পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র / চলচ্চিত্র
সেরা চলচ্চিত্র
আকরাম খান (‘নকশীকাঁথার জমিন’)
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে নারীর শক্তি, ত্যাগ, বঞ্চনা ও সংগ্রাম যে নকশীকাঁথার জমিন–এ ফুটে উঠেছে এবং দর্শকেরা দেখে তা উপলব্ধি করতে পেরেছে ও বুঝতে পেরেছে যে মুক্তিযুদ্ধ ছিল গণমানুষের যুদ্ধ, এটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। জুরিদের ধন্যবাদ নকশীকাঁথার জমিনকে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের মনোনয়ন দেওয়ার জন্য।
আদনান আল রাজীব (‘প্রিয় মালতী’)
‘প্রিয় মালতী’ আমার প্রযোজিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এই কাজের মাধ্যমে আমি এমন একটি গল্পের সঙ্গে থাকতে চেয়েছি যা বাস্তব, যা সাহসী এবং যার একটি স্বতন্ত্র কণ্ঠ আছে; একটি বার্তা যা শোনা প্রয়োজন। এই ছবির প্রতিটি দৃশ্যের মাধ্যমে আমরা এমন এক সত্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, যা সমাজে হয়তো অনেক সময় চুপচাপ পড়ে থাকে। মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০২৪-এ সমালোচকদের বিচারে এ কাজটি চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছে, এটি নিঃসন্দেহে আমাদের টিমের জন্য এক বিশাল প্রাপ্তি। আমরা কৃতজ্ঞ সম্মানিত বিচারকদের প্রতি, যাঁরা আমাদের গল্প এবং উদ্দেশ্যকে বুঝেছেন ও গ্রহণ করেছেন। এবং অবশ্যই আমাদের দর্শকদের প্রতি, যাঁদের ভালোবাসা ও সাড়া ছাড়া এই যাত্রা অসম্পূর্ণ থেকে যেত।
গিয়াস উদ্দিন সেলিম (‘কাজলরেখা’)
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার বাংলাদেশের একমাত্র নিরপেক্ষ পুরস্কার। আমি নিজেও কয়েকবার নাটক, চলচ্চিত্র বিভাগে জুরি হিসেবে ছিলাম। কখনো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো প্রকার চাপ থাকে না। তাই বলতে পারি, এই পুরস্কার নিরপেক্ষতা রাখে। আগে নিজেও পুরস্কার পেয়েছি; এবার মনোনীত হতে পেরে আনন্দিত, গর্বিত। কৃতজ্ঞতা জানাই সমালোচক প্যানেলকে।
সেরা পরিচালক
নূরুল আলম আতিক (‘পেয়ারার সুবাস’)
প্রথমেই মনে আসছে ‘পেয়ারার সুবাস’–এর সহযাত্রী, বন্ধু, অকাল প্রয়াত অভিনেতা আহমেদ রুবেলকে। প্রথমবার সিনেমার জন্য মেরিল-প্রথম আলোর মনোনয়ন পেয়ে কৌতূহলী হয়েছি, ভালো লাগছে। পেয়ারার সুবাস সিনেমার প্রযোজক, শিল্পী-কলাকুশলীসহ পুরো টিমের জন্য অভিনন্দন। আমাদের ছবি ৪৫তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে মূল প্রতিযোগিতায় মনোনীত হয়েছিল এবং এ বছরের আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসবে ‘হীরালাল সেন পদক’ অর্জন করেছে। প্রথম আলোর এই উৎসবে মনোনয়নপ্রাপ্তিতে আয়োজক ও সমালোচকদের ধন্যবাদ। অন্যান্য প্রতিযোগীর জন্য রইল শুভকামনা। কৃতজ্ঞতা পেয়ারার সুবাস-এর পাশে থাকা প্রতিটি মানুষের জন্য। বাংলাদেশের সিনেমা নিজের পরিচয় স্পষ্ট করুক। ধন্যবাদ।
রবিউল আলম রবি (ফরগেট মি নট)
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০২৪-এ সমালোচকদের বিচারে চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়াটা আমার জন্য অনেক আনন্দের। আমি কৃতজ্ঞ সেসব মানুষের প্রতি, যাঁরা আমার কাজ দেখেছেন, সাপোর্ট করেছেন। টিমের সবাইকে ধন্যবাদ—এই যাত্রায় ওরাই সবচেয়ে বড় সাপোর্ট সিস্টেম। মনোনয়ন পাওয়াটা শুধু আনন্দ নয়, এটা ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণাও। ধন্যবাদ সবাইকে পাশে থাকার জন্য।
শঙ্খ দাশগুপ্ত (‘প্রিয় মালতী’)
‘প্রিয় মালতী’ আমার পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র। সেই চলচ্চিত্রের জন্য মেরিল-প্রথম আলোর মতো সম্মানজনক আয়োজনে সমালোচকদের বিচারে তিনটা ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছি—সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালক, সেরা অভিনেত্রী। এটা আমাদের পুরো টিমের জন্য অনেক আনন্দের খবর। আমরা রোমাঞ্চিত কী হয় দেখার জন্য। আমার মনে হয় জুরিরা আমাদের যে সম্মানে সম্মানিত করেছেন, সেটার জন্য আমরা জুরি ও মেরিল-প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ।
সেরা অভিনেতা
প্রীতম হাসান (‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’)
সমালোচক পুরস্কার আমার অনেক পছন্দের। এখানে অনেক সিনিয়র গুণীজন বাছাইকৃত কাজ থেকে সেরা নির্ধারণ করে মনোনয়ন দিয়ে থাকেন। তাঁরা কাছের মানুষ দূরে থুইয়ার ফারহানকে বিবেচনায় রেখে মনোনয়ন দেওয়াটাকেই আমি অনেক বড় পুরস্কার মনে করছি।
মামনুন হাসান ইমন (‘মায়া’)
সব সময় ভালো কাজের জন্য অপেক্ষা করেছি, মায়া ওয়েব ফিল্মে সেই সুযোগ পেয়ে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সেই চেষ্টার ফল এবার পেলাম সমালোচকদের কাছ থেকে। সম্মানিত বিচারকেরা আমার কাজকে ভালো মনে করে আমাকে নির্বাচন করেছেন; তাই তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। এই মনোনয়ন আরও ভালো কাজ করার প্রতি দায়িত্ব বাড়িয়ে দিল।
রওনক হাসান (‘নয়া মানুষ’)
অসংখ্য ধন্যবাদ, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা প্রথম আলো ও সম্মানিত জুরিদের। আমি ভীষণ ভীষণ অনুপ্রাণিত বোধ করছি, সম্মানিত বোধ করছি।
সেরা অভিনেত্রী
তাসনিয়া ফারিণ (‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’)
গত বছর খুব একটা কাজ করা হয়নি, কিন্তু যেগুলো করেছি অসাধারণ প্রতিক্রিয়া পেয়েছি দর্শক থেকে গুণীজনের কাছে। সমালোচক পুরস্কারে কাছের মানুষ দূরে থুইয়ার জন্য মনোনয়ন পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ তাঁদের প্রতি, যাঁরা কাজটি দেখে আমাকে মনোনীত করেছেন। আমি জানি না কে পুরস্কার পাবে, তবে আমি আনন্দিত জুরিরা আমাকে মনোনয়নের স্বীকৃতি দিয়েছেন।
মেহজাবীন চৌধুরী (‘প্রিয় মালতী’)
প্রিয় মালতী আমার জন্য শুধুই একটি চরিত্র নয়, বরং একটি আবেগ, একটি আত্মিক যাত্রা। এই চরিত্রের প্রতিটি মুহূর্ত আমি গভীরভাবে অনুভব করেছি। সমালোচকদের বিচারে মনোনয়ন পাওয়াটা এই অনুভবেরই এক প্রামাণ্য রূপ। আমি কৃতজ্ঞ নির্মাতা, সহশিল্পী ও দর্শকদের প্রতি, যাঁদের ভালোবাসা ছাড়া এই সম্মান পাওয়া সম্ভব হতো না।
সারিকা সাবরিন (‘মায়া’)
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০২৪–এ সমালোচকদের বিচারে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়ে আমি অত্যন্ত খুশি এবং ধন্যবাদ জানাতে চাই সম্মানিত জুরিবোর্ড ও মেরিল-প্রথম আলোকে। মায়া কাজটি আমার খুবই হৃদয়ের কাছের। রাফী (রায়হান) অনেক বড় মাপের নির্মাতা। আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি কাজটির জন্য, দর্শক অনেক ভালো রেসপন্স দিয়েছেন। ভালো কিছু আশা করছি। আমার সঙ্গে যাঁরা মনোনয়ন পেয়েছেন, তাঁদের জন্য শুভকামনা, তাঁরা সবাই ভালো অভিনেত্রী।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র ল প রথম আল চলচ চ ত র ম র জন য কর ছ ন আম দ র আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ