হঠাৎ করে তালেবানকে কাছে টানছে কেন ভারত?
Published: 23rd, May 2025 GMT
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে তালেবানের প্রথম শাসনামলে ভারত সরকার আফগানিস্তানের এই গোষ্ঠীটির সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল এবং তাদের শাসনকে স্বীকৃতি দেয়নি। ওই সময় তালেবানের পাশে ছিল পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরব। তবে সম্প্রতি ভারত তালেবানকে কাছে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তালেবান সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছে, সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ ভারতের এমন পরিবর্তন কেন?
আল-জাজিরা অনলাইন শুক্রবার জানিয়েছে, ১৯৯৬ সালের আগে ভারত সোভিয়েত-সমর্থিত মোহাম্মদ নাজিবুল্লাহর সরকারকে সমর্থন করেছিল। ১৯৯৬ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দেয় ভারত। তারা তালেবানকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একটি প্রক্সি হিসেবে দেখতে শুরু করে।
২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে তালেবানদের উৎখাতের পর ভারত কাবুলে তাদের দূতাবাস পুনরায় চালু করে এবং আফগানিস্তানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হয়ে ওঠে। আফগানিস্তানের অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জল প্রকল্পে তিন বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করে ভারত।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর নয়াদিল্লি তাদের দূতাবাস খালি করে এবং আবারো এই গোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে এবার ভারত প্রথমে গোপনে তালেবানের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ গড়ে তোলে এবং পরবর্তীতে এই সম্পর্কের কথা প্রকাশ করতে শুরু করে।
তালেবানের ক্ষমতায় ফিরে আসার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ২০২২ সালের জুনে ভারত কাবুলে তার দূতাবাস পুনরায় চালু করে এবং এটি পরিচালনার জন্য ‘প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের’ একটি দল প্রেরণ করে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে তালেবান মুম্বাইয়ের আফগান কনস্যুলেটে একজন ভারপ্রাপ্ত কনসাল নিয়োগ করে। গত জানুয়ারিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি এবং তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি একটি বৈঠকের জন্য দুবাই যান।
পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি হওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় ১৫ মে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তার এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানালেন, “সন্ধ্যেবেলায় ভারপ্রাপ্ত আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে খুব ভালো কথাবার্তা হলো।”
তালেবান ইস্যুতে হঠাৎ ভারতের এমন পরিবর্তন কেন?
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ফেলো তানভি মদান বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই যে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা টেলিফোনে নিজেদের মধ্যে কথা বললেন এর পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা যদি কারো থেকে থাকে সেটি অবশ্যই পাকিস্তানের!
মূলত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতিকেই যে ভারত কূটনৈতিকভাবে কাজে লাগাতে চাইছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
পাকিস্তান বহুদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে আফগান তালেবানই আসলে ‘তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান’ বা টিটিপি-কে মদত দিয়ে আসছে এবং আফগানিস্তানের ভেতরে তালেবান নাকি তাদের জন্য বেশ কিছু মুক্তাঞ্চল পর্যন্ত বানিয়ে দিয়েছে। এই ইস্যুতে গত বছরের ডিসেম্বরে আফগানিস্তানের ভেতরে বেশ কিছু এলাকায় পাকিস্তান আকাশপথে হামলা পর্যন্ত চালিয়েছে, পাকতিকা প্রদেশে এমন একটি হামলায় প্রায় ৫০জন নিহতও হয়েছেন। পাল্টা জবাব দিয়েছে তালেবানও। এরপর থেকেই তালেবান ও পাকিস্তানের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। আর ইসলামাবাদ ও কাবুলের মধ্যে এই ক্রমবর্ধমান দূরত্বকেই ভারত কাজে লাগাতে চাইছে। এই মুহূর্তে ভারত চাচ্ছে আফগানিস্তানকে পাকিস্তানের চেয়ে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট রমন ত র আফগ ন স ত ন র র পরর ষ ট র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সালমান শাহকে কেউ কখনো ভালোবেসেছিল কি না আমার সন্দেহ আছে: প্রসূন আজাদ
ঢাকায় সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান এই অভিনেতা। তার রহস্যজনক মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেন অভিনেতার স্ত্রী সামিরা হক। সালমান শাহর মৃত্যুর প্রায় তিন দশক পর আদালতের নির্দেশে তার অপমৃত্যুর মামলা, হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে পুলিশ। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সামিরা হককে।
সালমান শাহর ক্যারিয়ারের বৃহস্পতি যখন তুঙ্গে তখন অনন্তের পথে তার যাত্রা। তার মৃত্যু কেউই মেনে নিতে পারেননি, এমনকি এখনো না। তার মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। তদন্ত ও বিচার কাজ সঠিকভাবে সম্পূর্ণ হলেই এই রহস্যের জাল ভেদ করে সত্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা সালমান শাহর ভক্ত-অনুরাগীদের।
আরো পড়ুন:
আমার বাচ্চার দাদা-দাদিও কী এক্স হয়ে গিয়েছেন, প্রশ্ন পরীমণির
সালমানকে ভাই ছাড়া অন্য চোখে দেখিনি: শাবনূর
এদিকে, ছোট ও বড় পর্দার আলোচিত অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ তার ফেসবুকে সালমান শাহকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সন্দেহ প্রকাশ করে এই অভিনেত্রী বলেন—“সত্যিকার অর্থে সালমান শাহকে কেউ কখনো ভালোবেসেছিল কি না আমার সন্দেহ আছে।”
প্রসূন আজাদ বলেন, “আমার ধারনা সালমান প্রচণ্ড ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু সত্যিকার অর্থে তাকে কেউ কখনো ভালোবেসেছিল কি না আমার সন্দেহ আছে।”
কারণ ব্যাখ্যা করে প্রসূন আজাদ বলেন, “স্টারদের স্টারডম সবাই ভালোবাসে। তার একাকিত্ব তাতে কমে না। তার মা কিংবা বউ কেউ আদৌ নিঃস্বার্থভাবে তার পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিল কি না সন্দেহ। সফলতার চরমতম স্বাদ পাওয়ার পর তারা সব ছেড়ে চলে যায়, যারা অভিমানী।”
১৯৮৫ সালে ‘আকাশ ছোঁয়া’ নাটক দিয়ে অভিনয়ের যাত্রা শুরু করেন সালমান শাহ। এটি বিটিভিতে প্রচার হয়। ১৯৯৩ সালে পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে সালমান শাহর। অভিষেক চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে পান মৌসুমীকে।
চার বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেন সালমান শাহ। এর মধ্যে ১৪টি সিনেমায় শাবনূরের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন তিনি। ‘তুমি আমার’ সিনেমায় প্রথম জুটি বাঁধেন তারা। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমা পরিচালনা করেন জহিরুল হক।
সালমান শাহ অভিনীত সিনেমাগুলো হলো—‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ (১৯৯৩), ‘তুমি আমার’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘সুজন সখী’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্নেহ’, ‘প্রেম যুদ্ধ’ (১৯৯৪), ‘কন্যাদান’, ‘দেনমোহর’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘আঞ্জুমান’, ‘মহামিলন’, ‘আশা ভালোবাসা’ (১৯৯৫), ‘বিচার হবে’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘প্রিয়জন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘জীবন সংসার’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ (১৯৯৬), ‘প্রেমপিয়াসী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘শুধু তুমি’, ‘আনন্দ অশ্রু’ ও ‘বুকের ভেতর আগুন’ (১৯৯৭)।
ঢাকা/শান্ত