গোল সোর্খ

কবির মৃত্যুদিনে

শহরের রোদগুলো বেওয়ারিশ পড়ে থাকে,

মিছিল থেকে ফেরা যুবকের সাথে

মেয়েটির আর দেখা হয় না।

লাল গোলাপে ছেয়ে যায় সন্ধ্যারা,

স্বজন ছেড়ে যায়, লুট হয় তরুণ রাত,

কত যুদ্ধ আসে-যায়; কবিরা হারায়!

ল্যাম্পপোস্টের নিঃসঙ্গতা কাটে না।

জেনো, পালালেও ছায়া থাকে সমান্তরালে,

থেকে যায় ক্ষত, পোড়া দাগ।

তোমাকে দেখে হেসে ওঠে কিছু পথ,

মায়ের মতো অপেক্ষায় থাকে না কেউ।

বালুতীর জুড়ে দখলদারদের ছোটাছুটি;

তবুও আকাশে ওড়াউড়ির দিন আনতে

রক্ত-ঘাম মেখে মানুষ পথে নামে,

যুবকের অপেক্ষায় থাকা কিশোরীর দুঃখ মুছে

রাজপথ লাল হয় মরুর বিপ্লবে,

সর্বহারা বৃদ্ধার লাঠিটিও ধনুক হয়ে ওঠে,

মানুষ ফেরে তাঁর চেনা চেহারায়—

রোদ ঝরে, ঝরে গোল সোর্খ,

সময়ের স্রোত ও সন্ধিতে

জিতে যায় সংখ্যালঘুর হাসি—

আর পারস্যের আকাশে উজ্জ্বল তারা হয়ে

জ্বলতে থাকে পারনিয়া আব্বাসি।

অক্টোবর ৭ ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ইরানি কবি পারনিয়া আব্বাসি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গতিশীল নদীর ওপরে যমুনা রেলসেতু

নতুন সেতুর গল্প

শক্তিশালী ও প্রবহমান যমুনা নদীর ওপর বর্তমান সড়কসেতুর পাশে নতুন রেলসেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই রেলসেতুতে আসা–যাওয়ার দুটি লাইন (ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাক) রয়েছে। ২০২৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন সেতুর একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। মূল সেতু পার হতে ট্রেনে লাগবে দুই-তিন মিনিট। সেতুর দুই পাড়ের স্টেশন সয়দাবাদ ও ইব্রাহিমাবাদের মধ্যে দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার। এই অংশ পার হতে ৭ মিনিটের বেশি লাগছে না। আগে যমুনা সড়কসেতুর সঙ্গের রেলসেতু পার হতে ট্রেনের সময় লাগত ২০–২৫ মিনিট। নতুন সেতু দিয়ে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি যাতায়াতের সময়ও কমছে। নতুন সেতু চালুর ফলে পুরোনো যমুনা সড়কসেতুর রেলপথ দিয়ে আর ট্রেন চলাচল করছে না।

গতিশীল নদীতে সেতু নির্মাণ চ্যালেঞ্জিং

গতিশীল নদীতে যেকোনো সেতু নির্মাণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। নদীর প্রবাহের তীব্রতা, পলি বহনের ক্ষমতা এবং ভাঙনপ্রবণতা সেতুর ভিত্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। মো. মুজিবুর রহমান বলেন, যেকোনো নদীর ওপরে সেতু–কাঠামো নির্মাণের কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপরে প্রভাব পড়ে। সেতুর কারণে নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ, গতিপ্রবাহে প্রভাব তৈরি হয়। নদী যেহেতু একটি জীবন্ত সত্তা, এখানে শুধু পানি প্রবাহিত হয় না, নদীর জলজ পরিবেশ ও প্রতিবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেতু নির্মাণের কারণে নদীর গতিপ্রবাহ পরিবর্তন হয়। যমুনা নদীর স্রোত অনেক গতিশীল ও শক্তিশালী। আমাদের দেশের প্রায় সব নদী উৎপত্তিস্থল থেকে অনেক দূরে ও সমুদ্রের কাছাকাছি বলে আচরণের দিক থেকে অনেক শক্তিশালী। নদীর ওপরে সেতু নির্মাণে নদীর তথ্য নিয়ে সমীক্ষা করতে অনেক সময় লেগে যায়। দেখা যায়, বর্ষাকালে নদীর পানিস্তর বৃদ্ধি ও স্রোতের বেগ বেড়ে যাওয়ায় সেতুর কাঠামোর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। নদীর তলদেশের ভৌগোলিক গঠন এবং মাটির ধরন সেতুর পিলার স্থাপনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

নরম মাটি বা বালুকাময় তলদেশে মজবুত ভিত্তি তৈরি করা কঠিন। সেতুর স্থায়িত্বের জন্য হুমকি তৈরি হয়। আবার নদীর গতিপথের পরিবর্তন বা নদীর পাড় ভাঙন সেতুর অ্যাপ্রোচ রোড ও কাঠামোকে ঝুঁকিতে ফেলে। এসব প্রাকৃতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে উন্নত প্রকৌশল বিদ্যা, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা এবং প্রচুর বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। যমুনা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী ও বিশ্বের দীর্ঘতম নদীগুলোর মধ্যেও অন্যতম। এখানে যমুনা রেলসেতু নির্মাণ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং কাজ বটে। 

যমুনা রেলসেতুতে একটি স্প্যান বসানো হচ্ছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ