-৪ আগে অবসরে যান তিনি। তবে এখনও সে ঘরেই আছেন।
স্থানীয়রা জানান, সওজের মালিকানাধীন এই জমিতে বিভিন্ন ধরনের গাছ ছিল। এছাড়া মাটি, বালু ও পাথর রাখা ছিল নানা স্থানে। সেই সঙ্গে বেশকিছু যন্ত্রাংশও দেখেছেন তারা। একটু একটু করে তার সবই সাবাড় করেছেন আবুল বাশার ও তাঁর ছেলে সাজ্জাদ মাহমুদ মনির।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি এই জমি নিজেদের করে নিয়েছেন তারা। বাশারের ছেলে মনির সেখানে বসে চালাচ্ছেন মাদক বিক্রির কারবার। এদিকে নিজেদের জমির দখল নিশ্চিত করতে সম্প্রতি সওজের একাধিক অভিযান পরিচালিত হলেও বাশার ও মনিরের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। সরকারি জমিতে থেকে, সেই জমিতে থাকা সরকারি সম্পদ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের মতো অপরাধ সওজ কর্তৃপক্ষ গুরুত্বের সঙ্গে আমলে না নেওয়ায় বিস্মিত স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে আপত্তি বা অভিযোগ তুললে, প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা না নিয়ে সতর্ক করেই দায়িত্ব সারছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সূত্রের তথ্য মতে, বছর কয়েক আগে চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও সওজের এক অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ওই বাসায় আছেন আবুল বাশার।
এই অঞ্চলে এর আগে সওজের ভূমি থেকে পাথর, মাটি ও গাছ লুটের অভিযোগে ২০২৪ সালে এক ট্রাকচালকসহ দু’জনকে আটক করেছিল সেনাবাহিনী। সে কাজের মূল হোতা হিসেবে সে সময় সামনে আসে আবুল বাশারের ছেলে মনিরের নাম। এ ঘটনায় থানায় সে সময় মামলা হয়।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে তাঁর মাদক সেবনের ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ হয়। জানা গেছে, বর্তমানে মনির তাঁর লোকজন নিয়ে নদী ও সড়ক পথ এবং বালুমহালে চাঁদা আদায় করেন। বিগত সরকারের সময় নিজেকে যুবলীগ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে মাদক চক্র গড়ে তোলেন মনির। এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে পাওয়া যায়নি মনিরকে। অভিযুক্ত সাজ্জাদ মাহমুদ মনিরের নানা অপকর্মের বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। এদিকে এসব অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন তাঁর বাবা আবুল বাশার।
ছাতক সড়ক ও জনপথের (সওজ) উপবিভাগীয় কার্যালয়ের প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন বলেন, সওজ কর্তৃপক্ষ লাফার্জ ফেরিঘাটসংলগ্ন অবৈধ ঘরগুলো উচ্ছেদ করেছে। চাকরি শেষ হওয়ার পরও সরকারি বাসায় কীভাবে বসবাস করছেন বাশার, এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, তাঁর ছেলে মনিরের অপকর্মের জন্য অফিসে ডেকে এনে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি, এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দেননি এই কর্মকর্তা।