ভৈরবে মালবোঝাই ট্রাক ঢুকে পড়ল বাজারে, প্রাণ গেল একজনের
Published: 23rd, May 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মালবোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাজারে ঢুকে পড়ে। এতে ট্রাকচাপায় একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন চারজন।
আজ শুক্রবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আকবরনগর বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম আলিম মিয়া (৫০)। তাঁর বাড়ি আকবরনগর গ্রামে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন কালিকাপ্রসাদ গ্রামের আঙ্গুর মিয়া (৪০), ইউনুস মিয়া (৪৫), আকবরনগর গ্রামের নয়ন মিয়া (১৭) ও পৌর শহরের কমলপুর এলাকার স্বপন মিয়া (২৫)।
আহত ব্যক্তিদের প্রথমে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোয়েবুর রহমান বলেন, চারজন আহতকে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে আঙ্গুর মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্য তিনজন এখানে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আকবরনগর বাসস্ট্যান্ডটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানে সড়কের পাশে বাজার বসে, যা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে। এ এলাকায় সব সময়ই যানজট থাকে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের হায়দার মিয়া (৩০) বলেন, ট্রাকটি দ্রুতগতিতে আসছিল এবং সোজা চলছিল না, হেলেদুলে আসছিল। তখন সড়কের পাশে বেশ কিছু অটোরিকশা দাঁড়িয়ে ছিল। সাধারণত এ জায়গায় গাড়িগুলো গতি কমিয়ে চলে। কিন্তু ট্রাকটির চালক গতি কমাতে পারেননি। একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দিয়ে ট্রাকটি বাজারে ঢুকে পড়ে।
ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহাবুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা নয়, সবার কাছে দোয়া চাইলেন ফরিদা পারভীন
বাংলা লোকসংগীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী, লালনসাধনার অঙ্গনে এক উজ্জ্বল তারকা ফরিদা পারভীন আজ অসুস্থ। তাঁর এই অসুস্থতা যেন কেবল একজন শিল্পীর শরীরের দুর্বলতা নয়-এ যেন বাংলা গানের এক প্রিয় কণ্ঠের স্তব্ধ হয়ে যাওয়া। কিন্তু তবুও, এই দুঃসময়ে আর্থিক সহায়তার কথা উচ্চারণ করেননি তিনি। বরং হাত জোড় করে চেয়েছেন-সবাই যেন তার জন্য দোয়া করে।
যদিও ইতোমধ্যে ফরিদা পারভীনের অনেক শুভাকাঙ্খীই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়ে আসছিলেন, আর্থিক সঙ্কটের কারণে ফরিদা পারভীনের চিকিৎসা হচ্ছিল না। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। তবে বিষয়টি একেবারেই অস্বাীকার করেছেন শিল্পীর ছেলে ইমাম জাফর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রান্তিকর তথ্যকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমরা আমাদের মায়ের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম। প্রয়োজন হলে তার নিজস্ব সঞ্চয় দিয়েই চিকিৎসা সম্ভব। তাই কেউ যেন ভেবে না বসেন, মা আর্থিক সংকটে আছেন।’
একজন শিল্পী, যিনি সারাজীবন আমাদের হৃদয়ে গেয়েছেন আত্মার গান, মানবতার গান, আজ তার পাশে দাঁড়ানোর সময়। আর তিনি চেয়েছেন শুধু একটি জিনিস-প্রার্থনা।
ইমাম জানান, ‘আম্মার কিডনির সমস্যাটা ২০১৯ সাল থেকেই চলছে। এখন ডায়ালাইসিস শুরুর পর শরীর আরও দুর্বল হয়ে গেছে। আমাদের সবাই—আমি, আমার ভাইবোন, তাদের জীবনসঙ্গীরা-নিজ হাতে আম্মার সেবা করছি। এই সময়ে সরকার থেকেও জানতে চাওয়া হয়েছে, কোনো সহায়তা দরকার কি না। কিন্তু মা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি তা নিতে চান না।’
এই প্রজ্ঞাময় শিল্পীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখে ইমাম জাফর সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন-গুজব নয়, দোয়া ছড়ান।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মা যেন আবার গানে ফিরতে পারেন, আবার মঞ্চে দাঁড়িয়ে গেয়ে ওঠেন-এই প্রার্থনা করি। আপনারাও তার জন্য দোয়া করবেন।’
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে ফরিদা পারভীনের অবদান অনস্বীকার্য। নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান দিয়ে শুরু করে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে তালিম নেওয়া লালনের গান দিয়ে যিনি পৌঁছে গেছেন বাংলার হৃদয়ে। আজ সেই শিল্পীর জন্যই আমাদের প্রার্থনা দরকার।