চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে আসা নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের ওই কর্মীর নাম ইমন চন্দ্র বর্মণ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগে তাঁকে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ইমন চন্দ্র বর্মণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের চিঠি তাঁকে পাঠিয়েছিল প্রশাসন। তবে ইমনের দাবি, তিনি হামলায় জড়িত ছিলেন না। প্রশাসন থেকে তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হলেও এ বহিষ্কারাদেশ এখনো বহাল রয়েছে।

ইমন ও তাঁর সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার একটি কোর্সের টিউটোরিয়াল পরীক্ষা থাকায় ইমন আজ ক্লাস করতে এসেছিলেন। ক্লাস করে ক্যাম্পাস থেকে ফেরার পথে রেলওয়ে স্টেশনে ছাত্রদলের কর্মীরা তাঁকে আটক করেন। এরপর সেখান থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় নিয়ে মারধর করার পর ইমনকে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে আসেন তাঁরা। সেখানে বহিষ্কারের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তিনি ক্যাম্পাসে আসবেন না মর্মে মুচলেকা দেন। এরপর তাঁকে ছেড়ে দেয় প্রক্টরিয়াল বডি।

ছাত্রদলের যেসব কর্মী ইমনকে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে যান, তাঁদের একজন সাঈদ মো.

রেদোয়ান। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বহিষ্কৃত হওয়ার পরও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মী ক্লাস করছেন, এমন খবর পেয়ে তাঁরা ইমনকে আটক করেছিলেন। এরপর প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে গেছেন।

রেদোয়ান ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মামুনুর রশিদের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। জানতে চাইলে মামুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, বহিষ্কারাদেশ স্পষ্ট লেখা রয়েছে, বহিষ্কৃতদের কেউ ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না। এরপরও নিষিদ্ধঘোষিত দলের এক কর্মী ক্যাম্পাসে এসেছেন। তাঁদের কাছে তথ্য ছিল, ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীরা একত্র হচ্ছেন। নাশকতার পরিকল্পনা করছেন। তাঁরা এটা প্রতিহত করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বহিষ্কারাদেশ থাকার পরও ক্লাস করতে এসেছিলেন একজন। তিনটি ক্লাসও করেছেন। বিষয়টি তাঁদের জানা ছিল না। তাঁর সহপাঠীরা দাবি করেছিলেন, ক্লাস করতে আসার পর তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন। তবে এ ঘটনার সত্যতা পাননি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ল স করত ক ল স কর

এছাড়াও পড়ুন:

এবার এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত কুয়েট শিক্ষকদের

শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকরা। তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের মতো একাত্মতা জানিয়েছে শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ। 

বুধবার সাধারণ সভা করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনে জড়ো হন। এরপর আধা ঘণ্টা তারা উপাচার্যের কক্ষে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে শিক্ষকরা দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের বারান্দায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। 

এ কর্মসূচি শেষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, নতুন উপাচার্য যোগদানের পর শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার জন্য আমরা ৭ কার্যদিবস সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে পারেননি। শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারীদের শাস্তি কার্যকর হয়নি। 

তিনি বলেন, আমরা ২ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাইনি। তিনি দাপ্তরিক কাজ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছেন। আমরা উপাচার্যের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না। এর দায়ভার উপাচার্যকেই নিতে হবে। তিনি কবে ক্যাম্পাসে ফিরবেন শিক্ষকরা কেউ তা জানেন না। 

ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছি বুধবার দুপুর ১টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে হবে। তা না হলে আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। এটা যদি এমন হয় যে উপাচার্যের একক সিদ্ধান্তের কারণে আমরা ক্লাসে ফিরতে পারব না, তাহলে আমাদের ১ দফা দাবি জানাতে হবে। উপাচার্য দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কিনা এই সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর দুপুর ১টায় সাধারণ সভা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, উপাচার্য বুধবার দুপুর ১টার মধ্যে শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন না করলে তার অপসারণের এক দফা দাবিতে ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষকরা আন্দোলনে নামবেন।

এদিকে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ সেখানে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, নতুন করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই। আগের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে তারা একমত। তবে নিরাপরাধ কেউ যেন সাজা না পায়। তারা দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে চান।

তবে গত ৩ মাস ধরে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা গত ২ দিন কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। তারা আপাতত চুপচাপ রয়েছে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা। এ অবস্থায় সেশনজট বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী। শুরু হয়নি নতুন ব্যাচের ক্লাসও। ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১৬ দিনেও ক্লাসে ফেরেনি শিক্ষকরা। এছাড়া ১৮ মে থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকেও বিরত রয়েছেন শিক্ষকরা।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশে স্টারলিংকের পার্টনার কারা, গ্রাহক হবেন কীভাবে
  • পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচ কবে, কখন
  • নুসরাতের সঙ্গে সংসার ভাঙার গুঞ্জন, নীরবতা ভাঙলেন যশ
  • ইশরাককে শপথ না পড়ানোর রিট আবেদনের আদেশ আবারো পেছাল
  • রাজনীতিতে ব্যয় কমাবেন ইলন মাস্ক, থাকবেন টেসলার দায়িত্বে
  • সারাদিন সুস্থ থাকতে সকালে যে সাতটি কাজ করতে পারেন
  • চাকসু নীতিমালা প্রকাশ হবে বৃহস্পতিবার
  • অবৈধ আর্থিক লেনদেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাময়িক বরখাস্ত
  • এবার এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত কুয়েট শিক্ষকদের