হুমকি দিয়ে কোনো বাণিজ্য চুক্তি নয়, যুক্তরাষ্ট্রকে ইইউ
Published: 24th, May 2025 GMT
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাণিজ্য প্রধান বলেছেন, ২৭ সদস্যের এই সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ, তবে তার ভিত্তি হবে ‘সম্মান’, ‘হুমকি’ নয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ইইউ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত সব পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের হুমকি দেয়ার পর সংস্থাটির দিক থেকে এমন বক্তব্য এলো।
শনিবার (২৪ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির পথ বন্ধ করলো ট্রাম্প প্রশাসন
ওয়াশিংটনে বন্দুক হামলায় নিহত ২ দূতাবাস কর্মীর নাম জানাল ইসরায়েল
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার ও বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের সঙ্গে একটি ফোনালাপের পর ইইউ বাণিজ্য প্রধান বলেন, “ইইউ উভয়ের জন্য কার্যকর একটি চুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইইউ-মার্কিন বাণিজ্য হুমকি নয়, পারস্পরিক শ্রদ্ধার মাধ্যমে পরিচালিত হওয়া উচিত। আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষা করতে প্রস্তুত।”
এর আগে শুক্রবার ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই পক্ষের মধ্যে চলমান আলোচনার ধীরগতিতে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, তার পরিকল্পনা হলো ইইউ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা সকল পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক পহেলা জুন থেকেই কার্যকর করা।
সামাজিক মাধ্যম সোশ্যাল ট্রুথ এ ট্রাম্প লিখেছেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা কোনো দিক অগ্রসর হচ্ছে না’। তিনি আরো বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি বা উৎপাদিত পণ্যের ওপর কোনো শুল্ক আরোপ করা হবে না।
গত মাসে ট্রাম্প ইইউ পণ্যের উপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছিলেন, কিন্তু আলোচনার জন্য সময় দেওয়ার জন্য ৮ জুলাই পর্যন্ত তা অর্ধেক করে ১০ শতাংশ বহাল রাখেন।
শুক্রবার (২৪ মে) ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি কোনো চুক্তির সন্ধান করছি না- আমরা চুক্তিটি তৈরি করেছি।” এরপর তিনি বলেন, ইউরোপের কোনো কোম্পানির যুক্তরাষ্ট্রে বড় বিনিয়োগ হলে তিনি এ নিয়ে বিলম্ব করতে রাজি আছেন।
ইইউ ওয়াশিংটনের অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। মার্কিন সরকারের তথ্যানুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত বছর ৬০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে এবং ৩৭০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য কিনেছে।
ট্রাম্পের হুমকির প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় দেশগুলো সতর্ক করে বলেছে, উচ্চতর শুল্ক উভয় পক্ষের জন্য ক্ষতিকর হবে।
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন বলেছেন, “আমাদের এই পথে যাওয়া উচিত হবে না। আলোচনাই সর্বোত্তম ও একমাত্র টেকসই পথ।”
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্ট সেন্ট-মার্টিন বলেছেন, “আমরা একই নীতি বজায় রাখছি: উত্তেজনা কমানো, কিন্তু আমরা জবাব দিতেও প্রস্তুত আছি।”
জার্মানির অর্থনীতিমন্ত্রী ক্যাথেরিনা রেইচ বলেছেন, “ইউরোপীয় কমিশন যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের অবশ্যই সবকিছু করতে হবে।”
ডাচ প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ সাংবাদিকদের বলেছেন, বাণিজ্য আলোচনায় ইইউ যে কৌশল নিয়েছে তাকে তিনি সমর্থন করছেন। ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগেও আমরা শুল্ক কমতে ও বাড়তে দেখেছি”।
ট্রাম্পের অভিযোগ হলো ইউরোপ অসম বাণিজ্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চায় কারণ তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে।
তিনি বলেন, এই বাণিজ্য ঘাটতি আমেরিকান কোম্পানিগুলোর জন্য অন্যায্য। বিশেষ করে তিনি গাড়ি ও কৃষিপণ্যের বিষয়ে থাকা নীতিগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্পের হুমকির পর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে শেয়ার বাজারের দরপতন হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র বল ছ ন আম দ র র জন য ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনার ফুটপাত পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে
খুলনা নগরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত এখন পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে। ডাকবাংলা থেকে বড়বাজার পর্যন্ত নগরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্রজুড়ে ফুটপাতের ওপর চলছে অস্থায়ী দোকানপাট, পণ্যের পসরা আর ক্রেতাদের ভিড়। ফলে পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই, স্থায়ী দোকানের ব্যবসায়ীরা হারাচ্ছেন ক্রেতা, হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত।
ডাকবাংলা এলাকা খুলনা নগরের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। এখানে ডাকবাংলা সুপারমার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, খুলনা বিপণিবিতান, দরবেশ চেম্বার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপণিবিতান, কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেটসহ বড় শপিং কমপ্লেক্স আছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম বাজার এটি। কিন্তু এখন এর পুরো এলাকার ফুটপাত দখল হয়ে গেছে ভাসমান ব্যবসায়ীদের হাতে।
হকারদের ভিড়ে দোকান দেখা যায় নাসম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ডাকবাংলা মোড় থেকে ক্লে রোড পর্যন্ত ফুটপাতে মালামাল সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। স্থায়ী দোকানদাররাও নিজেদের দোকানের সামনের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছেন। ভ্যানে করে জামাকাপড়, ফল, গৃহস্থালির পণ্য বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতের পর এখন রাস্তার অর্ধেকজুড়ে। পুরোনো যশোর রোড, সদর থানা মোড়, কেডি ঘোষ রোড থেকে হেলাতলা পর্যন্ত একই চিত্র। খালিশপুর চিত্রালি বাজার ও দৌলতপুর বাজারেও ফুটপাতের ওপর খাট বসিয়ে চালা তুলে ব্যবসা চলছে। ফলে পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন।
খালিশপুর চিত্রালি বাজারের দোকান ব্যবস্থাপক মো. আসাদ বলেন, ‘হকারদের কারণে বাইরে থেকে আমাদের দোকান দেখা যায় না। তাদের ব্যবসা জমজমাট, কিন্তু আমাদের বিক্রি কমে গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোও ঢেকে গেছে অস্থায়ী দোকানে।’
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, নগরের আয়তন ৪৬ বর্গকিলোমিটার, পাকা সড়ক ৬৪১ কিলোমিটার। ফুটপাতের সঠিক হিসাব না থাকলেও অন্তত ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত হকারদের দখলে। চলতি বছরে ১২ দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের দখল হয়ে যায়।
কেসিসির সম্পত্তিবিষয়ক কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী নেতা ও প্রশাসন সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ না নিলে এটি বন্ধ হবে না। অনেকে নিজের দোকানের সামনের ফুটপাতও ভাড়া দেন হকারদের। সহযোগিতা না পেলে একা আমাদের কিছু করার নেই।’
পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা