চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে আসা ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর, মুচলেকায় ছাড়
Published: 21st, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে আসা নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের ওই কর্মীর নাম ইমন চন্দ্র বর্মণ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগে তাঁকে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ইমন চন্দ্র বর্মণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের চিঠি তাঁকে পাঠিয়েছিল প্রশাসন। তবে ইমনের দাবি, তিনি হামলায় জড়িত ছিলেন না। প্রশাসন থেকে তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হলেও এ বহিষ্কারাদেশ এখনো বহাল রয়েছে।
ইমন ও তাঁর সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার একটি কোর্সের টিউটোরিয়াল পরীক্ষা থাকায় ইমন আজ ক্লাস করতে এসেছিলেন। ক্লাস করে ক্যাম্পাস থেকে ফেরার পথে রেলওয়ে স্টেশনে ছাত্রদলের কর্মীরা তাঁকে আটক করেন। এরপর সেখান থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় নিয়ে মারধর করার পর ইমনকে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে আসেন তাঁরা। সেখানে বহিষ্কারের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তিনি ক্যাম্পাসে আসবেন না মর্মে মুচলেকা দেন। এরপর তাঁকে ছেড়ে দেয় প্রক্টরিয়াল বডি।
ছাত্রদলের যেসব কর্মী ইমনকে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে যান, তাঁদের একজন সাঈদ মো.
রেদোয়ান ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মামুনুর রশিদের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। জানতে চাইলে মামুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, বহিষ্কারাদেশ স্পষ্ট লেখা রয়েছে, বহিষ্কৃতদের কেউ ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না। এরপরও নিষিদ্ধঘোষিত দলের এক কর্মী ক্যাম্পাসে এসেছেন। তাঁদের কাছে তথ্য ছিল, ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীরা একত্র হচ্ছেন। নাশকতার পরিকল্পনা করছেন। তাঁরা এটা প্রতিহত করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বহিষ্কারাদেশ থাকার পরও ক্লাস করতে এসেছিলেন একজন। তিনটি ক্লাসও করেছেন। বিষয়টি তাঁদের জানা ছিল না। তাঁর সহপাঠীরা দাবি করেছিলেন, ক্লাস করতে আসার পর তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন। তবে এ ঘটনার সত্যতা পাননি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।
আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।
লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।