সরকারি হাসপাতাল ও বিশেষায়িত ইনস্টিটিউটগুলোতে ফিজিওথেরাপি বিভাগ চালু এবং ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের নবম গ্রেডে পদায়নে দাবি করেছে বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ফিজিওথেরাপি: স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সেমিনারের ফিজিওথেরাপিস্টরা এ দাবি করেন।
 
সেমিনারে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডা.

মো. শাহাদৎ হোসেন (পিটি) বলেন, সম্প্রতি স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তনের প্রত্যাশায় স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন তাদের যে প্রতিবেদন পেশ করেছে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন দেশের স্বাস্থ্যখাতের বিশিষ্টজনরা। প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সুপারিশ আশাব্যঞ্জক বলে উল্লেখ করেন। তবে স্বাস্থ্য সংস্কার প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যখাতের অন্যতম অপরিহার্য অংশ বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি, এটা দুঃখজনক। স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন কর্তৃক বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইনের অন্তর্ভুক্তিকরণ ও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের নবম গ্রেডে নিয়োগ ও পদায়ন করতে হবে। একইসঙ্গে সরকারি হাসপাতাল ও বিশেষায়িত ইনস্টিটিউটগুলোতে ফিজিওথেরাপি বিভাগ চালু করতে হব।

আয়োজনে জানানো হয়, সংস্কার প্রতিবেদনে অন্যান্য স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের সংজ্ঞায়িত করা হলেও ফিজিওথেরাপিস্টদের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বা এলাইড হেলথ প্রফেশনালদের অন্তর্ভুক্ত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সেমিনারে জানানো হয়, এই আইন কেবল ফিজিওথেরাপি পেশার মানকেই উন্নত করবে না, বরং এর মাধ্যমে এই পেশায় নিয়োজিত পেশাজীবীদের অধিকারও সুরক্ষিত হবে। 

এ সময় বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলোতে ১১ বা ১২তম গ্রেডে নিয়োগের প্রস্তাব বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল-বিআরসি কর্তৃক নির্ধারিত মানদণ্ডের সঙ্গে বৈষম্যের সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ করে। এটি ফিজিওথেরাপি পেশার মর্যাদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেও জানানো হয়।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সিগারেটের করকাঠামো সংস্কারের দাবি তরুণ চিকিৎসকদের

আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের বিদ্যমান চারটি মূল্যস্তর কমিয়ে তিনটি আনা এবং মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন দেশের তরুণ চিকিৎসকরা।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব দাবি জানান তারা। মানববন্ধনে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত শতাধিক তরুণ চিকিৎসক অংশ নেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশে তামাকপণ্য সহজলভ্য হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ এর ত্রুটিপূর্ণ ও জটিল কর কাঠামো। ফলে তরুণ ও নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সিগারেটের সহজলভ্যতা রোধে কার্যকর করারোপ ও মূল্যবৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি।

আরো পড়ুন:

কুড়িগ্রামে খাজনা আদায়ে ভূমি অফিসে হালখাতা 

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণে রাজস্ব আয় ৪ কোটি টাকা

তারা বলেন, সিগারেটের চার স্তরের মূল্যব্যবস্থা—নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম, যা তামাক কর নীতিকে দুর্বল করছে। বিশেষত, নিম্ন ও মধ্যম স্তরের দামের ব্যবধান কম হওয়ায় ভোক্তারা সহজেই এক স্তর থেকে অন্য স্তরে চলে যেতে পারছেন। এই পরিস্থিতিতে নিম্ন ও মধ্যম স্তর একীভূত করে সেগুলোর দাম বাড়ানো হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও তরুণ প্রজন্ম ধূমপান থেকে বিরত থাকবে, পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।

তরুণ চিকিৎসকরা আসন্ন বাজেটের জন্য কর ও মূল্য কাঠামো প্রস্তাব করেন। তাদের প্রস্তাবিত মূল্য কাঠামোতে রয়েছে, নিম্ন ও মধ্যম স্তর একত্র করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ; উচ্চ স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা; প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকার খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণ। একই সঙ্গে সিগারেটের খুচরা মূল্যের ওপর ৬৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ অপরিবর্তিত রাখা।

তামাক নিয়ন্ত্রণে বিড়ি ও অন্যান্য তামাকপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিরও সুপারিশ করা হয়। ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকার মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের দাবি জানানো হয়। জর্দা ও গুলের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১০ গ্রামে খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা ও ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের দাবি তোলা হয়।

সন্ধানী ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল অ্যান্ড আপডেট ডেন্টাল কলেজ ইউনিটের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের হার (৩৫.৩ শতাংশ) সবচেয়ে বেশি। কারণ অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে তামাকপণ্যের দাম অনেক কম। ফলে সহজেই তরুণরা ক্ষতিকর এই নেশায় আসক্ত হচ্ছে। তাই তরুণদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিতে তামাকপণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধি করা জরুরি।”

তিনি বলেন, “২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সরকার আমাদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করলে ধূমপান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে। একইসঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৯ লাখ তরুণসহ মোট ১৭ লাখের বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।”

ঢাকা/হাসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিগারেটের করকাঠামো সংস্কারের দাবি তরুণ চিকিৎসকদের
  • ‘১৬ বছর আ. লীগ পিটাইছি, সাহস থাকলে বাইরে বের হ’