পল্লবীতে অটোরিকশাচালককে হাতুড়ি দিয়ে হত্যা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫
Published: 23rd, May 2025 GMT
ঢাকার পল্লবীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে হাতুড়ি দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত চক্রের মূল হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ছিনতাই হওয়া গাড়িটিও কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে মিরপুরে র্যাব-৪–এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৪–এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে র্যাব-৪, র্যাব-৯ ও র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে ঢাকা, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. সৌরভ সরকার (২০), মো. ইয়াছিন মিয়া (২০), মো. মুসা (২৫), মো. দুলাল মিয়া (৩২) ও মো. শাহজালাল (২৬)। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
র্যাব বলছে, চক্রটিতে মোট ছয় থেকে সাতজন সদস্য রয়েছেন এবং তাঁদের সবার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
র্যাব আরও বলেছে, ১৬ মে পল্লবীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকার ৪ নম্বর গেটসংলগ্ন স্থান থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে র্যাব। পরে জানা যায় নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল অজিদ ওরফে বাচ্চু। তিনি পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে হত্যাকারীদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়।
র্যাব জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন বন্ধু—মুসা, ইয়াছিন ও সৌরভ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চুরি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। টাকার প্রয়োজনে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন তাঁরা। ১৫ মে সন্ধ্যায় সৌরভ ও ইয়াছিন ঢাকায় আসেন। রাতভর অপেক্ষার পর তাঁরা শ্যামলী ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে থেকে আবদুল বাচ্চুর অটোরিকশায় যাত্রী হিসেবে ওঠেন।
র্যাব আরও জানায়, সৌরভ চালককে নিয়ে যান ৬০ ফিট এলাকার পানির ট্যাংকির সামনে, যেখানে ইয়াছিন আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তাঁরা চালককে অটোরিকশা ঘোরাতে বললে তিনি গাড়ি থেকে নামেন। সেই সুযোগে পেছন থেকে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন তাঁরা। পরে মুসার মুঠোফোনে পরামর্শ নিয়ে নিশ্চিত করা হয় যে চালক মারা গেছেন। হত্যার পর লাশ ফেলার জন্য একাধিক স্থানে ঘোরাঘুরি করেন তাঁরা। অবশেষে ডিওএইচএস এলাকার নির্জন এক প্রাচীরের পাশে লাশ ফেলে দেন এবং সাভারে পালিয়ে যান।
ঘটনার পরদিন সকালে তাঁরা অটোরিকশা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। পূর্বাচলে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন শাহজালাল ও দুলাল। তাঁরা চোরাই যানবাহন চক্রের সদস্য বলে জানায় র্যাব। পরে অটোরিকশাটি ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এই চক্রের নেতা আল আমিন অটোরিকশাটি নিয়ে কুমিল্লার দেবীদ্বারে যান। সেখানে একটি ওয়ার্কশপে যানটির রং ও কাভার পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কল প ছ নত ই চ লকক
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি হওয়া ৯৪ ভরি সোনা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি হওয়া ৯৪ ভরি ১৪ আনা সোনা উদ্ধার করেছে মুন্সিগঞ্জ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান জেলার পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) উপপরিদর্শক আক্তারুজ্জামান মুন্সি, মাই টিভির প্রতিনিধি মো. রমজান, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি রমজান আলী, মাইক্রোবাসচালক জাকির হোসেন ও মিরপুরের জুয়েলারি ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭ ডিসেম্বর বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যাত্রীবাহী বাসে করে সোনা নিয়ে যাচ্ছিলেন দুই ভাই। বাসটি গজারিয়া এলাকায় পৌঁছালে পুলিশের পোশাক পরা তিনজনসহ পাঁচজনের একটি দল ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মাদক মামলার অজুহাত দেখিয়ে বাস থেকে নামিয়ে নেন। একপর্যায়ে তাঁদের হাতকড়া পরিয়ে একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়। পরে তাদের চোখ বেঁধে মারধর করে ১৪৫ ভরি স্বর্ণালংকার, টাকা, মুঠোফোন, এটিএম কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওই দুই ব্যবসায়ীকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার একটি এলাকায় হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়।
খবর পেয়ে মুন্সিগঞ্জ ডিবি পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান শুরু করে। ৯ ডিসেম্বর সকাল থেকে রাজধানীর কাফরুল, মিরপুর ও মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব এলাকা থেকে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওই পাঁচজনকে আটক করা হয়।
একপর্যায়ে তাঁদের কাছ থেকে ৯৪ ভরি ১৪ আনা সোনা, সোনা বিক্রির ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, ২ জোড়া হাতকড়া, ২টি ওয়াকিটকি, পুলিশের ৩ সেট ইউনিফর্ম ও ৭টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।
মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলমের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় গজারিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অবশিষ্ট সোনা ও পলাতক এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।